আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
241 views
in সালাত(Prayer) by (6 points)
reopened by
আসসালামু আলাইকুম
1,আমার বয়স 24আমি গত এক বছর ধরে নামাজ এ রেগুলার হয়েছি এখন আগের নামাজ গুলো আদায় এর জন্যে কি কি করতে পারি...এবং কাযা নামাজ আদায় এর নিয়ম কি?একজন মুসলিম এর জন্যে নামাজ আদায় কখন ফরজ হয়?


2,আমি আগে দীন এর প্রসংগে জানতাম না তাই ইচ্ছাই ও অনিচ্ছায় অনেক ফরজ রোজা রাখা হয়নি .এখন আমার কি করণিয় এবং কাফফারা দিতে চাইলে তার বিধান কি?

3.সিজদায় কি রব্বানা দোয়া করা যাবে?পিতামাতার জন্যে কোরআন এ যে দোআ আছে তা কি করা যাবে?সালাতে না চাইতে ও কান্না আসলে কি নিশব্দে কাদা যাবে?যেমন পিতামাতা র সুস্থতা কামনায়?কারণ আমি শুনেছিলাম কেদে দোয়া করলে আল্লাহ খুশি হন?

4.যে কোনো অবস্থায় কি দোআ করা যাবে?নাকি সবসময় হাত তুলে মোনাজাত করে করতে হবে?মনে মনে করলে কি হবে?

5.আমার 5 সেপ্টেম্বর থেকে এখন ও ব্লিডিং হচ্ছে মাঝে 5 দিন এর মাথায় বন্ধ হওয়া তে আমি ফরজ গোসল করে নামাজ পরি ..পরদিন এ অল্প করে আবার শুরু হয়,,এখন আমি যে নামাজ শুরু করলাম তা কি ঠিক আছে?কেননা 5 দিন র দিন কোনো ব্লিডিং ছিলনা..কিন্তু এরপর থেকে এখন অবধি অল্প অল্প করে হছে যা 2 দিন ধরে বেড়েছে..এখন প্রায় এক মাস হয়ে যাচ্ছে নতুন করে মাসিক হছে না ইস্তিহাযা ই হচ্ছে আমি কি করে বুঝবো?আমি কি মেডিসিন নিয়ে ব্লিডিং অফ করবো?এবং ব্লাড র পরিমাণ অল্প বা বেশি যাই হোক যেমন মাসিক র শুরুতে খুব ই অল্প যায় পরে বাড়ে এক্ষেত্রে কি প্রথম দিন থেকেই কাওন্ট করবো?ব্লিডিং র পরিমান যাই হোক না কেনো?


6.মেডিকেল এ ভাইভা ফেস করার সময় আইডেন্টিটি চেক র জন্যে নিকাব খুলে ভাইভা দিতে হলে করণীয় কি?

7.সাহু সিজদাহ কিভাবে দিতে হয়?

8.আমি কি যেকোনো মুসলিম র কল্যান কামনায় নফল নামাজ ..রোজা ,দান সাদাকা করতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
edited by
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم  
,
(০১)
আপনি হিসাব করবেন যে আপনার বালেগা হওয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত হায়েজের দিন গুলো বাদ দিয়ে কত দিন হয়েছে।
তারপর সেই নামাজ গুলোর একটি হিসাব কষবেন।
তারপর আপনি এই নামাজ গুলো সময় সুযোগ মোতাবেক কাযা আদায় করা শুরু করবেন।
এটাকে উমরি কাযা বলে।
,
উমুরী কাযা নামায আদায় করতে হলে প্রথমে কোন ওয়াক্ত নামায কত রাকাত কাযা হয়েছে তা নির্ণিত করে নিতে হবে।

যদি তা জানা সম্ভব না হয়। তাহলে অনুমান করে নিবে। অনুমান করে কোন নামায কত ওয়াক্ত কাযা করেছে তা নির্ধারণ করে নিবে। তারপর একে একে তা আদায় করবে।

