আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
397 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (3 points)

আসসালামুআলাইকুম। আমি একজন কে বলেছিলাম “আল্লাহর কোন ফরজ বিধানকে অপছন্দ করলে সেই ব্যক্তি কাফের হবে”। তখন সেই বেক্তি আপনাদের ওয়েবসাইডে দুইটা প্রশ্ন করে,প্রশ্ন ১: কোন বেক্তি জাকাত ফরজ হওয়ার কারণে নিয়মিত জাকাত দেয় কিন্তু সেই বেক্তি জাকাতের এই বিধানকে  "অপছন্দ" করে। সে কি কাফের?

প্রশ্ন ২: কোন বেক্তি জাকাত ফরজ হওয়ার কারণে নিয়মিত জাকাত দেয় কিন্তু সেই বেক্তি এই জাকাত দেওযাটা মাঝে মাঝে একটু অখুশি হয়।  কিন্তু আদায় করে!  তার বিধান কি?” 

আপনারা এই উত্তরে বলেছেন, “আপনার বর্ণিত ঐ ব্যক্তি ফাসিক বা জালিম হিসেবে বিবেচিত হবে।” (https://ifatwa.info/41866/ )

এখন সেই বেক্তি আমকে এই দুইটি প্রশ্নের উত্তর দেখালে আমি খুব কনফিওশনে পড়ি। এর কারন হচ্ছে, আমি  বিভিন্ন উস্তাদের কাছে “আকিদা ও ঈমানের”  কিছু ক্লাস করেছিলাম আর এই বিষয়ে বিভিন্ন বই পড়ে ছিলাম। আমি সেখান থেকে একটা মৌলিক বিষয়  শিখেছি আর তা হল, ”আল্লাহর কোন ফরজ বিধানকে অপছন্দ করলে সেই ব্যক্তি কাফের হয়ে যাবে” । মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক সাহেবের বই, “ঈমান সবার আগে ” তে স্পষ্ট করে বলা আছে, “আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাব এবং তার প্রদত্ত শরীয়ত অপছন্দ করা কুফরী। যে এই কুফরীতে লিপ্ত ব্যক্তিদের কিছুমাত্র সমর্থন করবে  সে মুরতাদ। (https://www.alkawsar.com/bn/article/843/)”
 
এছাড়া ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর এর প্রবন্ধ “কুফর ও তাকফীর” বলা হয়েছে,”  কোনো প্রকার কুফ্রে সন্তুষ্ট থাকা কুফ্র। অনুরূপভাবে ইসলামের প্রতি অসন্তুষ্ট থাকাও কুফ্র। যেমন আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অপছন্দ করা, ইসলামের বিধান বলে সুনিশ্চিতভাবে প্রমাণিত কোনো কিছু প্রতি বিরক্তি বা ঘৃণা পোষণ করা, ইসলামের কোনো নির্দেশ বা শিক্ষা অচল, সেকেলে বা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করা কুফর। অনুরূপভাবে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করা বৈধ মনে করা কুফ্র। যদি কেউ আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করা পাপ ও অন্যায় জেনেও প্রবৃত্তি বা শয়তানের প্ররোচনায় বা জাগতিক কোনো স্বার্থে আল্লাহর বিধান অমান্য করে, আল্লাহর বিধানের বিপরীতে চলে, চালায় বা বিধান দেয় সে পাপী বলে গণ্য। কিন্তু কেউ যদি মনে করে ‘মারিফাত’ হাসিল হয়ে যাওয়ার কারণে কোনো ব্যক্তির জন্য আল্লাহর বিধান বা শরীয়তের ব্যতিক্রম করা বৈধ, অথবা মনে করে যে, যুগের প্রেক্ষাপটে ইসলামের অমুক বিধানটি মানা জরুরী নয় বা কুরআনের অমুক নির্দেশনাটি আর কার্যকর নয়, অথবা কুরআনের নির্দেশনার বিপরীত চলা, চলানো বা বিধান দেওয়াতে কোনো অসুবিধা নেই তবে সে ব্যক্তি কাফির বলে গণ্য। তিনি যদি ইসলামের কিছু বিধান পালন করেন তবুও তিনি কাফির বলে গণ্য হবেন। কারণ আল্লাহর কোনো একটি নির্দেশ অপছন্দ করা কুফর। মহান আল্লাহ বলেন:

