বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
ইমাম সাহেব রু'কু কিংবা সেজদাতে যাওয়া এবং কওমাহ তথা রু'কু সেজদা থেকে উঠে দাড়ানোর সময় সাথে সাথেই তাকবীর বলবেন।অর্থাৎ যখন রু'কুতে যাওয়ার জন্য মাথা নুয়াইতে শুরু করবেন,তখনই তাকবীর শুরু করে দিবেন।এবং যখন রু'কুতে গিয়ে পিঠ সোজা করবেন,তখন তাকবীরকে শেষ করবেন।এই ভাবে অন্যন্য রুকুনগুলো আদায় করবেন।
ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন,
(قوله مع الانحطاط) أفاد أن السنة كون ابتداء التكبير عند الخرور وانتهائه عند استواء الظهر، وقيل إنه يكبر قائما، والأول هو الصحيح كما في المضمرات وتمامه في القهستاني
সুন্নত হলো,নামাযী ব্যক্তি(রুকুতে যাওয়ার প্রক্কালে)যখন মাথা নুয়াইতে শুরু করবে, তখন তাকবীর বলা শুরু করবে, আবার যখন রু'কুতে গিয়ে পিঠ সোজা করবে,তখন তাকবীর শেষ করবে।কেউ কেউ বলেন,দাড়ানো অবস্থায় তাকবীর শেষ করে তারপর রু'কু করবে।প্রথম মতটাই বিশুদ্ধ( মুযমামারাত)(রদ্দুল মুহতার-১/৪৯৩)
মুক্তাদি ইমামের অনুসরণ কিভাবে এবং কোন পদ্ধতিতে করবে?
والحاصل أن المتابعة في ذاتها ثلاثة أنواع: مقارنة لفعل الإمام مثل أن يقارن إحرامه لإحرام إمامه وركوعه لركوعه وسلامه لسلامه، ويدخل فيها ما لو ركع قبل إمامه ودام حتى أدركه إمامه فيه. ومعاقبة لابتداء فعل إمامه مع المشاركة في باقيه. ومتراخية عنه، فمطلق المتابعة الشامل لهذه الأنواع الثلاثة يكون فرضا في الفرض، وواجبا في الواجب، وسنة في السنة عند عدم المعارض أو عدم لزوم المخالفة كما قدمناه.
মোটকথাঃ ইমাম সাহেবের অনুসরণ তিনভাবে হতে পারে।(১)ইমাম সাহেবের সাথে সাথেই রুকুন পরিবর্তন করা।(২) ইমাম সাহেবের যৎসামান্য পর রুকুন পরিবর্তন করা।(৩)ইমাম সাহেবের এক রুকুন থেকে পরিপূর্ণরূপে অন্য রুকুনে চলে যাওয়ার পর মুক্তাদির রুকুন পরিবর্তন করা।এই তিন পদ্ধতির সবকটিরই অনুমোদন রয়েছে।রুকুন ফরয হলে ইমাম সাহেবের অনুসরণ করে রুকুন পরিবর্তন করা ফরয।ওয়াজিব হলে ওয়াজিব।এবং সুন্নত হলে সুন্নত।তবে যে সমস্ত স্থানে ইমামের অনুসরণ না করার কথা বর্ণিত রয়েছে,সে গুলো ব্যতীত এ বিধান প্রযোজ্য হবে। (রদ্দুল মুহতার-১/৪৭১)
ইমাম সাহেবের পূর্বে রুকুন পরিবর্তন না করাই মূল বিধান।এ সম্পর্কে হাদীসে কঠোর হুশিয়ারী উচ্ছারিত হয়েছে,হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " أَمَا يَخْشَى أَحَدُكُمْ - أَوْ: لاَ يَخْشَى أَحَدُكُمْ - إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ قَبْلَ الإِمَامِ، أَنْ يَجْعَلَ اللَّهُ رَأْسَهُ رَأْسَ حِمَارٍ، أَوْ يَجْعَلَ اللَّهُ صُورَتَهُ صُورَةَ حِمَارٍ "
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের পূর্বে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তখন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তার মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, তার আকৃতি গাধার আকৃতি করে দেবেন।
(সহীহ বোখারী-৬৯১,মুসলিম-৪২৭,মুসনাদে আহমাদ- ১০৫৫১)
ইমাম সাহেবের রুকুন পরিবর্তনের পূর্বে মুক্তাদি যদি রুকুনকে পরিবর্তন করে ফেলে,এক্ষেত্রে নামায হবে কি না? প্রতিউত্তরে বলা যায় যে,এক্ষেত্রে ব্যখ্যা হল,অগ্রগামী মুক্তাদিকে যদি ইমাম সাহেব ঐ রুকুনে গিয়ে পেয়ে যান,তাহলে মুক্তাদির নামায বিশুদ্ধ হয়ে যাবে।কিন্ত যদি ইমাম সাহেবর উক্ত রুকুনে যাওয়ার পূর্বেই মুক্তাদি সেই রুকুনকে সমাপ্ত করে ফেলেন,তাহলে মুক্তাদির ইকতেদা বিশুদ্ধ থাকবে না, তথা নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।
আল্লামা আলাউদ্দিন হাসক্বাফী রাহ, লিখেন,
(وَلَوْ رَكَعَ) قَبْلَ الْإِمَامِ (فَلَحِقَهُ إمَامُهُ فِيهِ صَحَّ) رُكُوعُهُ، وَكُرِهَ تَحْرِيمًا إنْ قَرَأَ الْإِمَامُ قَدْرَ الْفَرْضِ (وَإِلَّا لَا) يُجْزِيهِ؛
যদি কেউ ইমাম সাহেবের পূর্বে রুকুতে চলে যায়, অতঃপর ইমাম সাহেব সেই ব্যক্তিকে রুকুতে গিয়ে পেয়ে যান,তাহলে মুক্তাদির ইক্তেদা বিশুদ্ধ হবে যদি ইমাম সাহেব ফরয পরিমাণ ক্বেরাতকে পড়ে নিয়ে থাকেন।হ্যা অবশ্যই এমনটা করা মাকরুহে তাহরীমি হবে।কিন্তু যদি ইমাম সাহেব কর্তৃক ফরয ক্বেরাত পড়ার মুক্তাদি রু'কুতে চলে যান,তাহলে মুক্তাদির ইক্তেদা বিশুদ্ধ থাকবে না।সুতরাং নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।(আদ্দুর্রুল মুখতার-২/৬১)
আরো জানুন-(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৬/৬৩৯)
- (২)জ্বী মুক্তাদিকেও তাকবীরে তাহরিমা নিম্নস্বরে দিতে হবে।এটা ফরয।নতুবা নামাযই হবে না।জানুন- 2570