যেমনঃ
ফজরের নামায ৭০ ওয়াক্তের কাযা হয়েছে। তখন কাযা নামায আদায় করার সময় এভাবে নিয়ত করবে, আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা আছে, তার অনাদায়কৃত প্রথম ফজরের কাযা আদায় করছি” এমন নিয়তে নামায আদায় করবে।

তারপর যিম্মায় ৬৯ ওয়াক্তের ফজরের নামায বাকি থাকে। তবু এভাবেই নিয়ত করবে যে, আমার যিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা আছে, তার প্রথম অনাদায়কৃত ফজরের নামাযের নিয়ত করছি”। এভাবে হিসেবে করে পড়তে থাকবে। প্রতিবার অনাদায়কৃত প্রথম ফজর নামায বলার দ্বারা যে নামায বাকি আছে, তার প্রথম নামাযের নিয়ত হচ্ছে, তাই নিয়তটি নির্দিষ্ট নামাযের হয়ে যায়।

ঠিক উল্টোভাবেও করা যায়। অর্থাৎ যত নামায কাযা আছে তার সর্বশেষ অনাদায়কৃত কাযার নিয়ত করছি। এভাবেও পূর্বোক্ত পদ্ধতিতে বাকি নামাযের কাযা আদায় করা যাবে।

এভাবে বাকি নামায আদায় করবে। যোহর, আছর, মাগরিব, ইশাও এভাবে আদায় করবে।

একদিনে একাধিক চারদিন পাঁচদিনের, যত দিনের ইচ্ছে কাযা আদায় করা যাবে। কোন সমস্যা নেই।

وفى الدر المختار- كَثُرَتْ الْفَوَائِتُ نَوَى أَوَّلَ ظُهْرٍ عَلَيْهِ أَوْ آخِرَهُ،
وقال ابن عابدين الشامى – (قَوْلُهُ كَثُرَتْ الْفَوَائِتُ إلَخْ) مِثَالُهُ: لَوْ فَاتَهُ صَلَاةُ الْخَمِيسِ وَالْجُمُعَةِ وَالسَّبْتِ فَإِذَا قَضَاهَا لَا بُدَّ مِنْ التَّعْيِينِ لِأَنَّ فَجْرَ الْخَمِيسِ مَثَلًا غَيْرُ فَجْرِ الْجُمُعَةِ، فَإِنْ أَرَادَ تَسْهِيلَ الْأَمْرِ، يَقُولُ أَوَّلَ فَجْرٍ مَثَلًا، فَإِنَّهُ إذَا صَلَّاهُ يَصِيرُ مَا يَلِيهِ أَوَّلًا أَوْ يَقُولُ آخِرَ فَجْرٍ، فَإِنَّ مَا قَبْلَهُ يَصِيرُ آخِرًا، وَلَا يَضُرُّهُ عَكْسُ التَّرْتِيبِ لِسُقُوطِهِ بِكَثْرَةِ الْفَوَائِتِ. (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب قضاء الفوائت-2/538
,
যার সারমর্ম হলো যদি বেশি ওয়াক্তের কাযা একত্রিত হয়,তাহলে নিয়ত করবেন যে প্রথম দিনের জোহরের নামাজ আদায়  করছি,তারপর তারপরের দিনের,,,,
,
(০২) আপনি হিসাব করবেন যে আপনার বালেগা হওয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত কয়টা রমজান মাস অতিবাহিত হয়েছে।  
তারপর হিসেন কষবেন।
যদি তা জানা সম্ভব না হয়। তাহলে অনুমান করে নিবেন। অনুমান করে কয়টা রোযা কাযা করেছে তা নির্ধারণ করে নিবেন। তারপর একে একে তা আদায় করবে।
অতঃপর ধারাবাহিক ভাবে সেগুলোর কাযা শুরু করে দিবেন।  
প্রতি রোযার কাযা একটা করে আদায় করবেন।
,
এক্ষেত্রে আপনার অবস্থা যদি এমন হয় যে কঠিন বার্ধক্যে পৌঁছে যাওয়ার কারনে   রোযা রাখার শক্তি নেই,তাহলে প্রত্যেক রোযার জন্য একজন মিসকিনকে এক বেলা খাবার খিলাইবেন।
অন্যথায় কাফফারার কোনো ছুরত নেই।
.
(০৩) 

