জবাবঃ-
তারাবীহ এর সালাত প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলমানের উপর সুন্নাতে মুআক্কাদা।
এবং জামাতের সাথে আদায় করা সুন্নাতে মুআক্কাদা আ'লাল কিফায়া।
ফেকহে হানাফির নির্ভর্যোগ্য প্রসিদ্ধ গ্রন্থ "ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে" বর্ণিত আছে,
وَنَفْسُ التَّرَاوِيحِ سُنَّةٌ عَلَى الْأَعْيَانِ عِنْدَنَا كَمَا رَوَى الْحَسَنُ عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى - وَقِيلَ: تُسْتَحَبُّ وَالْأَوَّلُ أَصَحُّ. وَالْجَمَاعَةُ فِيهَا سُنَّةٌ عَلَى الْكِفَايَةِ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ وَهُوَ الصَّحِيحُ، كَذَا فِي مُحِيطِ السَّرَخْسِيِّ.
তারাবীহ সুন্নাতে মুআক্কাদা আলাল আইন।যেমন ইমাম আবু-হানিফা থেকে হাসানের রেওয়াতে বর্ণিত আছে।কেউ কেউ অবশ্য মুস্তাহাব ও বলেছেন।তবে প্রথম অভিমতটাই অধিক গ্রহণযোগ্য।এবং জামাতের সাথে তারাবীহের সালাত আদায় করা সুন্নাতে মুআক্কাদা আলাল কিফায়া। এভাবেই "তাবয়ীনুল হাক্বাইক্ব" নামক কিতাবে বর্ণিত আছে। এবং "মুহিতে সারাখসীতে" বর্ণিত আছে।
ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া,১/১১৬
অন্যত্র বর্ণিত রয়েছে,
وَلَوْ تَرَكَ أَهْلُ الْمَسْجِدِ كُلُّهُمْ الْجَمَاعَةَ فَقَدْ أَسَاءُوا وَأَثِمُوا، كَذَا فِي مُحِيطِ السَّرَخْسِيِّ.
যদি কোনো মসজিদের অধিবাসী সবাই জামাতকে ছেড়ে দেয়,তাহলে তারা গুনাহগার হবে,এভাবেই মুহিতে সারাখসীতে বর্ণিত আছে।
আপনি যেহেতু কয়েকটি সূরা মুখস্থ পড়তে পারেন, তাই ফরয সালাত পড়তে আপনার আপাদত কোনো সমস্যা হচ্ছেনা।
এখন তারাবীহের সালাতে ইমামের পিছনে তেলাওয়াতকৃত আয়াত আপনি মুখস্থ পারেন না বা তার অর্থ জানেন না।
এ জন্য সালাতকে বিসর্জন দিবেন।
এর কোনো অর্থই হয় না।বরং তারাবীহের সালাতে আপনি সর্বদা শরিক থাকবেন।
কেননা এতে আপনার দু'টি এবাদত হচ্ছে,একটি হচ্ছে সালাত ও দ্বিতীয়টি হচ্ছে তেলাওয়াত শ্রবণ।
সালাতে কোরআন তেলাওয়াত শ্রবণ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻗُﺮِﻯﺀَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥُ ﻓَﺎﺳْﺘَﻤِﻌُﻮﺍْ ﻟَﻪُ ﻭَﺃَﻧﺼِﺘُﻮﺍْ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗُﺮْﺣَﻤُﻮﻥَ
আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের উপর রহমত হয়।
সূরা আ'রাফ-২০৪।
কোরআন তেলাওয়াত করলে বা শ্রবণ করলে সওয়াব হয়।
উক্ত সওয়াব পাওয়া অর্থ বুঝার উপর নির্ভরশীল নয়।বরং কেউ অর্থ না বুঝলেও তেলাওয়াত শ্রবণের সওয়াব পাবে।
যেমনঃ-হযরত ইবনে মাসউদ রাঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ
عن ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ
ﻳﻘﻮﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﻦ ﻗﺮﺃ ﺣﺮﻓﺎ ﻣﻦ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻠﻪ ﺑﻪ ﺣﺴﻨﺔ ﻭﺍﻟﺤﺴﻨﺔ ﺑﻌﺸﺮ ﺃﻣﺜﺎﻟﻬﺎ ﻻ ﺃﻗﻮﻝ ﺍﻟﻢ ﺣﺮﻑ ﻭﻟﻜﻦ ﺃﻟﻒ ﺣﺮﻑ ﻭﻻﻡ ﺣﺮﻑ ﻭﻣﻴﻢ ﺣﺮﻑ
নবীজী সাঃ বলেছেনঃযে ব্যক্তি কোরআনে কারীমের কোনো হরফ পড়বে,সে সওয়াব প্রাপ্ত হবে।এবং উক্ত সওয়াব দশগুন পরিমাণ বৃদ্ধি হতে পারে।আমি একথা বলবনা যে الم (সব গুলার সমষ্টি)এক হরফ বরং الفএক হরফلام এক হরফ ميمএক হরফ।
তিরমিযি হাদীস নং-১৯১০
এখানে শুধমাত্র তেলাওয়াতের সওয়াব বর্ণনা করা হচ্ছে।বুঝে তেলাওয়াতের কথা বলা হচ্ছে না।বা বুঝে পড়লে এত সুওয়াব হবে, এমন কথাও বলা হচ্ছেনা।বরং বুঝে হোক অথবা না বুঝে হোক সর্বাবস্থায় তেলাওয়াত ও তার শ্রবণের সওয়াব কি?তা বর্ণনা করা হচ্ছে।
অবশ্য কোরআন বুঝা মুসলমানদের অন্যতম একটি দায়িত্ব।
আপনি অন্য সময়ে কোরআন ও তার তাফসীর অধ্যয়ন করুন।এতেও আপনি সওয়াব পাবেন।
এবং তারাবীহের সময় তারাবীহ পড়ুন।
والله أعلم ،