আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
345 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (0 points)
১)জামায়াতে নামাজে রুকু/সিজদাহ তে যাওয়ার সময় ইমাম 'আল্লাহু আকবার' পুরাটা বলা শেষ করার পর রুকু/সিজদাহ তে যেতে হবে?নাকি ইমাম তাকবির বলা শুরু করলেই করা যাবে?

যদি পুরাটা বলা শেষ হলে রুকু করতে হয়,তাহলে কেও যদি ইমাম পুরা তাকবির দেওয়ার আগেই ইমামের সাথে রুকুতে চলে যায় তার নামায কী হবে না?

২)জামাতে নামাযের সময় প্রথমে নামাজ শুরুর তাকবির"তাকবিরে তাহরিমা" কী মুক্তাদির জন্য জোরে দেওয়া লাগবে,মানে এমন ভাবে যেনো মুকতাদির নিজের টা নিজ কানে শুনতে পারে?নাকি মনে মনে আস্তে দিলেই হবে?

1 Answer

0 votes
by (599,310 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
ইমাম সাহেব রু'কু কিংবা সেজদাতে যাওয়া এবং কওমাহ তথা রু'কু সেজদা থেকে উঠে দাড়ানোর সময় সাথে সাথেই তাকবীর বলবেন।অর্থাৎ যখন রু'কুতে যাওয়ার জন্য মাথা নুয়াইতে শুরু করবেন,তখনই তাকবীর শুরু করে দিবেন।এবং যখন রু'কুতে গিয়ে পিঠ সোজা করবেন,তখন তাকবীরকে শেষ করবেন।এই ভাবে অন্যন্য রুকুনগুলো আদায় করবেন।

ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন,
(قوله مع الانحطاط) أفاد أن السنة كون ابتداء التكبير عند الخرور وانتهائه عند استواء الظهر، وقيل إنه يكبر قائما، والأول هو الصحيح كما في المضمرات وتمامه في القهستاني
সুন্নত হলো,নামাযী ব্যক্তি(রুকুতে যাওয়ার প্রক্কালে)যখন মাথা নুয়াইতে শুরু করবে, তখন তাকবীর বলা শুরু করবে, আবার যখন রু'কুতে গিয়ে পিঠ সোজা করবে,তখন তাকবীর শেষ করবে।কেউ কেউ বলেন,দাড়ানো অবস্থায় তাকবীর শেষ করে তারপর রু'কু করবে।প্রথম মতটাই বিশুদ্ধ( মুযমামারাত)(রদ্দুল মুহতার-১/৪৯৩)


মুক্তাদি ইমামের অনুসরণ কিভাবে এবং কোন পদ্ধতিতে করবে?
والحاصل أن المتابعة في ذاتها ثلاثة أنواع: مقارنة لفعل الإمام مثل أن يقارن إحرامه لإحرام إمامه وركوعه لركوعه وسلامه لسلامه، ويدخل فيها ما لو ركع قبل إمامه ودام حتى أدركه إمامه فيه. ومعاقبة لابتداء فعل إمامه مع المشاركة في باقيه. ومتراخية عنه، فمطلق المتابعة الشامل لهذه الأنواع الثلاثة يكون فرضا في الفرض، وواجبا في الواجب، وسنة في السنة عند عدم المعارض أو عدم لزوم المخالفة كما قدمناه.
মোটকথাঃ ইমাম সাহেবের অনুসরণ তিনভাবে হতে পারে।(১)ইমাম সাহেবের সাথে সাথেই রুকুন পরিবর্তন করা।(২) ইমাম সাহেবের যৎসামান্য পর রুকুন পরিবর্তন করা।(৩)ইমাম সাহেবের এক রুকুন থেকে পরিপূর্ণরূপে অন্য রুকুনে চলে যাওয়ার পর মুক্তাদির রুকুন পরিবর্তন করা।এই তিন পদ্ধতির সবকটিরই অনুমোদন রয়েছে।রুকুন ফরয হলে ইমাম সাহেবের অনুসরণ করে রুকুন পরিবর্তন করা ফরয।ওয়াজিব হলে ওয়াজিব।এবং সুন্নত হলে সুন্নত।তবে যে সমস্ত স্থানে ইমামের অনুসরণ না করার কথা বর্ণিত রয়েছে,সে গুলো ব্যতীত এ বিধান প্রযোজ্য হবে। (রদ্দুল মুহতার-১/৪৭১)

