আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,023 views
in সালাত(Prayer) by (22 points)
closed by
আসরের পরে সূর্য বিবর্ণ হওয়ার আগে কাযা নামায পড়া যাবে কি সহিহ ভাবে? নাকি মাকরুহ হবে

ফজরের সময়ে তো ফরযের আগে  সুন্নাত দুই রাকাত বাদেও সময় পেলে কাযা নামায পড়া যায়। এইটা কি সহিহ নাকি মাকরুহ?
ফজরের ফরযের পরে কাযা নামায পড়া যাবে ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগে(মানে সূর্য উদয়ের আগে)? এইটা কি সহিহ না মাকরুহ হবে?
জুমার নামায যদি কেউ না পরে তাহলে সে যোহরের ওয়াক্তের সাথে সাথেই কি নামায পড়তে পারবে নাকি জুমা শেষ হওয়ার পরে পড়বে?
closed

1 Answer

+1 vote
by (671,200 points)
selected by
 
Best answer
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রথমেই কিছু হাদীস লক্ষ্য করিঃ
 
عَنْ حَفْصَةَ قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ لاَ يُصَلِّى إِلاَّ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ وفى رواية إلا ركعتي الفجر

অনুবাদ-হযরত হাফসা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ফজর উদিত হবার পর ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত ছাড়া অন্য কোন নামায পড়তেন না।

{সহীহ মুসলিম হাদীস নং-১৭১১,সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-১৫৮৭,মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪২২৫,সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৪২২৭,সুনানে বায়হাকী,হাদীস নং-৯৭৯,আল মু’জামুল কাবীর হাদীস নং-৩৮৫}

فى صحيح البخارى– أبا سعيد الخدري يقول : سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول لا صلاة بعد الصبح حتى ترتفع الشمس ولا صلاة بعد العصر حتى تغيب الشمس ( صحيح البخارى- كتاب مواقيت الصلاة، باب لا يتحرى الصلاة قبل غروب الشمس، رقم-1139) 

অনুবাদ-হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ বলেন-আমি নবীজি সাঃ কে বলতে শুনেছি যে, ফজরের নামাযের পর সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত কোন নামায নেই, এবং আসরের পর সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত কোন নামায নেই। (সহীহ বুখারী-১/৮২, হাদীস নং-১১৩৯)

وفى صحيح المسلم- قال عمرو بن عبسة السلمى ………… فقلت يا نبى الله……أخبرنى عن الصلاة قال « صل صلاة الصبح ثم أقصر عن الصلاة حتى تطلع الشمس حتى ترتفع فإنها تطلع حين تطلع بين قرنى شيطان وحينئذ يسجد لها الكفار (صحيح مسلم- صلاة المسافربن، باب إسلام عمرو بن عبسة،رقم-1967)

অনুবাদ-আমর বিন আবাসা আস সুলামী রাঃ বলেন-আমি বললাম-হে আল্লাহর নবী! আপনি আমাকে নামায সম্পর্কে শিক্ষা দিন, রাসুলুল্লাহ সাঃ বললেন-ফজরের নামায আদায় করবে। তারপর সূর্য পূর্বাকাশে উঁচু হওয়া পর্যন্ত নামায পড়া থেকে বিরত থাকবে। কেননা সূর্য শয়তানের দুই শিংয়ের মধ্যখানে উদিত হয়, এবং সে সময় কাফেররা সূর্যকে সিজদা করে। (সহীহ মুসলিম-১/২৭৬, হাদীস নং-১৯৬৭)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
তিন ওয়াক্ত ব্যাতিত সব সময়েই কাজা নামাজ আদায় করা জায়েজ আছে। 
তবে আছরের নামাজের পর কাজা নামাজ আদায় করলে মসজিদ বা এমন জায়গায় আদায় করবেনা,যেখানে অন্য কেহ আপনার কাজা আদায় করার বিষয়টি জানতে পারে।
কেননা এটি প্রকাশ করা গুনাহ।