وَالَّذِينَ كَفَرُوا فَتَعْسًا لَهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ

“যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে দুর্ভোগ এবং তিনি তাদের কর্ম ব্যর্থ করে দিবেন। তা এজন্য যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তারা তা অপছন্দ করে। সুতরাং আল্লাহ তাদের কর্ম নিষ্ফল করে দিবেন। সূরা (৪৭) মুহাম্মাদ: ৮-৯ আয়াত। (https://assunnahtrust.org/kufor-o-takfir/ )”
 

ইমাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব (রহঃ)-এর “নাওয়াকিদুল ইসলাম।” এর ৫ নং পয়েন্ট এর ব্যাখ্যায় একজন আলেম  বলেছে,”যদি কোন মুসলমান আল্লাহর নবী (ছাঃ)-এর আনিত বিধানের কোন অংশকে অপছন্দ করে তবে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে, যদিও সে ঐ বিষয়ে আমল করে। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا فَتَعْسًا لَهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ، ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوْا مَا أَنْزَلَ اللهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ ‘আর যারা কাফির তাদের জন্য রয়েছে দুর্গতি এবং তিনি তাদের কর্ম বিনষ্ট করে দিবেন। এটা এজন্য যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা পছন্দ করে না। অতএব তাদের কর্মসমূহ আল্লাহ ব্যর্থ করে দিবেন’ (মুহাম্মাদ ৮-৯)। এ আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, আমল সমূহ বাতিল হওয়ার অন্যতম কারণ আল্লাহর নাযিলকৃত বিষয় অপছন্দ করা। উক্ত বিষয় আমল করলেও অপছন্দ করার কারণে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে।


এখন আমার প্রশ্নগুলো হচ্ছে,

প্রশ্ন ১ঃ“আল্লাহর কোন ফরজ বিধানকে অপছন্দ করলে সেই ব্যক্তি কাফের হয়ে যাবে যদিও সেই বেক্তি সেই বিষয়ের উপর আমল করে” আমার এই ধারনা কি ভুল?

প্রশ্ন ২ঃ সূরা (৪৭) মুহাম্মাদ: ৮-৯ এই আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যা কি?

প্রশ্ন ৩ঃ মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক সাহেবের বই, “ঈমান সবার আগে ” এই বই পড়া কি ঠিক হবে?

প্রশ্ন ৪ঃ কোন নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে এক একজন আলেম এক এক কথা বলে সেই ক্ষেত্রে আমাদের করনীয় কাজ কি?

প্রশ্ন ৫ঃ একাধিক মতবিরোধ পূর্ণ মাসালায় আমি আমার উস্তাদের মতকে প্রাধান্য দেই, এটা কি আমার নফসের গোলামির শামিল?

1 Answer

0 votes
by (583,050 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/623 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
এ সম্পর্কে দু-একটি আয়াত লক্ষণীয় যেমনঃ-
ﻭَﻣَﻦ ﻟَّﻢْ ﻳَﺤْﻜُﻢ ﺑِﻤَﺎ ﺃَﻧﺰَﻝَ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻓَﺄُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮُﻭﻥ
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের।(সূরা মায়েদাঃআয়াতঃ৪৪)

ﻭَﻣَﻦ ﻟَّﻢْ ﻳَﺤْﻜُﻢ ﺑِﻤَﺎ ﺃﻧﺰَﻝَ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻓَﺄُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤُﻮﻥَ
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না তারাই জালেম।(সূরা মায়েদাঃআয়াতঃ৪৫)

