আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
184 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আস সালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ উস্তায, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে।আমার বাবা একজন সরকারী চাকুরীজীবি ছিলেন।আমার বাবা যখন মারা যায় তখন আমি ক্লাস ৮ এ পড়ি।বাবার মারা যাওয়ার পর আমার মা অন্যত্র বিবাহ করেন।আমি আর আমার ছোট বোন মায়ের সাথে থাকি। আমার বাবার পেনশনের টাকা পাই আমরা।দ্বীনের বুঝ তো অনেক গভীর ব্যাপার।আমার মতো গুনাহগার বান্দাকে আল্লাহ যে অল্প পরিসরে ইলম দান করেছেন,এরপর থেকে পরিপূর্ণ পর্দা,হালাল হারাম,নন মাহরাম মেইনটেইন করে চলছি আল হামদুলিল্লাহ।এরপরে আমি চাকুরীটা ছেড়ে দেই। উস্তায আমার মা আমার এসব পরিবর্তন মেনে নিতে পারছেন না।আমার মা এসব পছন্দ ও করছেন না।আমাকে মানসিকভাবে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়।আমি এই ভাবে অসুস্হ হয়ে গেছি।স্ট্রেসের ওষুধ খাইতে হয়।আমার ছোট বোন টাও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।বাসায় ও আমার সব সময় ঝগড়া,ঝামেলা করতেই থাকেন।চিল্লা চিল্লি,সব সময় গালি গালাজ করতেই থাকেন।ইয়া আল্লাহ সহজ করুন।আমার মা ছোট বেলা থেকেই অনেক অন্যায় করেছেন আমার ভাই বোন গুলোর সাথে।জানি না উস্তায আমার এসব বলা ঠিক হচ্ছে কি না।আল্লাহ আমাকে মাফ করুন।আমার মা আগে থেকেই পরপুরুষের সাথে কথা বার্তা,মেলা মেশা করেন।এসবের জন্য অতীতে আমাদের গ্রামে অনেক মান সম্মানের হানি হয়েছে।অনেক কটু কথা শুনতে হয় এখনো।আমি তখন ছোট ছিলাম এগুলো দেখতাম।এখনো আমার মা একটুও পরিবর্তন হয় নি।আমার মা বলেন পরপুরুষের কাছে থেকে টাকা পয়সা নেয় এবং নিয়ে আমাদের সংসার চালায়,আমাদের খাওয়া দাওয়ার জন্য খরচ করেন।আমার নতুন বাবা ও আমাদের সংসারের খরচ দেন যতটুকু তার সামর্থ্য অনুযায়ী। মায়ের এই স্বভাবগুলো অনেক আগে থেকেই এগুলো নিয়ে ছোট বেলায় আমার বাবার সাথে ও অনেক ঝামেলা হতো।আল্লাহ আমার বাবাকে শান্ততে রাখুন(আমীন)।এগুলো কথা আমার মা নিজে মুখে স্বীকার করেন।আমার কাছে অনেক প্রমাণ ও আছে উস্তায যে মা এমন কাজ করেন।আমার ছোটবেলার স্যার গুলোর বেতনের টাকা এখনো বাকি আছে উস্তায মা দেয় না।বলে ইনকাম করে সেগুলো টাকা দে।উস্তায আমি কখনো মায়ের কাছে বিলাসিতার জিনিস চাই না।প্রয়োজনীয় জিনিস ও তেমন চাই না।নিজের টিউশন করি নিজে খরচ চালানোর জন্য।আমার মা এভাবে অপর পুরুষের টাকা দিয়ে আমাদের খাওয়াচ্ছেন।মায়ের কাছে থাকতে হলে এসব সহ্য করে মুখ বুজে দেখে থাকতে হবে,না হইলে বাসা থেকে চলে যেতে বলছে।মায়ের এসব কাজ তো বৈধ হচ্ছে না।এটা হালাল ও নয়।আমার ইবাদত কবুল হবে না।আমার দুআ কবুল হবে না।আমি আমার মাকে বুঝায়তে গেলে মা গালি দেয়,চিল্লা চিল্লি করে,মানুষের কাছে বলে বেড়ায় যে আমার মেয়ে খারাপ।আমি তাঁকে শাসন করার অধিকার রাখি না।আমি তাঁর অভিভাবক নয়।আবার বলে উনি তো নিজের সতীত্ব বিক্রি করে টাকা আনেন না।ওই মানুষ নাকি এমনি এতো গুলো টাকা দেয়।ইসলামী শরীয়ত মতে আমার কি করা উচিৎ?আমি কি আমার ছোট বোনকে নিয়ে মায়ের কাছে থেকে আলাদা হয়ে যাবো?আমার কি করা উচিৎ উস্তায।আমরা ২বোন এতীম।শুধু আমার বড় ভাই,ভাবী আছেন।মামা-চাচা কেউ আমাদের খোঁজ খবর রাখেন না।আমার এই অবস্হায় কি করবো উস্তায?নিজেকে খুব অসহায় লাগছে।আমাকে পরামর্শ দিন উস্তায।