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ يَقُولُ فِى سُجُودِهِ « اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِى ذَنْبِى كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ সেজদায় পড়তেন আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি’ কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু ওয়া আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু”। {তাহাবী শরীফ, হাদিস নং-১৩০৭, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৮৭৮, সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-১১১২, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস নং-৬৭২, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-১৯৩১}

ফরজ নামজে হোক, বা নফল নামাযে, চাই তা তাহাজ্জুদ হোক বা অন্য নামায হোক সিজদায় গিয়ে কুরআন-সুন্নাহে বর্ণিত দুআ করা যাবে। বা কুরআনে বা হাদীসে আছে এমন দুআর সমার্থক শব্দের দুআ করা যাবে। বা আখেরাতের জন্য দুআ করা যাবে। কিন্তু দুনিয়াবী দুআ করা যাবে না। আরবী ছাড়া অন্য ভাষায়ও দুআ করা যাবে না।
দুনিয়াবী দুআ করলে বা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় দুআ করলে নামায ভেঙ্গে যাবে।
দুনিয়াবী দুআ-যেমন হে আল্লাহ! আমাকে এক লাখ টাকা দান করেন।

আখেরাতের জন্য দুআ-যেমন-হে আল্লাহ আমাকে জান্নাত দান করেন।

فى الدر المختار- ( ودعا ) بالعربية ، وحرم بغيرها، (كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، مطلب فى الدعاء بغير العربية، 2/233-234)
আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় দোয়া করা যাবেনা। 

فى مراقى الفلاح-ويفسد الدعاء بما يشابه كلامنا الخ (طحطاوى على مراقى الفلاح-261، وكذا فى الفتاوى الهندية-2/3)
وفى البحر الرائق- قوله ( ودعا بما يشبه ألفاظ القرآن والسنة لا كلام الناس ) أي بالدعاء الموجود في القرآن ولم يرد حقيقة المشابهة إذ القرآن معجز لا يشابهه شيء ولكن أطلقها لإرادته نفس الدعاء لا قراءة القرآن مثل { ربنا لا تؤاخذنا } البقرة 286 { ربنا لا تزغ قلوبنا } آل عمران 8 { رب اغفر لي ولوالدي } نوح 28 { ربنا آتنا في الدنيا حسنة } البقرة 201 إلى آخر كل من الآيات 
কুরআন-সুন্নাহে বর্ণিত দুআ করা যাবে। বা কুরআনে বা হাদীসে আছে এমন দুআর সমার্থক শব্দের দুআ করা যাবে। বা আখেরাতের জন্য দুআ করা যাবে। কিন্তু দুনিয়াবী দুআ করা যাবে না। আরবী ছাড়া অন্য ভাষায়ও দুআ করা যাবে না।
,
শরীয়তের বিধান হলো  সালাতরত অবস্থায় যদি কেহ ব্যাথা বা কষ্টের কারনে স্বেচ্ছায় কান্না করে,তাহলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে।
 আর যদি আল্লাহর ভয়, কবরের আযাব, জাহান্নামের শাস্তি, মৃত্যু যন্ত্রণা, আখিরাতের ভয়াবহ দৃশ্য ইত্যাদি স্মরণ করে অথবা কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন শাস্তির হুমকি ও করুণ পরিণতির কথায় প্রভাবিত হয়ে অনিচ্ছায় যদি কেউ কান্না করে তাহলে তা জায়েজ আছে।

যদি ব্যাথা বা কষ্টের কারনে অনিচ্ছায় কান্না চলে আসে,তাহলেও তা জায়েজ আছে।

(কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/১০২)

