ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।
তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।
,
রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)
বিস্তারিত জানুনঃ
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত বিবাহে ছেলে মেয়ের মাঝে কুফু মিল না থাকলে তাদের অভিভাবকগন আদালতের মাধ্যমে উক্ত বিবাহ বিচ্ছেদ করে দিতে পারবে।
(তবে উল্লেখিত বিবাহের সময় মেয়ে নাবালেগাহ থাকলে সেই বিবাহি সহীহ হবেনা। সেই ছুরতে বিবাহই যেহেতু শুদ্ধ হয়না,তাই বিচ্ছেদ করানোরও প্রয়োজনীয়তা নেই। )
(০২)
এভাবে ৩য় বার তালাক প্রদানের পর সেই স্ত্রীকে আর সেই ফিরে নিতে পারবেনা।
শরয়ী হালাল্য ব্যাতিত তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
কেননা এক্ষেত্রে স্ত্রী তিন তালাক প্রাপ্তা হয়ে যাবে।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ৩য় তালাকের পর তাকে ফিরিয়ে নিয়ে ঘর সংসার করাতে যেনা হবে।
যেনার গুনাহ চলমান থাকবে।
,
(০৩)
যেহেতু এখানে তালাক ছাড়াই সেই মহিলা অন্যত্রে বিবাহ বসেছে,তাই তার এই পরবর্তী বিবাহ সহীহ হয়নি।
এতে তার যেনা হচ্ছে।
,
উক্ত ঘর যেহেতু তাকে দলিল করে দেওয়া হয়নি,আর স্ত্রীও যেহেতু বাধ্য নয়,তাই এক্ষেত্রে সেই ঘর ফিরিয়ে কিতে পারবে।
তবে স্ত্রী পুনরায় তার সংসারে ফিরে আসলে ঘর তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
(০৪)
এতে তিনি অন্যায় করছেন।
হক নষ্ট করছেন।
এর কারনে কিয়ামতে ময়দানে তার জন্য কঠিন কিছু অপেক্ষা করছে।
উক্ত ব্য্যাক্তির জন্য ২য় বিবাহ জায়েজই হয়নি।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে।
(সহীহ : তিরমিযী ১১৪১, আবূ দাঊদ ২১৩৩, ইবনু মাজাহ ১৯৬৯, নাসায়ী ৩৯৪২, আহমাদ ৭৯৩৬, সহীহ আল জামি‘ ৭৬১, সহীহ আত্ তারগীব ১৯৪৯।)
বিস্তারিত জানুনঃ