ইমাম সাহেবের পূর্বে রুকুন পরিবর্তন না করাই মূল বিধান।এ সম্পর্কে হাদীসে কঠোর হুশিয়ারী উচ্ছারিত হয়েছে,হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " أَمَا يَخْشَى أَحَدُكُمْ - أَوْ: لاَ يَخْشَى أَحَدُكُمْ - إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ قَبْلَ الإِمَامِ، أَنْ يَجْعَلَ اللَّهُ رَأْسَهُ رَأْسَ حِمَارٍ، أَوْ يَجْعَلَ اللَّهُ صُورَتَهُ صُورَةَ حِمَارٍ "
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের পূর্বে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তখন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তার মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, তার আকৃতি গাধার আকৃতি করে দেবেন। 
(সহীহ বোখারী-৬৯১,মুসলিম-৪২৭,মুসনাদে আহমাদ- ১০৫৫১)

ইমাম সাহেবের রুকুন পরিবর্তনের পূর্বে  মুক্তাদি যদি রুকুনকে পরিবর্তন করে ফেলে,এক্ষেত্রে নামায হবে কি না? প্রতিউত্তরে বলা যায় যে,এক্ষেত্রে ব্যখ্যা হল,অগ্রগামী মুক্তাদিকে যদি ইমাম সাহেব ঐ রুকুনে গিয়ে পেয়ে যান,তাহলে মুক্তাদির নামায বিশুদ্ধ হয়ে যাবে।কিন্ত যদি ইমাম সাহেবর উক্ত রুকুনে যাওয়ার পূর্বেই মুক্তাদি সেই রুকুনকে সমাপ্ত করে ফেলেন,তাহলে মুক্তাদির ইকতেদা বিশুদ্ধ থাকবে না, তথা নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।

আল্লামা আলাউদ্দিন হাসক্বাফী রাহ, লিখেন,
(وَلَوْ رَكَعَ) قَبْلَ الْإِمَامِ (فَلَحِقَهُ إمَامُهُ فِيهِ صَحَّ) رُكُوعُهُ، وَكُرِهَ تَحْرِيمًا إنْ قَرَأَ الْإِمَامُ قَدْرَ الْفَرْضِ (وَإِلَّا لَا) يُجْزِيهِ؛
যদি কেউ ইমাম সাহেবের পূর্বে রুকুতে চলে যায়, অতঃপর ইমাম সাহেব সেই ব্যক্তিকে রুকুতে গিয়ে পেয়ে যান,তাহলে মুক্তাদির ইক্তেদা বিশুদ্ধ হবে যদি ইমাম সাহেব ফরয পরিমাণ ক্বেরাতকে পড়ে নিয়ে থাকেন।হ্যা অবশ্যই এমনটা করা মাকরুহে তাহরীমি হবে।কিন্তু যদি ইমাম সাহেব কর্তৃক ফরয ক্বেরাত পড়ার মুক্তাদি রু'কুতে চলে যান,তাহলে মুক্তাদির ইক্তেদা বিশুদ্ধ থাকবে না।সুতরাং নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।(আদ্দুর্রুল মুখতার-২/৬১)
আরো জানুন-(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৬/৬৩৯)

  • (২)জ্বী মুক্তাদিকেও তাকবীরে তাহরিমা নিম্নস্বরে দিতে হবে।এটা ফরয।নতুবা নামাযই হবে না।জানুন- 2570


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 123 views
...