আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
295 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)

আসসালামু 'আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহী ওয়াবারকাতুহ। 

আমার বয়স ১৮/১৯ হয়েছে। আমি বিয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি ভীষণভাবে। আমি হালাল ভাবে কাউকে নিজের জীবনসাথী হিসেবে পেতে চাই। আসলে একাকী অবস্থায় আমার খুব ভয় হয়,শয়তানের ফাদে পরে আমি বহুবার হস্তমৈথুনের মতো জঘন্য গুনাহে জড়িয়ে পরেছিলাম।বহুবার ফিরেও এসেছি তওবা করে।কিন্তু আমার খুব খুব ভয় হচ্ছে,নিজের উপর মাঝে মাঝে তো আমি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি,আবার কখন গুনাহে জড়িয়ে যাই। মাঝে মাঝে খুব একা ফিল হয়।ভীষণ কষ্ট হয়। আমি বিয়ে করতে চাই।

আমি আমার সব ব্যাপারে আমার রব্বের উপর তাওয়াক্কুল করে আছি। আল্লাহ আমার ব্যাপারে যে ফায়সালা করবেন আমি তাতেই সন্তুষ্ট। 

শাইখ, সম্প্রতি আমার জন্য একটি বিয়ের প্রস্তাব এসেছে।ছেলে ও তার পরিবার মাশাল্লাহ দ্বীনদার। তারা আমার ব্যপারে আগ্রহী। আমার আম্মু  এই বিয়েতে রাজি।

কিন্তু সমস্যা হয়েছে আমার আব্বু ও দাদুকে নিয়ে।

আমার আব্বু,  আমার আম্মু, ছোট বোন ও আমায় বিদেশে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন। তারা বলছে এখন পাসপোর্ট হয়ে গেছে,সেখানে আমি অবিবাহিত উল্লেখ আছে।এখন বিয়ে হলে আমি নাকি বিদেশে যেতে পারবো না। আমায় বিদেশে নিয়ে তারা বিয়ে দিবে মোবাইল কলে এমনটা নিয়ত করেছে। উল্লেখ্য যে,বিদেশে কবে যাব, সেটা এখনো ফাইনাল হয় নাই, ঠিক হয় নাই ডেট। তারা বলে,আল্লাহ চাইলে এর চেয়ে ও আরো ভালো ফ্যামিলি আসবে।ওই দেশে আগে যাক, তারপর বিয়ের ব্যাপারে ভাববো। কত দ্বীনদার ছেলে আসবে আরো। এখন এখানে বাদ দে।

শাইখ, 

আমি বিদেশে যেতে চাই ও না। আমি বলেছিনা,একা একা আমি গুনাহে জড়িয়ে পড়ার আশংকা করছি।এই অবস্থায় বিদেশে যাওয়া সেইফ ফিল করছিনা।আমি তো আমার পরিবার কে সব সমস্যা খুলে বলতেও পারছিনা। এমন কেউ নেই যে যাকে আমি আমার সমস্যা খুলে বলবো। 

আমি তবুও নানা ভাবে তাদের বুঝিয়েছি, যে আমি বিয়ে করতে চাই। কিন্তু তারা কেবল তাদের স্বার্থ দেখছে,  আমায় বিদেশে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দিতে চাচ্ছে যেখানে বিদেশে কবে যাব সেই নিশ্চয়তাটুকু ও নাই।

 

শাইখ, আপনার নিকট আমি জানতে চাই 

★ আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে,আমি কি আমার বাবা দাদুর সাথে আপোষ করে বিয়ের সিদ্ধান্ত বাদ দিব? আব্বুর কথা মতোন বিদেশে যাবার সিদ্ধান্ত নিব। আব্বুর আকাংখাকে নিজের উপর প্রাধান্য দিব?

