আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
258 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

- স্টার্স ফেয়ার ২৫ নামে একটি অনলাইন জব বা অনলাইন শপিং বা মার্কেটিং কোম্পানি আছে (তবে মার্কেটিং প্লান কিছুটা ভিন্ন) সেটা থেকে ইনকাম করা কি হালাল?

- স্টার্স ফেয়ার ২৫ (Starsfair25) এ কিভাবে ইনকাম করা যায় বা কিভাবে এখান থেকে গ্রাহক ইনকাম বা উপার্জন করতে পারে তার বিস্তারিত বিবরণ দিচ্ছিঃ-

১/★ প্রথমত উক্ত কোম্পানিতে ফ্রিতে নিজের একাউন্ট সাইন আপ করা যায়, কিন্তু গ্রাহক আইডিটা খোলার সময় কারো রেফার কোড বা কারো রেফারেন্সে জইন হতে হবে, এরপর গ্রাহকের আইডিটা একটিভ করতে ২৫৳ কোম্পানির লেনদেন নাম্বারে সেন্ড করতে হবে। অতপর গ্রাহকের আইডি কোম্পানি একটিভ করে দিবে।

- তবে সাথে সাথে কোম্পানি গ্রাহকের একাউন্টের শপিং ব্যালেন্সে ওই ২৫৳ ফিরিয়ে দেয়, এবং গ্রাহক ২৫৳ মধ্যমে শপিং করে খরচ করে নিতে পারবে।

২/★ এখন কথা হচ্ছে যে ব্যাক্তির রেফার কোড ইউজ করে গ্রাহক জইন হলো, ওই ব্যাক্তিকে কোম্পানি রেফার বোনাস দিবে ৫৳ এবং ওই ব্যাক্তিকে আবার যে জইন করিয়েছে এবং এমন করে তার উপরের ২৪ জন আপলাইন পাবে ৩,২,১ ইত্যাদি করে, প্রায় এক গ্রাহকের জইনের মাধ্যমে উপরের ২৫ জন সর্বমোট পাবে ১৯৳
- (আপলাইন বলা হয়ঃ- অর্থাৎ রহিম মিয়া যদি করিম মিয়াকে কোম্পানিতে জইন করায় তাহলে [রহিম মিয়া হচ্ছে করিম মিয়ার আপলাইন,] এবং [করীম মিয়া হচ্ছে রহিম মিয়ার ডাওনলাইন]

৩/★এখন নতুন গ্রাহক যদি ইনকাম করতে চায় তাহলে তার ৪ টা পদ্ধতিঃ-

>(১) নতুন কাওকে কোম্পানিতে তার অনুরূপ রেফার ও জইন করিয়ে ইনকাম করতে পারবে।

>(২) অথবা কোম্পানিতে বিভিন্ন প্রডাক্ট আছে, সেগুলো নিজে ক্রয় করেও সেখান থেকে কিছু কমিশন আইডিতে পাবে।

- অথবা সে যাদেরকে জইন করিয়েছে (অর্থাৎ তার ডাওনলাইনরা) তারা যেকোনো সময় যেকোনো প্রডাক্ট কোম্পানি থেকে ক্রয় করলে সে (আপলাইন) সেখান থেকে একটা % কমিশন অটোমেটিক পেয়ে যাবে।

- এমন ভাবে সে তার নিচের ২৫ জেনেরেশন পর্যন্ত যত রেফার বা মেম্বার আছে তাদের থেকে রেজিস্ট্রেশন বোনাস ও শপিং বোনাস পেতেই থাকবে।

>(৩) বিভিন্ন পদবী অর্জন করে সেখান থেকে এককালীন কিছু পুরষ্কার ও গিফট কোম্পানি তাকে দিবে, যেমনঃ-

- গ্রাহকের ১-১০ লেভেল পর্যন্ত যদি একেক লেভেলে নির্দিষ্ট সংখ্যার কিছু মেম্বার হয়ে টোটাল ১১৬০ জন তার অনুরূপ মেম্বার জইন হয়, তাহলে সে হবে কোম্পানির (স্টার মেম্বার) এবং সে পাবে একটি বাটন ফোন বা ১ হাজার টাকা। এবং মাসিক কিছু সেলারি

- (অর্থাৎ কোম্পানিতে পুরো মাসে যত মেম্বার হয় তাদের প্রত্যেকের জন্য ১৳ করে স্টারদের জন্য বরাদ্দ থাকে যা সকল স্টারদের মাঝে মাস শেষে ভাগ করে দেয়া হয়।)

