আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
744 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
reshown by
১ঃ আমি বিয়ে করছি প্রায় দেড় বছর  হলো। চাকরীর সুবাদে সারা বছরই বাহিরে থাকতে হয়। ২/৩ মাস পরপর বাড়ীতে যাই। বাকি সময় স্ত্রীর সাথে ফোনে কথা হয়।  কথা বলার সময় প্রায় তার সাথে ঝগড়া হয়। সে মাঝে মাঝে বলত আমি আপনার সাথে থাকোবো না আমি বলতাম যার সাথে খুশি তার সাথে থাক,  যা খুশি তাই কর, যাকে খুশি তাকে বিয়ে  কর,  তুই আমার জীবন থেকে  সর,  তোর মত মেয়ে আমার দরকার নেই। একই সময় সে যখন সরাসরী তালাক চায় আমি বলতাম বাড়িতে গিয়ে দুই পরিবার একত্রে আলাপ - আলোচনা করে সিদ্ধান্ত  নিবো। যদিও তালাকের কোন নিয়তই ছিল না। এই কথা গুলো বারবার  পুনরাবৃত্তি হতো  এতে কি কোন তালাক পতিত হবে? আর হলেও কয় তালাক পতিত হবে?
একই  ঘটনা যদি ২/৩ দিন  পর  বা ২/৩ মাস পরে ঘটে তবে কি নতুন কোন তালাক পতিত হবে? জানালে উপকৃত হব।

২ঃ সে বলত আমি মুক্তি চাই। আমি কখনও তাকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলেছি কি না আমার মনে পড়ে না আর আমার স্ত্রী বলে আমি  তাকে কখনও বলি নাই।  শুধুই  সন্দেহ । এতে কি  কোন তালাক  হয়েছে কি না জানতে চাই?
৩ঃ মুক্তি দেওয়া কি কোন কেনায়া বাক্য নাকি  স্পষ্ট  তালাক  হিসেবে  বিবেচিত  হবে। যেহেতু এই শব্দটি দ্বারা স্ত্রীর ব্যাক্তিগত কাজের বিষয়ে স্বামী তার  নিয়ন্ত্রণ মুক্ত রাখাকে বোঝানো  হয় আর যদি তালাকের কোন নিয়ত  না থাকে। তবে কি উক্ত বাক্য প্রয়োগ  করলে তালাক পতিত হবে?
৪ঃমাসালা জানার উদ্দেশে  কেউ যদি গুগল সার্চ - এ লিখে "তিন  তালাক দিয়েছে  কয় তালাক হবে?" এই বাক্য মাসআলা জানার জন্য লিখলে কি কোন তালাক পতিত হবে?যদিও কোন তালাক দেয় নাই।

৫ঃ ১তালাকে বায়েন হলে ইদ্দতকাল কতদিন হবে?
৬ঃ শরীয়া হালালা সম্পর্কে জানতে চাই।
দয়া করে উত্তর গুলো পয়েন্ট আকারে  দিবেন।
by (3 points)
edited by
৪ নং প্রশ্নটিঃ কেউ যদি তার স্ত্রী শব্দটি উল্লখ করে লিখে যে সে তার স্ত্রীকে ৩ _____ দিয়েছে এতেও কি পতিত হবে" যদিও দেয় নাই, মাসআলা জানার উদ্দেশে লিখলে।
by (3 points)
 ৪ নং প্রশ্নটিঃ কেউ যদি  স্ত্রী শব্দটি উল্লেখ করে লিখে যে সে তার স্ত্রীকে ৩ _____ দিয়েছে এতেও কি পতিত হবে" যদিও দেয় নাই। শুধু মাসআলা জানার উদ্দেশে লিখলে।
by (3 points)
হুজুর আমি আপনাদের সাথে কথা বলতে চাই ফোন নাম্বার দেওয়া যাবে কি?
by
৪ নং প্রশ্নটিঃ কেউ যদি তার স্ত্রী শব্দটি কে উল্লখ করে লিখে যে, "সে তার স্ত্রীকে ৩ _____ দিয়েছে" এতেও কি পতিত হবে" যদিও দেয় নাই।কোন নিয়ত নাই।

1 Answer

+1 vote
by (567,630 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
তালাক খুবই মারাত্মক এক বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে।
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় প্রশ্নে উল্লেখিত শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

হেদায়া গ্রন্থে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.

احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে যে তোমাকে আমি ছেড়ে  দিলাম, যা খুশি তাই করো,তুমি মুক্ত, তুমি স্বাধীন, তুমি স্বামী খুজো,বা স্বামী তালাশ করো,নিজের পরিবারে সাথে যুক্ত হও,তাহলে এটিও কেনায়া তালাক।
কেনায়া তালাক হলো ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা যেটা হয়।
কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয়।

আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
প্রশ্নে উল্লেখিত বাক্য কিনায়া তালাকের বাক্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে।
এ বাক্য বলার সময় আপনার তালাকের নিয়ত থাকলে এক তালাকে বায়েন আপনার স্ত্রীর উপর পতিত হবে।

★প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে যে এসব বাক্য বলার সময় আপনার কোনো তালাকের নিয়ত ছিলোনা,তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো তালাক পতিত হবেনা।

(২.৩)
 মুক্তি দেওয়া কেনায়া বাক্য।
এখানে তালাকের নিয়ত না থাককে তালাক হবেনা।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তালাক হবেনা।

(০৪)
এই বাক্য মাসআলা জানার জন্য লিখলে কোনো তালাক পতিত হবেনা।

(০৫)
তিন হায়েজ অতিক্রম করতে হবে ।

(০৬)
শরয়ী হালালাহ হলো,উদাহরণ স্বরুপ আপনি নিজ স্ত্রীকে তিন তালাক প্রদান করে থাকলে আপনার সাবেক স্ত্রীর ইদ্দতকাল অতিবাহিত  হওয়ার পর তাকে অন্যত্র বিবাহ হতে হবে।

তারপর সেই স্বামীর সাথে স্বাভাবিক ঘর সংসার করতে হবে। এমনকি শারিরীক সম্পর্ক হতে হবে। তারপর উক্ত স্বামী যদি আপনার সাবেক স্ত্রীকে তালাক দেয়, তারপর ইদ্দত শেষ হয়, তাহলেই কেবল আপনি আবার উক্ত মহিলাকে বিবাহ করতে পারবেন। এবং আবার ঘর সংসার করতে পারবেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

আম্মাজান আয়েশা রা. থেকে বরণিত, রাফায়ার স্ত্রী বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার স্বামী রাফায়া আমাকে এক সাথে তিন তালাক দিয়েছে? এরপর আমি আব্দুর রাহমানের সাথে বিবাহ করেছি। এখন রাফায়ার কাছে যেতে পারবো কিনা? নবীজী বললেন, আবদুর রহমান তোমার সাথে সহবাস করলে এরপর রাফায়ার নিকট যেতে পারবে। (সহীহ বুখারী ৫২৬১)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (3 points)
হুজুর আপনার সাথে কথা আমি কথা বলতে চাই ফোন নাম্বা দেওয়া যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...