★ নাকি আল্লাহর ফায়সালার উপর পূর্ণ আস্থা রেখে,এখানে বিয়ের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করবো এবং যথাসম্ভব চেষ্টা করবো। বিদেশে যেতে অস্বীকার করবো,এবং আল্লাহ যদি চান,তাহলেই কেবল  এখানে বিয়ে হবে। 

আমার সবদিক বিবেচনায় কি করা উচিৎ??? আব্বু কে তো আর খুলে নিজের সমস্যার কথা বলতে পারিনা।লজ্জা হয়।

আব্বু যা করছে,এতে তো আব্বু গুনাহগার হচ্ছেন।আব্বু কে কিভাবে বুঝাই।

শাইখ,আমায় দ্বীনি ছোট বোন হিসেবে শরীয়ত এর দৃষ্টিকোণ থেকে একটা পরামর্শ দিন প্লিজ। যাতে আল্লাহ ও আমার উপর নারাজ না হবেন।ইনশাআল্লাহ । 

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
‘আলক্বামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। 

عن علقمة، قال: كنت مع عبد الله، فلقيه عثمان بمنى، فقال: يا أبا عبد الرحمن إن لي إليك حاجة فخلوا، فقال عثمان: هل لك يا أبا عبد الرحمن في أن نزوجك بكرا، تذكرك ما كنت تعهد؟ فلما رأى عبد الله أن ليس له حاجة إلى هذا أشار إلي، فقال: يا علقمة، فانتهيت إليه وهو يقول: أما لئن قلت ذلك، لقد قال لنا النبي صلى الله عليه وسلم: «يا معشر الشبابمن استطاع منكم الباءة فليتزوج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم فإنه له وجاء»

তিনি বলেন, যখন আমি ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম, ‘উসমান (রাঃ) তাঁর সঙ্গে মিনাতে দেখা করে বলেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আপনার সাথে আমার কিছু দরকার আছে। অতঃপর তারা দু’জনে এক পাশে গেলেন। তারপর ‘উসমান (রাঃ) বললেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমি কি আপনার সঙ্গে এমন একটি কুমারী মেয়ের বিয়ে দিব, যে আপনাকে আপনার অতীত কালকে স্মরণ করিয়ে দিবে? ‘আবদুল্লাহ্ যখন দেখলেন, তার এ বিয়ের দরকার নেই তখন তিনি আমাকে ‘হে ‘আলক্বামাহ’ বলে ইঙ্গিত করলেন। আমি তাঁর কাছে গিয়ে বলতে শুনলাম, আপনি আমাকে এ কথা বলছেন (এ ব্যাপারে) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন, হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে এবং যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ‘সওম’ পালন করে। কেননা, সওম যৌন ক্ষমতাকে দমন করে।(সহীহ বোখারী-৫০৬৫)

«النِّكَاحُ حَالَةَ الِاعْتِدَالِ سُنَّةٌ مُؤَكَّدَةٌ مَرْغُوبَةٌ، وَحَالَةَ التَّوَقَانِ وَاجِبٌ، وَحَالَةَ الْخَوْفِ مِنَ الْجَوْرِ مَكْرُوهٌ.» - «الاختيار لتعليل المختار»
 (3/ 82)

স্বাভাবিক অবস্থায় বিয়ে করা সুন্নতে মু’আক্কাদা। আর যিনা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনায় বিয়ে করা ওয়াজিব। আর স্ত্রীর জুলুম করার আশংকা থাকলে তখন বিয়ে করা মাকরুহ।(আল-এখতিয়ার লি তা’লিলিল মুখতার-৩/৮২)

অথবা এভাবেও বলা যায়,
বিবাহের সামর্থ রয়েছে, আর্থিক শারিরিক উভয় রকম সামর্থ্য রয়েছে,এবং যিনা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে,তাহলে এমতাবস্থায় বিয়ে ওয়াজিব। বিবাহের সামর্থ্য রয়েছে,তবে যিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা নাই এমতাবস্থায় বিয়ে করা সুন্নত। এবং স্ত্রীর হক আদায় না করার আশংকা থাকলে তখন বিয়ে করা মাকরুহ। 

আরো জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/2276

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
আপনার জন্য করনীয় হলো দ্রুত বিবাহ করা।
আপনার উপর বিবাহ ওয়াজিব।
আপনি আপাতত আপনার মা,অথবা দাদি ফুফি ইত্যাদি যেকোনো মহিলা মুরব্বির মাধ্যমে বিষয়টি আপনার বাবাকে বুঝানোর চেষ্টা করুন।  

আপনি আল্লাহর ফায়সালার উপর পূর্ণ আস্থা রেখে,এখানে বিয়ের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করবেন এবং যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন। 
গুনাহ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে রোযা রাখবেন।
বিবাহের আগে বিদেশে যাওয়ার প্লান আপাতত বাদ দিবেন। 

আরো জানুনঃ-


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...