>(৪) কোম্পানির জন্য তার নিজ জেলার এজেন্ট হয়েও সে ইনকাম করতে পারবে অর্থাৎ উদাহরণ সরূপ- আজকে ঢাকার মধ্যে থেকে ৫০ জন উক্ত কোম্পানির প্রডাক্ট অর্ডার করেছে এখন কোম্পানি সেই অর্ডার গুলো তার কাছে হস্তান্তর করে দিবে এখন তার দায়িত্ব হচ্ছে ওই কাস্টমারদের সাথে কন্টাক্ট করে তাদের কাছে যেভাবেই হোক কোম্পানির প্রডাক্ট পৌছিয়ে দিবে, আর প্রতিটা ডেলিভারি ডান করতে পারলে সেই এজেন্টকে একটা নির্দিষ্ট টাকা দেয়া হবে, যেমন ৫০৳ প্রতি অর্ডার ডান বা ডেলিভারি সম্পূর্ণ করার মাধ্যমে।
- বিঃদ্রঃ আরেকটা বিষয় হচ্ছে কোম্পানিতে যত প্রডাক্ট আছে ও আসবে তা হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও হালাল পন্য তবে সন্দেহ হচ্ছে মোবাইল ও টিভি সেলের ব্যাপারে তা কি জায়েয, নাকি নাজায়েয। যাইহোক ধরুন সে প্রডাক্ট গুলো কোম্পানি বাদ দিয়ে দিল এবং একমাত্র হালাল প্রডাক্ট নিয়ে ব্যাবসা করল।

- বিঃদ্রঃ তবে গ্রাহকের (আপলাইনের) সব সময় ও সর্বদা তার ডাওনলাইনকে বিভিন্ন বিষয়ে হেল্প, সাপোর্ট ও সহোযোগীতা ও সময় দিতে হয় এবং আপলাইন তার নিচের ২৫ লেভেল পর্যন্ত সকলকেই এভাবে তার নিজের সময়, শ্রম ও মেধা দিয়ে পরিশ্রম করতে হয় তা ছাড়া তার ইনকাম হয় না এবং এগুলো না করলে ধীরে ধীরে তার নিজের ইনকাম বন্ধ হয়ে যাবে।

★ যাইহোক এখন সর্বপোরি কথা হচ্ছে উপরোক্ত ০৪ পদ্ধতিতে কোন গ্রাহক যদি উক্ত কোম্পানি থেকে উপার্জন ও ইনকাম করে তা কি হালাল হবে? ৪ টি পদ্ধতিতেই হারাম নাকি এখানে আলাদা কোন ব্যাখ্যা আছে।

- আর উপরোক্ত কোন নিয়মে হালাল না হলে, কোম্পানি তার মার্কেটিং প্লান টাকে কিভাবে সংশোধন করলে হালাল হতে পারে, যেহুতু এখানে অনেক গ্রাহক অনেক দিন যাবত ইনকাম করছে। আর গ্রাহকের পূর্বের ইনকামকৃত টাকা যদি হালাল না হয়ে থাকে তাহলে তার করনীয় কি!

- দয়া করে উপরোক্ত বিষয়ে আমাদের মাঝে বিশ্লেষণ ও বর্ণনা করে দিলে সবাই উপকৃত হবো, ধন্যবাদ।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 



শরীয়তের বিধান হলো যেখানে কোনো কাজ ছাড়াই বিনিময় পাওয়া সেটা নাজায়েজ।  

স্টার্স ফেয়ার ২৫ (Starsfair25) এ নতুন গ্রাহক যে ব্যাক্তির রেফার কোড ইউজ করে গ্রাহক জয়েন হলো, ওই ব্যাক্তিকে কোম্পানি রেফার বোনাস দিবে ৫৳ এবং ওই ব্যাক্তিকে আবার যে জইন করিয়েছে এবং এমন করে তার উপরের ২৪ জন আপলাইন পাবে ৩,২,১ ইত্যাদি করে, প্রায় এক গ্রাহকের জইনের মাধ্যমে উপরের ২৫ জন সর্বমোট পাবে ১৯৳

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি জয়েন হওয়ার পর উদাহরণ স্বরুপ আপনার রেফার কোড ইউজ করে ৫ জন গ্রাহক জয়েন হলো।

