আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
157 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
আসসালামুআলাইকুম আমার কিছুদিন আগে ইসলাম সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যাকারী একজন লোকের সাথে কথা হয় তিনি বলেন আখিরাত জীবন মিথ্যা মৃত্যুর পর যে আজাব হয় তুমি কি তা দেখেছ ?তখন থেকেই আমার মনে বিশ্বাস কেমন হয়ে গেছে উনি আমাকে ইসলাম সম্পর্কে অনেক ভুল বুঝান এখন আমার ইমাণ নষ্ট হ ওয়ার উপক্রম। আমার মনে হয়   মরে গেলে লাশ এমনিতেই পচে যায় । আবার ৩৯ দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করার একটি ভিডিও ফুটেজ আমি ইউটিউব এ দেখি যেখানে কবর যেভাবে দেয়া হয় তেমনি আছে কিন্তু লাশটি অধ গলিত । আমার প্রশ্ন এতদিন পর কবরটি কেন ভাঙল না আমরা তো জানি কবরের দুই পাশে মাটির চাপা দেয়।এরকম বিব্রতকর প্রশ্ন আমার মাথায় আসছে যা আগে কোনদিন আসে নি । এমতাবস্থায় আমি ইমান নিয়ে সংশয় আছি , নামাজে ও তৃপ্তি পাচ্ছি না ।এ থেকে বাঁচার উপায় জানতে চাই আমি ইমান নিয়ে বাঁচতে চাই

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। 

 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ : " الْمَيِّتُ تَحْضُرُهُ الْمَلاَئِكَةُ فَإِذَا كَانَ الرَّجُلُ صَالِحًا قَالُوا : اخْرُجِي أَيَّتُهَا النَّفْسُ الطَّيِّبَةُ كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الطَّيِّبِ اخْرُجِي حَمِيدَةً وَأَبْشِرِي بِرَوْحٍ وَرَيْحَانٍ وَرَبٍّ غَيْرِ غَضْبَانَ فَلاَ يَزَالُ يُقَالُ لَهَا ذَلِكَ حَتَّى تَخْرُجَ ثُمَّ يُعْرَجُ بِهَا إِلَى السَّمَاءِ فَيُفْتَحُ لَهَا فَيُقَالُ : مَنْ هَذَا فَيَقُولُونَ : فُلاَنٌ . فَيُقَالُ : مَرْحَبًا بِالنَّفْسِ الطَّيِّبَةِ، كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الطَّيِّبِ ادْخُلِي حَمِيدَةً، وَأَبْشِرِي بِرَوْحٍ وَرَيْحَانٍ وَرَبٍّ غَيْرِ غَضْبَانَ . فَلاَ يَزَالُ يُقَالُ لَهَا ذَلِكَ حَتَّى يُنْتَهَى بِهَا إِلَى السَّمَاءِ الَّتِي فِيهَا اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَإِذَا كَانَ الرَّجُلُ السُّوءُ قَالَ اخْرُجِي أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْخَبِيثَةُ كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الْخَبِيثِ اخْرُجِي ذَمِيمَةً وَأَبْشِرِي بِحَمِيمٍ وَغَسَّاقٍ . وَآخَرَ مِنْ شَكْلِهِ أَزْوَاجٌ . فَلاَ يَزَالُ يُقَالُ لَهَا ذَلِكَ حَتَّى تَخْرُجَ ثُمَّ يُعْرَجُ بِهَا إِلَى السَّمَاءِ فَلاَ يُفْتَحُ لَهَا فَيُقَالُ : مَنْ هَذَا فَيُقَالُ : فُلاَنٌ . فَيُقَالُ : لاَ مَرْحَبًا بِالنَّفْسِ الْخَبِيثَةِ كَانَتْ فِي الْجَسَدِ الْخَبِيثِ ارْجِعِي ذَمِيمَةً فَإِنَّهَا لاَ تُفْتَحُ لَكِ أَبْوَابُ السَّمَاءِ فَيُرْسَلُ بِهَا مِنَ السَّمَاءِ ثُمَّ تَصِيرُ إِلَى الْقَبْرِ "

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ মৃত্যুর সময় মানুষের নিকট ফেরেশতা আগমন করেন। অতএব মুমূর্ষু ব্যক্তি উত্তম লোক হলে তারা বলেন, হে পবিত্র আত্মা! পবিত্র দেহ থেকে প্রশংসিত অবস্থায় বের হয়ে এসো এবং আল্লাহর রহমত ও সুঘ্রাণের সুসংবাদ গ্রহণ করো। তোমার রব তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট নন। রূহ বের হয়ে আসা পর্যন্ত তারা এভাবে আহবান জানাতে থাকে। অতঃপর রূহ বের হয়ে আসলে তারা তা নিয়ে আসমানে আরোহণ করেন। এ রূহের জন্য আসমানের দরজা খুলে দেয়া হয়।

জিজ্ঞেস করা হয়, সে কে? ফেরেশতাগণ বলেন, অমুক ব্যক্তি। তখন বলা হয়, পবিত্র আত্মাকে স্বাগতম, যা ছিল পবিত্র দেহে। প্রশংসিত অবস্থায় তুমি প্রবেশ করো, আল্লাহর রহমত ও সুঘ্রাণের সুসংবাদ গ্রহণ করো। তোমার রব তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট নন। তাকে অবিরতভাবে এ সংবাদ প্রদান করা হয়, যাবত না তা মহামহিম আল্লাহ যে আসমানে অবস্থান করেন সেখানে পৌঁছে যায়। মুমূর্ষু ব্যক্তি পাপাচারী হলে ফেরেশতা বলেন, হে নিকৃষ্ট দেহের নিকৃষ্ট আত্মা! নিন্দিত অবস্থায় বের হয়ে আয় এবং উত্তপ্ত গরম পানি ও রক্ত-পুঁজের দুঃসংবাদ গ্রহণ কর এবং অনুরূপ বহু বিষাক্ত বস্ত্তর। রূহ বের হয়ে আসা পর্যন্ত তারা এভাবে আহবান জানাতে থাকেন। অতঃপর তারা রূহসহ উর্দ্ধাকাশে আরোহণ করেন। কিন্তু তার জন্য দরজা খোলা হয় না।