عن عبد اللّٰہ الشخیر: رأیت رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم یصلي بنا، وفي صدرہ أزیز - صوت القدر إذا غلت - کأزیز المرجل من البکاء۔ (رواہ أبوداؤد، الصلاۃ / باب البکاء في الصلاۃ رقم: ۹۰۴، سنن النسائي رقم: ۱۲۱۰، إعلاء السنن ۵؍۴۹ رقم: ۱۳۹۹ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
“আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সলাত আদায় করতে দেখছি। এমতাবস্থায় তাঁর সিনার মধ্যে চাক্কির আওয়াজের ন্যায় কান্নার আওয়াজ থাকত।” (আহমদ; নাসায়ী প্রথমাংশটুকু, আবু দাউদ দ্বিতীয়াংশটুকু বর্ণনা করেছেন)

[আবু দাউদ ৯০৪, নাসায়ী ১২১৪, সহীহ আত্ তারগীব ৫৪৪, আহমদ ১৬৩১২, সহীহ ইবনে হিব্বান ৭৫৩। ]
۔
নামাজে কান্না সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুন 
,
সুতরাং আপনি পিতামাতার জন্য কুরআনে বর্ণিত দোয়া করতে পারবেন।
অনিচ্ছায় কান্না  চলে আসলে কোনো সমস্যা নেই। 
,
(০৪) যেকোনো অবস্থায় দোয়া করা যাবে।
হাত তুলে মুনাজাত করা জরুরি নয়,এটা দোয়ার আদব মাত্র। 
,
(০৫) 
বোন! যেহেতু অনেক বছর ধরেই আপনার পিরিয়ড হচ্ছে, সুতরাং একটি স্বাভাবিক অভ্যাস হয়ে যাবার কথা। অর্থাৎ পিরিয়ডের রক্ত আসা শুরু হবার পর কতদিন পর তা বন্ধ হয়? যদি দশদিনের মাঝে বন্ধ হয়, যেমন ৭ দিন, ৮দিন, ৫দিন ইত্যাদি।

তাহলে যেদিন যে সময়ে বন্ধ হবে, সেদিন গোসল সেরে নামায পড়তে হবে। সাদা স্রাব আসা জরুরী নয়। বরং লাল রক্ত বন্ধ হলেই হায়েজ শেষ হয়ে গেছে বলে ধর্তব্য হবে।

আর যদি নির্দিষ্ট না থাকে, বরং দিন কমবেশি হয়, তাহলেও রক্ত বন্ধ হবার পর গোসল করে নামায পড়া আবশ্যক।

আর এক্ষেত্রে যে নামাযের সময় বন্ধ হল, যদি সেই সময় গোসল করে সেই নামাযের তাকবীর বাঁধার মত সময়ও বাকি থাকে, তাহলে উক্ত নামাযটি আদায় করা আবশ্যক হয়ে যায়। আর যদি গোসল করে তাকবীর বাঁধার মত সময় না পাওয়া যায়, তাহলে সেই নামায আদায় করা আবশ্যক নয়।

উদাহরণতঃ
যোহরের নামাযের সময় শেষ হয় সাড়ে তিনটায়। এখন আপনার হায়েজের রক্ত বন্ধ হল নির্ধারিত দিনের তিনটা সময়ে। এখন এ সময়ে যদি আপনার নিকটে পানি থাকে, তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবেই গোসল করে ফরজ পড়তে পারবন। তাই এ নামায আপনার উপর আবশ্যক হবে। আর যদি পানি না থাকে, তাহলে তায়াম্মুম করে হলেও নামাযটি আদায় করতে হবে।

কিন্তু আপনার হায়েজ বন্ধ হল তিনটা বেজে ২৫ মিনিটে। তাহলে এ পাচ মিনিটে আপনার জন্য গোসল করে নামায দাড়ানো সম্ভব নয়। তাই এদিনের যোহরের নামায আপনার উপর আবশ্যক হবে না। বরং আসরের নামায থেকে নামায পড়া আবশ্যক হবে।