এক্ষেত্রে আপনি পাবেন ৫ টাকা।
যে ৫ জন আপনার রেফার আইডি দিয়ে জয়েন হয়েছিলো,তাদের প্রত্যেকের রেফার আইডি দিয়ে যারা জয়েন হবে, সেখানে আপনি ৩ টাকা কমিশন পাবেন।
এর পরের ধাপে আপনি ২ টাকা পাবেন,পরবর্তী ধাপে আপনি ১ টাকা পাবেন। 

আপনি যে ৩ টাকা করে কমিশন পাবেন,তার পরবর্তীতে ২ টাকা করে কমিশন পাবেন,  এটা এমন এক বিনিময়, যার মোকাবেলায় আপনি কোনো শরীয়তে ধর্তব্য করার মতো কোনো কাজ করেননি। 
তাই এই কমিশন নাজায়েজ।
,
আপনি যে ৫ জনকে যুক্ত করেছেন,সেক্ষেত্রে যে আপনি ৫ টাকা করে প্রতি জন থেকে পেয়েছেন,এক্ষেত্রে আপনাকে যে যুক্ত করে নিয়েছে,সে পেয়েছে ৩ টাকা করে, তার উপরের জন পেয়েছে ২ টাকা করে,আবার তার উপরের জন পেয়েছে ১ টাকা করে,

সেটিও তাদের কাজ ছাড়াই বিনিময় হওয়ার কারনে নাজায়েজ । 
আর আপনার কারনেই যেহেতু তারা এই নাজায়েজ বিনিময় পেলো,তাই আপনার কাজটি নাজায়েজ কাজে সহযোগিতা হওয়ার কারনে অবৈধ।    
,
আর যেহেতু আপনি যখন সেখানে নিজে যুক্ত হয়েছেন,সেই ছুরতে এই ভাবেই (৫.৩.২ টাকা লাভের পদ্ধতিতে)  অন্যরা লাভ পেয়েছে,তাই অন্যায় ও নাজায়েজ ইনকামের সহযোগিতা করার কারনে আপনার যুক্ত হওয়াও নাজায়েজ হয়েছে। 
,

কুরআনুল কারীমের আয়াত-

لا تاكلوا اموالكم بينكم بالباطل

 এর ব্যাখ্যায় রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেছেন, أن يأكله بغير عوض (শর্তযুক্ত আকদে) বিনিময়হীন উপার্জনই হল বাতিল পন্থার উপার্জন। (আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/১৭২)

হযরত হাসান বসরীসহ অন্যান্য অনেক তাফসীরবিদও আয়াতটির একই ধরনের তাফসীর করেছেন (দ্রষ্টব্য: রূহুল মাআনী ২/৭০, ৫/১৫; তাফসীরুল মানার ৫/৪০)
.

شعب الإيمان (2/ 434):
" عَنْ سَعِيدِ بْنِ عُمَيْرٍ الْأَنْصَارِيِّ، قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ الْكَسْبِ أَطْيَبُ؟ قَالَ: " عَمَلُ الرَّجُلِ بِيَدِهِ، وَكُلُّ بَيْعٍ مَبْرُورٍ ".
সায়ীদ বিন উমায়ের আনছারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন- ‘কোন প্রকারের জীবিকা উত্তম?’ উত্তরে তিনি বললেন— নিজ হাতের কামাই এবং সৎ ব্যবসায়।
(মিশকাত ২৭৮৩)

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত প্রক্রিয়াটিকে ইসলাম অনুমোদন দেয়না।
এহেন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে,হালাল কোনো ইনকামে যুক্ত হতে পারেন।  

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
আসসালামুয়ালাইকুম হুজুর,
গ্রাহক যে ৪ টা পদ্ধতিতে ইনকাম করতে পারে তার >(১) সুরত টা আপনি ব্যাখ্যা করলেন ধন্যবাদ, কিন্তু বাকি >(২) >(৩) >(৪) তিনটা বিষয় কিন্তু ভিন্ন যেমন এজেন্ট বা ইত্যাদি এগুলো নিয়ে আলাদা ভাবে কোন কিছু জানালেন না। 
আমি আশা করছিলাম ২ দিন সময় অপেক্ষা করতে হলেও সমস্যা নেই কিন্তু আমি যেন আমার পুরো প্রশ্নের সম্পূর্ণ উত্তর টা পাই, জাযাকাল্লাহ। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...