জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
শরীয়তের বিধান মতে তালাকের পর স্ত্রী যদি অন্যত্রে বিবাহ না বসে,এ শর্তে সন্তান ছেলে হলে ৭ বছর,মেয়ে হলে ৯ বছর পর্যন্ত তার লালন পালন স্ত্রী তথা সন্তানের মা করতে পারবে।
এটি তার হক,তবে তিনি অন্যত্রে বিবাহ বসলে তার হক আর থাকবেনা।
এ সময়ের মধ্যে তিনি যদি তার স্বামীর সাথে ঝগড়া করে দূরে চলে যায়,তাহলে সেটি মন্দ বিষয়।
সন্তানের সাথে দেখা করতে না দেওয়া তার পিতার প্রতি জুলুম।
আবু দাউদ শরীফের ২২৭৬ নং হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ السُّلَمِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، عَنْ أَبِي عَمْرٍو يَعْنِي الْأَوْزَاعِيَّ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ امْرَأَةً قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ ابْنِي هَذَا كَانَ بَطْنِي لَهُ وِعَاءً، وَثَدْيِي لَهُ سِقَاءً، وَحِجْرِي لَهُ حِوَاءً، وَإِنَّ أَبَاهُ طَلَّقَنِي، وَأَرَادَ أَنْ يَنْتَزِعَهُ مِنِّي، فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنْتِ أَحَقُّ بِهِ مَا لَمْ تَنْكِحِي
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। একদা এক মহিলা বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এই সন্তানটি আমার গর্ভজাত, সে আমার স্তনের দুধ পান করেছে এবং আমার কোল তার আশ্রয়স্থল। তার পিতা আমাকে তালাক দিয়েছে। এখন সে সন্তানটিকে আমার থেকে কেড়ে নিতে চাইছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি অন্যত্র বিয়ে না করা পর্যন্ত তুমিই তার অধিক হকদার।
(আহমাদ, হাকিম। ইমাম হাকিম ও যাহাবী বলেন: সনদ সহীহ।)
উক্ত সন্তানের ভরনপোষণ চিকিৎসা ইত্যাদি দায়িত্ব বাবার।
বিস্তারিত জানুনঃ
(০২)
মাসবুকঃ-
যে মুক্তাদি ইমামের সঙ্গে নামাজের কিছু অংশ পেয়েছে, তাকে মাসবুক বলে।
এটিকে বিভিন্ন ভাবেও বলা যায়,যেমনঃ-
নামাজের জামাতে যে ব্যক্তি প্রথম রাকাতে রুকুর আগে ইমামকে পায়নি,পরবর্তী কোনো রাকাতে ইমামকে পেয়েছে,তাকে মাসবুক বলে।
নামাজের জামাতে যে ব্যক্তির শুরুতে এক বা তার অধিক রাকাত ছুটে গিয়েছে,তাকে মাসবুক বলে।
যে ব্যক্তি জামাতে প্রথম রাকাতে শরীক হতে পারেনি শরীয়তের পরিভাষায় তাকে মাসবুক বলে।
মুসাফিরঃ
শরীয়তে মুসাফির ঐ ব্যক্তিকে বলা হয়, যে ৪৮ মাইল তথা (প্রায় ৭৮ কিলোমিটার) বা তার বেশি দূরত্বে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ এলাকা ত্যাগ করে,এবং সেখানে গিয়ে ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি দিন থাকার নিয়ত না করে,তাকে মুসাফির বলে।
(০৩)
মাসবুকের নামাজের নিয়ম সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ
মুসাফির চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ ২ রাকাত করে পড়বে।
মুসাফিরের নামাজ সংক্রান্ত আরো জানুনঃ
(০৪)
হাতের তালু থাকবে আকাশের দিকে; যেভাবে একজন নতজানু দরিদ্র সাহায্যপ্রার্থী কিছু পাওয়ার আশায় হাত পাতে।
সুনানে আবু দাউদ গ্রন্থে (১৪৮৬) মালেক বিন ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “যখন তোমরা আল্লাহর কাছে কোন কিছু চাইবে তখন হাতের তালু দিয়ে চাইবে; হাতের পিঠ দিয়ে নয়”
হাতের তালু আসমানের দিকে থাকবে,উভয় হাত মিলিয়েও থাকতে পারে,উভয় হাতের মাঝে ফাকাও থাকতে পারে,সমস্যা নেই।
(০৫)
খাছ ভাবে তওবার পদ্ধতি সম্পর্কে জানুনঃ
(০৬)
দোয়াটি হলোঃ
اللّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ وَشَعْبَانَ وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ
'আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান। '
অর্থ : 'হে আল্লাহ! আপনি রজব ও শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান মাস পর্যন্ত (হায়াত দিন) পৌঁছে দিন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ إِذَا دَخَلَ رَجَبٌ قَالَ: اللّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ وَشَعْبَانَ وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ قَالَ: وَكَانَ يَقُولُ: لَيْلَةُ الْجُمُعَةِ لَيْلَةٌ أَغَرُّ وَيَوْمُ الْجُمُعَةِ يَوْمٌ أَزْهَرُ . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي الدَّعَوَاتِ الْكَبِيرِ
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজব মাস আসলে এ দু‘আ পড়তেন, ‘‘হে আল্লাহ! রজব ও শা‘বান মাসের (‘ইবাদাতে) আমাদেরকে বারাকাত দান করো। আর আমাদেরকে রমাযান মাস পর্যন্ত পৌঁছাও। বর্ণনাকারী আনাস (রাঃ) আরো বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, ‘‘জুমু‘আর রাত আলোকিত রাত। জুমু‘আর দিন আলোকিত দিন।’’
(দা‘ওয়াতুল কাবীর ৫২৯, শু‘আবুল ঈমান ৩৫৩৪,মিশকাত ১৩৬৯)
(০৭)
مَلْحَمَة ج مَلَاحِم [لحم]
[মাল্হামাহ] শব্দের অর্থঃ
হত্যাকাণ্ড
তীব্র লড়াই
মাংসঘর
কসাইখানা
জবাইখানা
(বীরত্বমূলক) মহাকাব্য
অনেক উলামায়ে কেরামগন মালহামা থেকে ৩য় বিশ্ব যুদ্ধ উদ্দেশ্য নিয়েছেন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا عَبَّاسٌ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ ثَابِتِ بْنِ ثَوْبَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ يَخَامِرَ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عُمْرَانُ بَيْتِ الْمَقْدِسِ خَرَابُ يَثْرِبَ، وَخَرَابُ يَثْرِبَ خُرُوجُ الْمَلْحَمَةِ، وَخُرُوجُ الْمَلْحَمَةِ فَتْحُ قُسْطَنْطِينِيَّةَ، وَفَتْحُ الْقُسْطَنْطِينِيَّةِ خُرُوجُ الدَّجَّالِ، ثُمَّ ضَرَبَ بِيَدِهِ عَلَى فَخِذِ الَّذِي حَدَّثَهُ، - أَوْ مَنْكِبِهِ - ثُمَّ قَالَ: إِنَّ هَذَا لَحَقٌّ كَمَا أَنَّكَ هَاهُنَا»، أَوْ كَمَا أَنَّكَ قَاعِدٌ، يَعْنِي مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইতুল মাকদিসে বসতি স্থাপন ইয়াসরিবের বিপর্যয়ের কারণ হবে এবং ইয়াসরিবের বিপর্যয় বড় সংঘাত (মালহামা) এর কারণ হবে। যুদ্ধের ফলে কুসতুনতীনিয়া বিজিত হবে এবং কুসতুনতীনিয়া বিজয় দাজ্জালের আবির্ভাবের আলামত। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন তার ঊরুতে বা কাঁধে নিজের হাত দ্বারা মৃদু আঘাত করে বলেন, এটা নিশ্চিত সত্য, যেমন তুমি এখানে উপস্থিত, যেমন তুমি এখানে বসা আছো। অর্থাৎ তিনি মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ)-কে লক্ষ করে বলেন।
(আবু দাউদ ৪২৯৪)
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ سُفْيَانَ الْغَسَّانِيِّ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ قُطَيْبٍ السَّكُونِيِّ، عَنْ أَبِي بَحْرِيَّةَ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الْمَلْحَمَةُ الْكُبْرَى، وَفَتْحُ الْقُسْطَنْطِينِيَّةِ، وَخُرُوجُ الدَّجَّالِ فِي سَبْعَةِ أَشْهُرٍ
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ভয়ঙ্কর যুদ্ধ ও কুসতুনতীনিয়া বিজয় এবং দাজ্জালের আবির্ভাব মাত্র সাত মাসের মধ্যে ঘটবে।
(আবু দাউদ ৪২৯৫)
তার মানে মালহামা মদিনার বিপর্যয়ের ফলে সংঘটিত হবে।
এটিই মালহামার বড় আলামত।