وینبغي أن لا یطلع غیرہ علی قضائہ؛ لأن التأخیر معصیة فلا یظھرھا (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الصلاة، باب قضاء الفوائت، ۲: ۵۳۹، ط: مکتبة زکریا دیوبند) ، قولہ: ”وینبغي الخ “:تقدم في باب الأذان أنہ یکرہ قضاء الفائتة فی المسجد وعللہ الشارح بما ھنا من أن التأخیر معصیة فلا یظھرھا و ظاھرہ أن الممنوع ھو القضاء مع الاطلاع علیہ سواء کان فی المسجد أو غیرہ، قلت: والظاھر أن ینبغي ھنا الوجوب وأن الکراھة تحریمیة الخ (رد المحتار) ، وانظر الدر والرد (۲: ۵۸، ۵۹) والفتاوی الرحیمیة في واقعات السادة الحنفیة (ص ۸، الف، ب، مخطوطة) ۔

সারমর্মঃ উচিত হলো নিজের কাজা নামাজের উপর অন্য কেহ যেনো অবগত না হয়।
কেননা দেড়ি করা গুনাহ,সুতরাং সেটি প্রকাশ করা যাবেনা।    

وجمیع أوقات العمر وقت القضاء إلا الثلاثة المنھیة (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الصلاة، باب قضاء الفوائت، ۲:۵۲۴، ط: مکتبة زکریا دیوبند) ، قولہ:”إلا الثلاثة المنھیة“:وھي الطلوع والاستواء والغروب، ح (رد المحتار) ، والنظر الدر والرد (کتاب الصلاة، ۲: ۳۰-۳۲، ۳۴، ۳۷) أیضاً۔
তিন নিষিদ্ধ ওয়াক্ত ব্যাতিত সর্বদায় কাজা নামাজ পড়া যাবে।

উকবা বিন আমের জুহানী রাযি. বলেন,

ثَلاثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ أَوْ أَنْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا : حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ الشَّمْسُ وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ

তিনটি সময়ে রাসুল ﷺ আমাদেরকে নামাজ পড়তে এবং মৃতের দাফন করতে নিষেধ করতেন। সূর্য উদয়ের সময়; যতোক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়। সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময় থেকে নিয়ে তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত। যখন সূর্য অস্ত যায়। (সহীহ মুসলিম ১৩৭৩)
,
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 146837 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।
,
(০১)
আসরের পরে সূর্য বিবর্ণ হওয়ার আগে কাযা নামায পড়া যাবে।
(০২)
ফজরের সময়ে তো ফরযের আগে  সুন্নাত দুই রাকাত বাদেও সময় পেলে কাযা নামায পড়া জায়েজ আছে।
(০৩)
 ফজরের ফরযের পরে কাযা নামায পড়া  ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগে(মানে সূর্য উদয়ের আগে)
এটি সম্পুর্ন ভাবে নিষেধ।  

(০৪)
যে সমস্ত ব্যাক্তির উপর আসলেই জুম্মার নামাজ ওয়াজিব,কিন্তু কোনো কারন বশত তাকে জোহর পড়তে হচ্ছে,তাহলে মুস্তাহাব হলো জুম্মার ইমামের নামাজ থেকে ফারেগ হওয়ার সে জোহর নামাজ পড়বে।
(কিতাবুল ফাতওয়া ৩/৩৮)

ویستحب للمریض والمسافر وأھل السجن تأخیر الظہر إلی فراغ الإمام من الجمعۃ ‘
 الفتاوی الھندیۃ : ۱/۱۴۸۔
সারমর্মঃ অসুস্থ ব্যাক্তি,মুসাফির, কারাগারের কয়েদীদের জন্য ইমামের জুমআর নামাজ থেকে ফারেগ হওয়া পর্যন্ত জোহর নামাজকে দেড়ি করা মুস্তাহাব।

 যদি সে জুম্মার নামাজের আগেই জোহরের নামাজ আদায় করে,সেটি আদায় হয়ে যাবে।
তবে জুম্মার পর পড়াই মুস্তাহাব।
,
মহিলারা জুম্মা নামাজের আগে ও পরে শহরে যোহরের নামাজ আদায় করতে পারে, শুক্রবার যোহরের সময় প্রবেশের পরে।
,
 তাদের পক্ষে প্রথম ওয়াক্তেই নামাজ পড়া ভাল।
,
একটি ভুল কথা প্রসিদ্ধ আছে যে নারীদের পক্ষে মসজিদে জুমার নামাজ শুক্রবার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের ঘরে যোহরের নামাজ পড়া ঠিক হবে না।

এটি ছহীহ কথা নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (671,200 points)
+1
সংযোজন করা হয়েছে।  

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...