আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
87 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (29 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। উস্তাজ আমার বাসা থেকে ঢাকার দূরত্ব ৫ ঘন্টার। ঢাকায় যাওয়ার জন্য যেসব ট্রেন রয়েছে সেগুলোর সময় এমনভাবে সেট করা যে ট্রেনে থাকাকালীন সালাতের ওয়াক্ত হয়ে যায় আবার ট্রেন থেকে নামতে নামতে সালাতের ওয়াক্ত চলে যায়। আমি যেহেতু একজন মেয়ে তাই ট্রেনে যে রুম রয়েছে সালাতের জন্য সেখানে সালাত আদায় করতে পারিনা। পরিবেশ থাকেনা সেখানে একদমই। সিটেই সালাত আদায় করতে হবে বসে বসে এছাড়া উপায় থাকেনা।
আবার যদি বাসে যাতায়াত করি সেক্ষেত্রে পথিমধ্যে কোন সালাতের ওয়াক্ত আসবেনা। বাস থেকে নেমে সালাত আদায় করা যাবে ইনশাআল্লাহ কিন্তু বাসে যাতায়াত করলে আমি খুবই অসুস্থ হয়ে যাই৷ এত বেশি মাথাব্যথা করে বলার মতোনা। ক্লান্ত ও হয়ে যাই।
প্রশ্ন হচ্ছে উপরে বর্ণিত অবস্থায়, আমি যদি বাসে না গিয়ে ট্রেনে যাতায়াত করি এবং সালাতের সময় বসে সালাত আদায় করে পরে তা দোহরিয়ে নেই তাহলে কি সেটা করা জায়েজ হবে? সালাতের হক্ব পূরণ করা হবে?


#তাশাহুদের পর দুরুদে ইব্রাহিম পড়াই কি বাধ্যতামূলক নাকি যেকোন ছোট বড় দুরুদ পড়া যাবে? আর দোয়া মাসূরা পড়াও কি বাধ্যতামূলক? নাকি না পড়ে সালাম ফিরানো যাবে? ফজরের সালাতে অনেক সময় উঠতে দেরি করায় খুবই কম সময় বাকি থাকে। তাই প্রশ্ন গুলো করা। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো চলন্ত যানবাহনে নামাযের সময় হয়ে গেলে দাঁড়িয়ে নামায পড়ার সুযোগ থাকলে দাঁড়িয়ে নামায পড়ে নিবে। 

এই নামায পরে আর পরবর্তীতে পুনরায় পড়তে হবেনা।
দাঁড়ানোর সুযোগ না থাকলে বসে ইশারা করে নামায পড়ে নিবে। 
পরবর্তীতে এই নামাজ পুনরায় দোহরিয়ে নিবে।   

কিবলামুখি হয়ে নামাজ পড়তে হবে।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ     

قَدْ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاءِ ۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا ۚ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ۚ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّوا وُجُوهَكُمْ شَطْرَهُ ۗ وَإِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَيَعْلَمُونَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ [٢:١٤٤] 

নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব, তারা অবশ্যই জানে যে, এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম সম্পর্কে যা তারা করে। {বাকারা-১৪৪}

যদি ট্রে কিবলামুখ থেকে অন্যদিকে ঘুরে যায় তবে নামাযে থাকা অবস্থায় কিবলামুখি ঘুরে যাবে। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে যেদিকে মুখ হয়, সেদিকে ফিরেই নামায শেষ করবে। কিন্তু ইচ্ছে থাকা সত্বেও কিবলামুখি হয়ে নামায আদায় করতে না পারলে এই নামায পরে কাযা করতে হবে।  কিবলামুখি ফিরে নামায আদায় করতে পারলে পরে তা আদায় করার কোন প্রয়োজন নেই।
,
আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতটি জায়েজ আছে।
এতে সালাতের হক্ব পূরণ করা হবে।

(০২)
নামাজের বৈঠকে দরুদ শরীফ, দোয়ায়ে মাছুরা পাঠ করা সুন্নাত।
যদি কেহ পাঠ না করে,তবুও নামাজ হয়ে যাবে।
তবে সুন্নাতের খেলাফ হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ، حَدَّثَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، حَدَّثَنِي أَبُو هَانِئٍ الْخَوْلاَنِيُّ، أَنَّ عَمْرَو بْنَ مَالِكٍ الْجَنْبِيَّ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ فَضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ، يَقُولُ سَمِعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً يَدْعُو فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " عَجِلَ هَذَا " . ثُمَّ دَعَاهُ فَقَالَ لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ " إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِتَحْمِيدِ اللَّهِ وَالثَّنَاءِ عَلَيْهِ ثُمَّ لِيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ لِيَدْعُ بَعْدُ بِمَا شَاءَ "

ফাযালাহ ইবনু উবাইদ (রাযিঃ) বলেন, এক লোককে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নামাযের মাঝে দু'আ করতে শুনলেন, কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর সে দরূদ পড়েনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ ব্যক্তিটি তাড়াহুড়া করেছে। তারপর তিনি তাকে ডাকলেন এবং তাকে বা অপর কাউকে বললেনঃ তোমাদের কেউ নামায আদায় করলে সে যেন আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও তার গুণগান করে, তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ পাঠ করে, তারপর তার মনের কামনা অনুযায়ী দুআ করে।
(তিরমিজি ৩৪৭৭)

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ زِرٍّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنْتُ أُصَلِّي وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ مَعَهُ فَلَمَّا جَلَسْتُ بَدَأْتُ بِالثَّنَاءِ عَلَى اللَّهِ ثُمَّ الصَّلاَةِ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ دَعَوْتُ لِنَفْسِي فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " سَلْ تُعْطَهْ سَلْ تُعْطَهْ "

আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি নামায আদায় করছিলাম এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আবু বাকর এবং উমর (রাঃ)-ও উপস্থিত ছিলেন। আমি (শেষ বৈঠকে) বসলাম, প্রথমে আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা করলাম, তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি সালাম নিবেদন করলাম, তারপর নিজের জন্য দু'আ করলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি প্রার্থনা করতে থাক তোমাকে দেয়া হবে, তুমি প্রার্থনা করতে থাক তোমাকে দেয়া হবে।
(তিরমিজি ৫৯৩)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন ,
তাশাহুদের পর দুরুদে ইব্রাহিমী পড়া বাধ্যতামূলক নয়।
 হাদীসে বর্ণীত যেকোনো ছোট বড় দুরুদ পড়া যাবে।
এটি যেহেতু সুন্নাত,তাই কোনো দরুদ না পড়লেও নামাজ হয়ে যাবে।
তবে অভ্যাসে পরিণত করা যাবেনা।   

দোয়া মাসূরা পড়াও বাধ্যতামূলক নয়। বরং সুন্নাত। না পড়ে সালাম ফিরানো যাবে।

তবে অভ্যাসে পরিণত করা যাবেনা।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...