জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِغَيْرِ اللهِ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَالَّذِى
نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ تُؤَدِّى الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّىَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِىَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ-
“যদি আমি কাউকে নির্দেশ দিতাম আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে সিজদা করার, তাহ’লে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করার জন্য।ঐ সত্তার শপথ করে বলছি যার হাতে আমার জীবন, মহিলারা ঐ পর্যন্ত আল্লাহর হক আদায় করতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে স্বামীর হক আদায় না করে, এমনকি স্বামী যদি যাত্রা পথে ঘোড়ার পৃষ্ঠেও তাকেও আহবান করে তখনও তাকে বাধা না দেয়।” (ইবনে মাজাহ হা/১৮৫৩; সহীহাহ হা/১২০৩।)
ইফকের ঘটনায় মা আয়েশা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট তার বাবা-মার কাছে যাওয়ার অনুমতি চাওয়ার হাদিস:
তিনি বলেন:
أتأذن لي أن آتي أبوي
“(হে আল্লাহর রাসূল,) আপনি কি আমাকে আমার বাবা-মার কাছে যাওয়ার অনুমতি দিবেন?” (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)
لا يجوز للمرأة الخروج من بيت زوجها إلا بإذنه ، لا لوالديها ولا لغيرهم ؛ لأن ذلك من حقوقه عليها ، إلا إذا كان هناك مسوغ شرعي يضطرها للخروج
“কোন মহিলার জন্য স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া জায়েয নয়। পিতামাতা বা অন্য কারো নিকট নয়। কারণ এটি তার উপর স্বামীর হক। অবশ্য যদি শরিয়ত সম্মত বিশেষ কোনো কারণ থাকে তাহলে ভিন্ন কথা।” (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ১৯/১৬৫)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
স্ত্রীর জন্য জরুরি হল, বিশেষ কোনো কাজে বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হলে স্বামীর নিকট অনুমতি নেয়া। স্বামী অনুমতি দিলে পরিপূর্ণ পর্দা সহকারে এবং নিজেকে ফিতনা থেকে হেফাযতে রেখে স্ত্রী বাইরে যেতে পারে। কিন্তু স্বামী যদি তাকে যেতে নিষেধ করে তাহলে স্ত্রীর জন্য তা লঙ্ঘন করা বৈধ নয়। অন্যথায় সে স্বামীর ‘অবাধ্য’ হিসেবে গণ্য হবে এবং গুনাহগার হবে।
সেই হিসেবে স্বামীর অনুমতি ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া যাবেনা।
কেননা প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া চালিয়ে গেলে বাহিরে যেতেই হবে।
তাই স্বামীর অনুমতি ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া যাবেনা।
★তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি এখনো আপনার বাবার বাসাতেই আছেন,আপনার বাবাই আপনার ভরনপোষণ এবং যাবতীয় খরচ দিচ্ছে,স্বামী দিচ্ছেনা।
আপনার স্বামী আর্থিক ভাবে তার পিতার উপর নির্ভরশীল।
সুতরাং স্বামীর বাসায় গেলে আপনার জন্য শশুরের থেকে ভরণপোষণ নেওয়া ছাড়া কোনো গতি নেই।
আবার আপনার শ্বশুর আপনার ভরণপোষণ দিতে রাজি নন।
আবার আপনি প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া চালিয়ে না গেলে আপনার পরিবার আপনার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে এমন অবস্থা দাড়িয়েছে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এখন পরামর্শ হলো,আপনি আপনার বাবার সাথে স্পষ্ট আলোচনা করবেন,যে স্বামীর কথা মতে লেখাপড়া বন্ধ করে দিলে আসলেই তিনি আপনার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন কিনা?
সেই সময় আপনার বাবা আপনার ভরণপোষণ দেয়া বন্ধ করে দিবেন কিনা?
যদি আপনার বাবা সিরিয়াসলি ভাবে বলে যে সেক্ষেত্রে আমি তোমার ভরণপোষণ দেয়া বন্ধ করে দিবো,সেক্ষেত্রে আপনি বাবার কথা মতে লেখাপড়া চালিয়ে যাবেন।
ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে পড়াশোনা করার জন্য শরীয়তের যে সমস্ত শর্ত রয়েছে,তাহা পূর্ণ ভাবে মেনে লেখাপড়া চালিয়ে যাবেন।
শর্ত সম্পর্কে জানুনঃ-
★উত্তম হবে,নিয়মিত ক্লাশ না করে শুধুমাত্র পরিক্ষার সময় গিয়ে পূর্ণ পর্দা মেনে পরীক্ষা দেওয়া।
আর যদি আপনার বাবা বিষয়টি সম্পর্কে সিরিয়াসলি না হয়,বরং তিনি আপনার আপনার ভরণপোষণ দেয়া বন্ধ করবেননা মর্মে কথা বলেন।
তাহলে আপনি স্বামীর আদেশ মতে পড়াশোনা বন্ধ করে দিবেন।