ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/10728/ নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,
হাদীস শরীফে রমজান মাসে কুরআন তিলাওয়াত এর
অনেক গুরুত্ব রয়েছে
,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
জিবরীল আ.-এর সাথে রমযানের প্রত্যেক রাতে কুরআন মজীদ দাওর করতেন।
,
হাদীস শরীফে এসেছে- ‘হযরত জিবরীল আ. রমযানের
শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে
সাক্ষাত করতেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে কুরআন মজীদ
শোনাতেন।’-সহীহ বুখারী, হাদীস
১৯০২
,
এ মাসে যেকোনো নেক আমলে অনেক ছওয়াব রয়েছেঃ
,
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইরশাদ করেন- ‘রমযানের ওমরা হজ্জ সমতুল্য।’ -জামে তিরমিযী, হাদীস ৯৩৯; সুনানে
আবু দাউদ, হাদীস
১৯৮৬
অন্য এক বর্ণনায় (যা সনদের দিক থেকে দুর্বল)
বিষয়টি এভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, ‘রমযান মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল আদায় করল সে
যেন অন্য মাসে একটি ফযর আদায় করল। আর যে এ মাসে একটি ফরয আদায় করল সে যেন অন্য
মাসে সত্তরটি ফরয আদায় করল। -শুআবুল ঈমান ৩/৩০৫-৩০৬
,
অর্থাৎ এ মাসে নফল আদায় করলে অন্য মাসের
ফরযের ন্যায় ছওয়াব হয়। আর এ মাসের এক ফরযে অন্য মাসের ৭০ ফরযের সমান ছওয়াব
পাওয়া যায়।
.
★কুরআন
শরীফের বিশেষত্ব হচ্ছে, একটি
হরফ তেলাওয়াতে দশটি নেকি হাসিল হয়। রমজানের বিশেষত্ব হচ্ছে, একটি নেকি দশ থেকে সাতশত পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
ইসলামী স্কলার গন বলেন যে আপনি যদি মাহে রমজানে
কুরআন শরীফের একটি হরফ তেলাওয়াত করলেন। দশটি নেকি পেলেন। অতঃপর রমজানের কারণে তা
দশ থেকে সাতশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রমজান মাসে অধিক পরিমাণ কুরআন তেলাওয়াত করা
এবং কুরআন খতম করতে সচেষ্ট থাকা মুস্তাহাব। তবে সেটা ফরজ নয়। অর্থাৎ খতম করতে না
পারলে গুনাহ হবে না। তবে অনেক সওয়াব থেকে সে ব্যক্তি বঞ্ছিত হবেন।
,
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে
ইমাম বুখারি (৪৬১৪) বর্ণিত হাদিস: “জিব্রাইল (আঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাই্হি ওয়া
সাল্লামের নিকট প্রতিবছর একবার কুরআন পাঠ পেশ করতেন। আর যে বছর তিনি মারা যান সে
বছর দুইবার পেশ করেন।”
,
ইবনে কাছির (রহঃ) ‘আল-জামে ফি গারিবিল হাদিস’
গ্রন্থে (৪/৬৪) বলেন:
অর্থাৎ তিনি তাঁকে যতটুকু কুরআন নাযিল হয়েছে
ততটুকু পাঠ করে শুনাতেন।
,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
অনুসরণে সলফে সালেহিনের আদর্শ ছিল রমজান মাসে কুরআন খতম করা। ইব্রাহিম নাখায়ি
বলেন: আসওয়াদ রমজানের প্রতি দুই রাত্রিতে একবার কুরআন খতম করতেন।[আস- সিয়ার, (৪/৫১)]
,
কাতাদা (রহঃ) সাতদিনে একবার কুরআন খতম করতেন।
রমজান মাস এলে প্রতি তিনদিনে একবার কুরআন খতম করতেন। শেষ দশ রাত্রি শুরু হলে প্রতি
রাতে একবার কুরআন খতম করতেন। [আস সিয়ার, (৫/২৭৬)]
মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি রমজানের প্রতি রাত্রিতে কুরআন খতম
করতেন।[নববির ‘আত তিবয়ান (পৃষ্ঠা-৭৪)] তিনি বলেন: উক্তিটির সনদ সহিহ।
মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, আলী আল-আযদি রমজানের প্রতি রাত্রিতে একবার
কুরআন খতম করতেন।[তাহযিবুল কামাল (২/৯৮৩)]
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/10728/
https://ifatwa.info/17235/
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কুরআনুল কারীম সিরিয়ালি পড়ে পড়ে খতম করা উত্তম। তবে সিরিয়ালি পড়াটা
জরুরী বা আবশ্যক কোনো বিষয় নয়। তাই প্রশ্নে বর্ণিত
ভাবে পাঠ করলেও কুরআন খতম হবে এবং কুরআন খতমের সওয়াবও পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। সুতরাং এভাবে পড়াতে কোনো সমস্যা নেই।