জিজ্ঞেস করা হয়, এ ব্যক্তি কে? বলা হয়, অমুক। তখন বলা হয়, নিকৃষ্ট দেহের নিকৃষ্ট আত্মার জন্য নাই কোন সাদর সম্ভাষণ। তুই নিন্দিত অবস্থায় ফিরে যা। কারণ তোর জন্য আকাশের দ্বারসমূহ খোলা হবে না। অতঃপর একে আসমান থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয় এবং তা কবরে ফিরে আসে।(সুনানু ইবনি মা’জা-৪২৬২)

একটি মাসয়ালা হলোঃ-
মৃত্যুর পর সওয়াল-জওয়াব,আযাব হওয়ার জন্য লাশ মাটিতে দাফন করা এবং লাশ অক্ষত থাকা জরুরি নয়; বরং এ সময়ে বান্দার দেহ যেখানে যেভাবে থাকুক আল্লাহ তাঁর কুদরতে ঐ দেহের সাথে রূহের সম্পর্ক করে দিবেন এবং সওয়াল-জওয়াব ও শান্তি বা শাস্তি সব কিছুই হবে। 

লাশ মাটিতে দাফন করা হোক বা না হোক এবং লাশ অক্ষত থাকুক বা না থাকুক এর সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। 

যেমন হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান এবং হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা.সহ অন্যান্য সাহাবী থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের আগে এক ব্যক্তি ছিল, যে মৃত্যুর সময় তার ছেলেদেরকে অসিয়ত করেছে যে, আমি তো আল্লাহর নিকট কোনো ভালো আমল জমা রাখিনি। জেনে রাখ,আমি যখন মৃত্যুবরণ করব তোমরা আমার দেহকে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে প্রবল বাতাসের দিন সমুদ্রে উড়িয়ে দিবে। অতপর ছেলেরা অসিয়তমতে মৃত্যুর পর তার দেহকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে প্রবল বাতাসের দিন সমুদ্রে উড়িয়ে দিয়েছিল। পরে আল্লাহ তাআলা ঐ ছাইগুলো জমা করে তাকে জীবিত করে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাকে এ কাজে কিসে প্ররোচিত করল? সে বলল, একমাত্র আপনার ভয়ই আমাকে এ কাজ করতে বাধ্য করেছে। তখন আল্লাহ তাআলা তাকে মাফ করে দিলেন। [সহীহ বুখারী,হাদীস ৬৪৮০, ৬৪৮১; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৭৫৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২৩৩৫৩; কিতাবুর রূহ ৭৪; মিরকাতুল মাফাতীহ ১/৩১০] 


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মৃত্যুর পরবর্তী জীবনকে আলমে বারযাখ বলা হয়।
নেককার বান্দা বান্দীদের রুহ ইল্লিয়্যিনে যায়,বদকার বান্দা দান্দীদের রুহ সিজজিনে যায়।
মূলত আযাব সেখানেই হয়,তবে কবরের যেই দেহ থাকে,তার সাথে একটি কানেকশন থাকে।

এটি মনে করার সুযোগ নেই যে কবরে মাটি তো অক্ষত আছে,তাই চাপ দিচ্ছেনা কেনো. বা লাশ পঁচে গেলো কেনো।
এগুলো বলার সুযোগ নেই।
কেননা মূল ফলাফল  ইল্লিয়্যিন আর সিজজিনে হচ্ছে।
 
আর জীবিত ব্যাক্তিদের এ সমস্ত আযাব শ্রবণ ও দেখার শক্তি আল্লাহ তায়ালা দেননি,সুতরাং দেখার সুযোগও নেই।  
এটি অন্য জগতের বিষয়, সুতরাং দুনিয়ার জগতে থেকে এগুলো দেখার অবকাশ নেই।   

দেখতে পাচ্ছিনা,বিধায় আযাব হচ্ছেনা,এমন নহে।
আমার শক্তি না থাকার কারনে আমি দেখতে পাচ্ছিনা,তাই বলে আযাবই হচ্ছেনা,এটি বলার সুযোগ নেই।
এটিই ঈমান।
দেখতে পারলে অদৃশ্যের উপর ঈমান হলো কিভাবে?
,
দুনিয়ায় এমন অনেক বিষয়ই আছে,যেগুলো আমরা নে দেখেই বিশ্বাস করি।
সেখানে কেউ এটি বলেনা যে, চোখে দেখিনা,তাই বিশ্বাসও করিনা।
এমনট কেহই বলেনা।

তবে মাঝে মাঝে আল্লাহ তায়ালা অপার কুদরতে কিছু বিষয় বান্দাদের কবরের অবস্থা দেখান,সেটি আলাদা বিষয়।     

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ঈমান নিয়ে বাঁচার জন্য যাবতীয় যুক্তি তর্ক বাদ দিয়ে আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ সাঃ এর আনীত বিষয়াবলির উপর ঈমান আনতে হবে।
এই জন্য প্রয়োজনে আপনি দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত হোন।
হক্কানী শায়েখদের কাছেও যেতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 158 views
0 votes
1 answer 340 views
...