আর যদি দিন নির্ধারিত না হয়, বরং দশদিন অতিক্রান্ত হয়ে যায়, অর্থাৎ দশদিনের মাঝে রক্ত বন্ধ হয় না, বরং তা দশদিনের পরও জারি থাকে, তাহলে দশদিন অতিক্রম হবার পর থেকে রক্ত ঝরলেও গোসল করে নামায আদায় করতে হবে।কারণ হায়েজের সর্বোচ্চ সময়সীমা হল ১০ দিন। এরপর রক্ত আসলে তা হায়েজের রক্ত বলে ধর্তব্য হবে না। বরং তা ইস্তিহাজা তথা অসুস্থ্যতার রক্ত বলে ধর্তব্য হবে।

তবে রক্ত বন্ধ হবার পর নামাযের মুস্তাহাব সময় পর্যন্ত গোসলকে দেরী করা জায়েজ আছে এ আশংকায় যে, আবার রক্ত আসে কি না? এরপরও যদি রক্ত না আসে, তাহলে গোসল করে নামায পড়ে নিতে হবে। সাদা স্রাব আসার জন্য অপেক্ষা করবে না।

ফাতওয়ায়ে শামী-১/৪৮৯-৪৯১
আল বাহরুর রায়েক-১/৩৫৩-৩৫৫
ফাতহুল কাদীর-১/১৭৩-১৭৪

এ বিষয়ে ভাল করে জানতে হলে পড়ুন- বেহেশতী জেওর, বা মাওলানা হেমায়েত উদ্দীন সংকলিত “ফিক্বহুন নিসা”।

فى رد المحتار- وَإِنْ) انْقَطَعَ لِدُونِ أَقَلِّهِ تَتَوَضَّأُ وَتُصَلِّي فِي آخِرِ الْوَقْتِ، وَإِنْ (لِأَقَلِّهِ) فَإِنْ لِدُونِ عَادَتِهَا لَمْ يَحِلَّ، وَتَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي وَتَصُومُ احْتِيَاطًا؛ وَإِنْ لِعَادَتِهَا، فَإِنْ كِتَابِيَّةً حَلَّ فِي الْحَالِ وَإِلَّا (لَا) يَحِلُّ (حَتَّى تَغْتَسِلَ) أَوْ تَتَيَمَّمَ بِشَرْطِهِ (أَوْ يَمْضِيَ عَلَيْهَا زَمَنٌ يَسَعُ الْغُسْلَ) وَلُبْسَ الثِّيَابِ (وَالتَّحْرِيمَةَ) يَعْنِي مِنْ آخِرِ وَقْتِ الصَّلَاةِ لِتَعْلِيلِهِمْ بِوُجُوبِهَا فِي ذِمَّتِهَا، (رد المحتار ، كتاب الطهارة، باب الحيض-1/489-491
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি আপনার পিরিয়ডের স্বাভাবিক অভ্যাস এর দিন গুলোর পর থেকেই গোসল করে নামাজ, অন্যান্য কাজ  শুরু করে দিবেন।
আর যদি আপনার পিরিয়ডের দিন প্রতি মাসে নির্দিষ্ট না থাকে, বরং দিন কমবেশি হয়, 
তাহলে সর্বোচ্চ দশ দিন হায়েজ ধরে তারপরের দিন গুলোকে আপনি ইস্তেহাজা (অসুস্থতা) ধরে নামাজ রোযা শুরু করে দিবেন।
,
(০৬)
অবস্থা যদি এমন হয় যে  মেডিকেল এ ভাইভা ফেস করার সময় আইডেন্টিটি চেক র জন্যে নিকাব খুলে ভাইভা দিতেই হবে,নিকাব না খোলা তারা যদি কোনো ক্রমেই না মানে,তাহলে ফেতনার আশংকা না থাকার শর্তে প্রয়োজন বশত অল্প সময়ের জন্য তাদের সামনে আপনার নিকাব খোলা জায়েজ আছে।  

আল্লাহ তায়ালা বলেন 
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١


মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللَّهِ عَظِيمًا


অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
,
(০৭) সাহু সিজদাহ  আদায়ের পদ্ধতিঃ 

