আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
120 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ
আমি এখন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি। আমার অর্ধাঙ্গ মেডিকেলের ২য় বর্ষে পড়াশোনা করছেন। আমরা ৬ মাস হলো বিয়ে করেছি। আমার স্বামী আর্থিক ভাবে তার পিতার উপর নির্ভরশীল যিনি ব্যাংকে চাকুরি করেন। আমার খরচ আমার পরিবার চালায়। আমার পরিবার চায় আমি পড়াশোনা করি, চাকুরি করি। কিন্তু আমি চাকুরি করতে চাই না এটা আমার পরিবার জানে। পড়াশোনা করছি। পড়াশোনা ছেড়ে দিলে আমার পরিবার আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে এমন অবস্থা। কিন্তু আমার অর্ধাঙ্গ চান যে আমি যাতে দুনিয়াবি পড়াশোনা ছেড়ে দ্বীনি পড়াশোনা শুরু করি, হিফজ করি, কোর্স করি, দাওয়াহ দেই, সন্তানদের লালন পালন করি। আমার স্বামীর কোন উপার্জন নেই, আমার পরিবার পড়াশোনা পরিহার করলে আমাকে পরিহার করবে। আমার শ্বশুর আমার ভরণপোষণ দিতে রাজি নন। তিনিও চান আমি পড়াশোনা করি। আমার শ্বশুরবাড়ির পরিবেশ এমন যে সেখানে মাহরাম মেইনটেইন করা পসিবল নয়। সব মিলিয়ে আমি সংশয়ে আছি। আমার অর্ধাঙ্গ বিয়ের আগে আমার পরিবারকে বলেছিলেন যদি আমি চাই তাহলে আমাকে পড়াশোনা করতে দিবেন। এখন তিনিই চান যে আমি পড়াশোনা না করি, তবে ফোর্স করেন না যেহেতু বিয়ের আগে বলেছেন যে আমি চাইলে পড়তে পারবো। এখানে কি স্বামীর আনুগত্য করা হচ্ছে না? আবার তিনি চান যে আমি দ্রুত বাচ্চা নিয়ে নেই যাতে পড়াশোনা না করতে পারি, এ ব্যাপারেও আমার কি করনীয়? সব মিলিয়ে দুনিয়া আমাকে আঁকড়ে ধরেছে, আমার জন্য দোয়া করবেন।  আপনার পরামর্শ আশা করছি। জাযাকাল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِغَيْرِ اللهِ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَالَّذِى
نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ تُؤَدِّى الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّىَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِىَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ-

“যদি আমি কাউকে নির্দেশ দিতাম আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে সিজদা করার, তাহ’লে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করার জন্য।ঐ সত্তার শপথ করে বলছি যার হাতে আমার জীবন, মহিলারা ঐ পর্যন্ত আল্লাহর হক আদায় করতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে স্বামীর হক আদায় না করে, এমনকি স্বামী যদি যাত্রা পথে ঘোড়ার পৃষ্ঠেও তাকেও আহবান করে তখনও তাকে বাধা না দেয়।” (ইবনে মাজাহ হা/১৮৫৩; সহীহাহ হা/১২০৩।)

ইফকের ঘটনায় মা আয়েশা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট তার বাবা-মার কাছে যাওয়ার অনুমতি চাওয়ার হাদিস:
তিনি বলেন:
أتأذن لي أن آتي أبوي

“(হে আল্লাহর রাসূল,) আপনি কি আমাকে আমার বাবা-মার কাছে যাওয়ার অনুমতি দিবেন?” (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)

لا يجوز للمرأة الخروج من بيت زوجها إلا بإذنه ، لا لوالديها ولا لغيرهم ؛ لأن ذلك من حقوقه عليها ، إلا إذا كان هناك مسوغ شرعي يضطرها للخروج

“কোন মহিলার জন্য স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া জায়েয নয়। পিতামাতা বা অন্য কারো নিকট নয়। কারণ এটি তার উপর স্বামীর হক। অবশ্য যদি শরিয়ত সম্মত বিশেষ কোনো কারণ থাকে তাহলে ভিন্ন কথা।” (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ১৯/১৬৫)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
স্ত্রীর জন্য জরুরি হল, বিশেষ কোনো কাজে বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হলে স্বামীর নিকট অনুমতি নেয়া। স্বামী অনুমতি দিলে পরিপূর্ণ পর্দা সহকারে এবং নিজেকে ফিতনা থেকে হেফাযতে রেখে স্ত্রী বাইরে যেতে পারে। কিন্তু স্বামী যদি তাকে যেতে নিষেধ করে তাহলে স্ত্রীর জন্য তা লঙ্ঘন করা বৈধ নয়। অন্যথায় সে স্বামীর ‘অবাধ্য’ হিসেবে গণ্য হবে এবং গুনাহগার হবে।

সেই হিসেবে স্বামীর অনুমতি ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক  লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া যাবেনা।   
কেননা প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া চালিয়ে গেলে বাহিরে যেতেই হবে।
তাই স্বামীর অনুমতি ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক  লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া যাবেনা।   

★তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি এখনো আপনার বাবার বাসাতেই আছেন,আপনার বাবাই আপনার ভরনপোষণ এবং যাবতীয় খরচ দিচ্ছে,স্বামী দিচ্ছেনা।
আপনার স্বামী আর্থিক ভাবে তার পিতার উপর নির্ভরশীল।
সুতরাং স্বামীর বাসায় গেলে আপনার জন্য শশুরের থেকে  ভরণপোষণ নেওয়া ছাড়া কোনো গতি নেই।
আবার আপনার শ্বশুর আপনার ভরণপোষণ দিতে রাজি নন।
আবার আপনি প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া চালিয়ে না গেলে আপনার পরিবার আপনার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে এমন অবস্থা দাড়িয়েছে। 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
এখন পরামর্শ হলো,আপনি আপনার বাবার সাথে স্পষ্ট আলোচনা করবেন,যে স্বামীর কথা মতে লেখাপড়া বন্ধ করে দিলে আসলেই তিনি আপনার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন কিনা?
সেই সময় আপনার বাবা আপনার ভরণপোষণ দেয়া বন্ধ করে দিবেন কিনা?

যদি আপনার বাবা সিরিয়াসলি ভাবে বলে যে সেক্ষেত্রে আমি তোমার ভরণপোষণ দেয়া বন্ধ করে দিবো,সেক্ষেত্রে আপনি বাবার কথা মতে লেখাপড়া চালিয়ে যাবেন।
ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে পড়াশোনা করার জন্য শরীয়তের যে সমস্ত শর্ত রয়েছে,তাহা পূর্ণ ভাবে মেনে লেখাপড়া চালিয়ে যাবেন।

শর্ত সম্পর্কে  জানুনঃ-

★উত্তম হবে,নিয়মিত ক্লাশ না করে শুধুমাত্র পরিক্ষার সময় গিয়ে পূর্ণ পর্দা মেনে পরীক্ষা দেওয়া। 

আর যদি আপনার বাবা বিষয়টি সম্পর্কে সিরিয়াসলি না হয়,বরং তিনি আপনার আপনার ভরণপোষণ দেয়া বন্ধ করবেননা মর্মে কথা বলেন।
তাহলে আপনি স্বামীর আদেশ মতে পড়াশোনা বন্ধ করে দিবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...