আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
297 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (47 points)
retagged by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,
মুহতারাম,

১) অনলাইনে, পত্রিকায় কিংবা কোন বইয়ে কৌতুক পড়া কি জায়েজ?

২) ফটোকপি অথবা পিডিএফ ব‌ই বেচাকেনা তো নাজায়েজ; কিন্তু এছাড়াও অন্য কারো ব্যবহৃত পুরাতন বই, নতুন বইয়ের চাইতে বেশ কম দামে কিনতে পাওয়া যায়। পুরাতন বই কয়েক রকমের হতে পারে, যেমন- সর্বশেষ সংস্করণ ও ব্যবহৃত, পুরোনো সংস্করন ও ব্যবহৃত এবং পুরোনো সংস্করণ ও অব্যবহৃত। এরকম পুরাতন বই বেচাকেনা করা ও ব্যবহার করা জায়েজ কিনা?

1 Answer

+1 vote
by (719,720 points)

ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
(১)
মিথ্যা বলা মহাপাপ।রাসূলুল্লাহ সাঃ জীবনে কখনো মিথ্যা বলেননি।এমনকি মিথ্যা পরিহারকে সর্বোত্তম আ'মল বলে হাদীসে ঘোষিত হয়েছে।রাসূলুল্লাহ নিজে কৌতুক বা মজাক করেছেন,কিন্তু মিথ্যা পরিহার করে। রাসূলুল্লাহ সাঃ একবার এক বৃদ্ধাকে বলেন, কোনো বুড়ো মানুষ তো জান্নাতে যাবে না। বেচারী কান্না শুরু করে দিলে তিনি বলেন, বুড়িকে তো আল্লাহ জোয়ান বানিয়ে জান্নাতে দিবেন। 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেন:
«وَيْلٌ لِلَّذِي يُحَدِّثُ بِالحَدِيثِ لِيُضْحِكَ بِهِ القَوْمَ فَيَكْذِبُ، وَيْلٌ لَهُ وَيْلٌ لَهُ»
‘‘যে ব্যক্তি মানুষ হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে তার জন্য ধ্বংস! তার জন্য ধ্বংস! তার জন্য ধ্বংস!’’  (তিরমিযী-২৩১৫; আবূ দাউদ-৪৯৯০)

অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أَنَا زَعِيمٌ بِبَيْتٍ فِي رَبَضِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْمِرَاءَ وَإِنْ كَانَ مُحِقًّا، وَبِبَيْتٍ فِي وَسَطِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْكَذِبَ وَإِنْ كَانَ مَازِحًا وَبِبَيْتٍ فِي أَعْلَى الْجَنَّةِ لِمَنْ حَسَّنَ خُلُقَهُ»
‘‘যে ব্যক্তি সর্বদা মিথ্যা বর্জন করে, মস্কারা বা কৌতুক করতেও মিথ্যা বলে না, তার জন্য জান্নাতের মধ্যদেশে একটি বাড়ির জন্য আমি দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।’’ (আবূ দাউদ হাদীস নং ৪৮০০)

কৌতুক করে কাউকে ভয় পাইয়ে দেওয়াও জায়েয হবে না।এক সফরে সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ -এর সাথে ছিলেন। একজন সাহাবী ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তখন অন্য একজন গিয়ে তার রশিটি নিয়ে আসেন। এতে ঘুমন্ত ব্যক্তি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠে পড়েন। তার ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থা দেখে সাহাবীগণ হেসে উঠেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা হাসছ কেন? তারা ঘটনাটি বললে তিনি বলেন:
«لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يُرَوِّعَ مُسْلِمًا»
‘‘কোনো মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে, সে অন্য মুসলিমকে ভয় পাইয়ে দিবে।’’(আবূ দাউদ-৫০০৪)

কোনো খবর শোনার পর তাহক্বীক না করে প্রচার করাও মিথ্যার একটি প্রকার।রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
«كَفَى بِالْمَرْءِ كَذِبًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِعَ»
‘‘একজন মানুষের মিথ্যাবাদি হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনবে তাই বলবে।’’ ( সহীহ মুসলিম১/১০-১১).................................বিস্তারিত জানুন- 1719

এক ইবাদত করার পর যখন শরীর মন ক্লান্ত হয়ে যায়, তখন আবার ইবাদতে মনোযোগ সৃষ্টি করতে
শরয়ী বিনোদনের অনুমোদন শরীয়তে রয়েছে।
হযরত আলী রাযি বলেনঃ
روِّحوا القلوبَ ساعةً فساعةً 
'তোমরা অন্তরকে মাঝেমধ্যে আনন্দ প্রফুল্লতা দান করো'

অন্য বর্ণনায় এসেছে,আলী রাযি বলেনঃ
ﻳﺮﻭﻯ ﻋﻦ ﻋﻠﻲ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ( ﺃﺟﻤﻮﺍ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻘﻠﻮﺏ، ﻭﺍﻟﺘﻤﺴﻮﺍ ﻟﻬﺎ ﻃﺮﺍﺋﻒ ﺍﻟﺤﻜــﻤﺔ، ﻓــﺈﻧﻬﺎ ﺗﻤــﻞ ﻛﻤــﺎ ﺗﻤــﻞ ﺍﻷﺑــﺪﺍﻥ )
তোমরা অন্তরকে নিজ কাজে জমিয়ে রাখো,এবং এর জন্য হেকমতের পথ খোঁজ করো।কেননা অন্তর তেমনি ক্লান্ত হয়ে ,যেভাবে শরীর ক্লান্ত হয়।...........................বিস্তারিত জানুন- 673

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মিথ্যা ও অশ্লীলতা পরিহার করে যদি কোনো কৌতুক বই থাকে,তাহলে ইবাদতের জন্য মনকে সতেজ করার স্বার্থে উক্ত বই পড়ার অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।

(২)
পুরাতন বইকে যদি তার মালিক বিক্রি করে দিতে চায়,তাহলে সেই বইকে ক্ররিদ করতে বাঁধা কিসের।অবশ্যই জায়েয হবে।তবে যদি বইয়ের মালিক ব্যতীত অন্য কেউ বিক্রি করতে চায়,তাহলে সেটা জায়েয হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (47 points)
'বইয়ের মালিক ব্যতীত অন্য কেউ বিক্রি করতে চাইলে সেটা জায়েয হবে না' -এ বিষয়টি বুঝে আসেনি। সাধারণত কোন লোক বইয়ের দোকান থেকে বই কিনে কিছুদিন ব্যবহারের পর তার ব্যবহৃত বইটি আবার কোনো দোকানে গিয়ে বিক্রি করে দেয়, তারপর অন্যান্য লোকজন সে দোকান থেকে ব্যবহৃত বইটি অপেক্ষাকৃত কম দামে কিনতে পারে। এই সূরতটিতে কোন সমস্যা আছে কিনা?
by (719,720 points)
জ্বী, জায়েয হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...