সাহু সেজদা আবশ্যক হয়, এমন কাজ নামাযের ভিতরে হয়ে গেলে, নামাযের শেষ বৈঠক শেষ করে সালাম ফিরাবে, তারপর দু’টি সেজদা দিবে, তারপর আবার স্বাভাবিকভাবে তাশাহুদ, দরূদ ও দুআয়ে মাসূরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবে।
وَإِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ، فَلْيَتَحَرَّ الصَّوَابَ فَلْيُتِمَّ عَلَيْهِ، ثُمَّ لِيُسَلِّمْ، ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيْنِ»

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের মাঝে যখন কারো নামাযের ব্যাপারে সন্দেহ হয়ে যাবে, তখন তার জন্য উচিত এ ব্যাপারে চিন্তা ফিকির করা, তারপর নামায পূর্ণ করে সালাম ফিরাবে তারপর দুই সিজদা করবে। {সহীহ বুখারী-১/৫৮, হাদীস নং-৪০১, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৭২}

عَنْ عَبْدِ اللهِ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: «السَّهْوُ أَنْ يَقُومَ فِي قُعُودٍ , أَوْ يَقْعُدَ فِي قِيَامٍ , أَوْ يُسَلِّمَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ , فَإِنَّهُ يُسَلِّمُ , ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيِ السَّهْوِ , وَيَتَشَهَّدُ , وَيُسَلِّمُ»

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ভুল হল এই যে, নামাযী ব্যক্তি বসার বদলে দাঁড়িয়ে যাওয়া। অথবা দাঁড়ানোর বদলে বসে যাওয়া, বা [তিন বার চার রাকাতওয়ালা নামাযে] দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে দেয়া। তাহলে এমন ব্যক্তি সালাম ফিরানোর পর দুই সেজদা করবে,তারপর তাশাহুদ পড়ে সালাম ফিরাবে। {তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-২৫৬৫}

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ ছাড়াও হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাঃ, হযরত আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের রাঃ, হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ, হযরত সাদ বিন আবী ওয়াক্কাস রাঃ প্রমূখ সাহাবাগণ থেকে সালাম ফিরানোর পর সাহু সেজদা করা প্রমানিত। {শরহু মাআনিল আসার, হাদীস নং-২৫৬৪}


عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لِكُلِّ سَهْوٍ سَجْدَتَانِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ»،

হযরত সাওবান রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ প্রত্যেক ভুলের কারণে দুই সিজদা দিতে হবে সালাম ফিরানোর পর। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১০৩৮, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১২১৯, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২৪১৭}


عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ شَكَّ فِي صَلَاتِهِ فَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ بَعْدَ مَا يُسَلِّمُ»

হযরত আব্দুল্লাহ বিন যাফর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যার নামাযে সমস্যা হয়ে যায়, সে যেন দু’টি সেজদা করে সালাম ফিরানোর পর। {সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-১৫৫০}
,
(০৮) আপনি যেকোনো মুসলিম র কল্যান কামনায় নফল নামাজ,রোযা,  দান সাদাকা করতে পারবেন।
,
তবে ফরজ নামাজ,রোযা  আদায় করা যাবেনা।

ফরজ নামাজ,রোযা  কোনো জীবিত বা মৃত মানুষের জন্য পড়লে তা হবে না। নামাজ হবে ব্যক্তির নিজের জন্য, যিনি নামাজ পড়ছেন এটি তাঁর জন্য হবে। নামাজ তাঁর নিজের কল্যাণের জন্য, তাঁর নিজের ইবাদত এবং নামাজ অবশ্যই হতে হবে আল্লাহর জন্য।

নামাজ একটি শারীরিক ইবাদত এবং নামাজের ক্ষেত্রে এটি সাব্যস্ত হয়নি যে অন্য কারো পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করা যাবে। যিনি নামাজ পড়ছেন এটি তাঁর পক্ষ থেকেই হবে। তবে, আপনি নামাজের পরে বাইরে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করতে পারবেন।
,
তবে নফল নামাজ,রোযা আদায় করে ছওয়াব পৌছানো যাবে।
এতে কোনো সমস্যা নেই।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 192 views
...