উস্তায আমার কোনো ভুল হলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।আমার ভুল গুলো ধরিয়ে শুধরানোর সুযোগ দিবেন।

জাযাকাল্লাহ খইরুন

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

★★প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী বোন!
শরীয়ত উপার্জন সক্ষম বালেগ পুরুষ এর উপর আরো অনেকের লালন পালনের দায়িত্ব দিয়েছে।যেমন, উপার্জন অক্ষম মাতা-পিতা, নাবালিগ ছেলে,মেয়ে,স্ত্রী সহ অনেকের ভরণপোষণের দায়িত্ব রয়েছে একজন পুরুষের উপর।
এখন অভিবাবকের সম্পদ হারাম হলে, সেই সম্পদ থেকে খরছ না করে নিজ মাল থেকে খরছ করাই উচিৎ,যদি নিজের সম্পদ থাকে।তবে বালেগ ছেলের উপর ওয়াজিব যে,তার সম্পদ না থাকলেও সে হালাল তরিক্বায় তার জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্টা করবে।হ্যা উপার্জন অক্ষম ব্যক্তির জন্য অভিবাবকের  হারাম মাল থেকে তাওবাহ-ইস্তেগফারেরর সাথে প্রয়োজন পর্যন্ত খোরাকি গ্রহণ করা বৈধ রয়েছে।কেননা এই উপার্জন অক্ষম ব্যক্তিগণকে ভরণপোষণ করা তার একান্ত দায়িত্ব ছিলো।সুতরাং গোনাহ ঐ অভিবাবকের ই হবে।(বিস্তারিত জানতে দেখুন-ফাতাওয়ায়ে উসমানী-৩/১২৭)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি আপনার মা থেকে ভরনপোষণ ইত্যাদি বাবদ গ্রহন করে চলতে পারবেন,তবে যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকুই নিবেন,বেশি নিবেননা।
আপনার দোয়া ইবাদত কবুল হবে,ইনশাআল্লাহ।    

আপনি চাইলে শরীয়তের সমস্ত শর্ত মেনে নিজে উপার্জন করতে পারেন।
তবে শরীয়তের সমস্ত শর্ত মেনে উপার্জন করতে না পারলে সেটির অনুমতি নেই।

আপনি দ্রুত বিবাহের কথা মাকে বলবেন।
দ্রুত বিবাহ হয়ে গেলে আপনার আর সমস্যা থাকবেনা,ইনশাআল্লাহ। 
বিবাহের আগ পর্যন্ত চেষ্টা করবেন কোনো হালাল ইনকামের।
টিউশনি ইত্যাদিও করতে পারেন।
হালাল ইনকামের ব্যবস্থা হলে মা থেকে খরচ না নিয়ে হালাল ইনকাম থেকেই খরচ করবেন,প্রয়োজনে মাকেও আপনার ইনকামের অংশ দিতে পারেন।
আপনি বাসা থেকে চলে যাবেননা।
তবে চাইলে আলাদা ভাবে পাকিয়ে খানা খেতে পারেন।

তবে শরীয়তের সমস্ত শর্ত মেনে উপার্জন করতে না পারলে সেটির অনুমতি নেই।
সেই ছুরতে আপনি মা থেকেই প্রয়োজনীয় খাবার ইত্যাদি খরচ নিবেন।
,
আরো জানুনঃ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...