ﻭَﻣَﻦ ﻟَّﻢْ ﻳَﺤْﻜُﻢ ﺑِﻤَﺎ ﺃَﻧﺰَﻝَ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻓَﺄُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻔَﺎﺳِﻘُﻮﻥَ
যারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী।(সূরা মায়েদাঃআয়াতঃ৪

দেখুন,
তিনবার আল্লাহ তিনটি শব্দ ব্যবহার করেছেন, অর্থাৎ যে ব্যক্তি কুরআনের কোনো বিধানকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলবে যে, এটা এখন প্রযোজ্য নয়, সেই কাফির।কিন্তু অপচন্দ করলে সে হয়তো ফাসিক বা জালিম হিসেবে বিবেচিত হবে।

দেখুন! উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে,
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا فَتَعْسًا لَهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ، ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوْا مَا أَنْزَلَ اللهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ ‘
আর যারা কাফির তাদের জন্য রয়েছে দুর্গতি এবং তিনি তাদের কর্ম বিনষ্ট করে দিবেন। এটা এজন্য যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা পছন্দ করে না। অতএব তাদের কর্মসমূহ আল্লাহ ব্যর্থ করে দিবেন’ (মুহাম্মাদ ৮-৯)।

উক্ত আয়াতে অপছন্দ অর্থ অস্বীকার করা।এর প্রমাণ হল, আয়াতের প্রথমাংশে কাফিরদেরকে উদ্দেশ্য করে উক্ত কথা বলা হচ্ছে। আর কাফিরদের অপছন্দ অর্থ অস্বীকারই।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
কোন ব্যক্তি যদি যাকাত ফরজ হওয়ার কারণে নিয়মিত যাকাত দেয় কিন্তু সেই ব্যক্তি যাকাতের এই বিধানকে  "অপছন্দ" করে। সে যদিও কাফির হচ্ছে না, তবে  সে অবশ্যই ফাসিক বা জালিম হিসেবে গণ্য হবে।

(২)
কোন বেক্তি জাকাত ফরজ হওয়ার কারণে নিয়মিত জাকাত দেয় কিন্তু সেই বেক্তি এই জাকাত দেওযাটা মাঝে মাঝে একটু অখুশি হয়।  কিন্তু আদায় করে! 

এমন ব্যক্তির ব্যাপারেও বলা যায় যে, উক্ত ব্যক্তি ফাসিক বা জালিম।তবে কাফির না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
এখানে তো একটি প্রশ্নের উত্তর দেয়া হল না। শুধু আগের প্রশ্নের উত্তর দেয়া হল যা আগেই দেওয়া হয়েছে।
by (583,050 points)
আমরা তো উত্তর দিলাম। আপনি কি নিয়ে জানতে চান?
by (583,050 points)
আপনি যা জানতে চান? আমাদেরকে সঠিক ভাবে বলুন। 
by (15 points)
এখন আমার প্রশ্নগুলো হচ্ছে,

প্রশ্ন ১ঃ“আল্লাহর কোন ফরজ বিধানকে অপছন্দ করলে সেই ব্যক্তি কাফের হয়ে যাবে যদিও সেই বেক্তি সেই বিষয়ের উপর আমল করে” আমার এই ধারনা কি ভুল?

প্রশ্ন ২ঃ সূরা (৪৭) মুহাম্মাদ: ৮-৯ এই আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যা কি?

প্রশ্ন ৩ঃ মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক সাহেবের বই, “ঈমান সবার আগে ” এই বই পড়া কি ঠিক হবে?

প্রশ্ন ৪ঃ কোন নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে এক একজন আলেম এক এক কথা বলে সেই ক্ষেত্রে আমাদের করনীয় কাজ কি?

প্রশ্ন ৫ঃ একাধিক মতবিরোধ পূর্ণ মাসালায় আমি আমার উস্তাদের মতকে প্রাধান্য দেই, এটা কি আমার নফসের গোলামির শামিল?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...