আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
146 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম।

১. মেয়েরা অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়া পালিয়ে বিয়ে করলে এবং পরবর্তীতে ছেলের অভিভাবক ও মেয়ের অভিভাবক বিয়ে মেনে না নিলে ঐ বিয়ে জায়েজ হবে?

২. একজন লোক তার স্ত্রী কে এক তালাক দিয়েছে এবং এক ইদ্দতের মধ্যে মিলিত হয়েছে। কিছু দিন পর আবার এক তালাক দিয়ে আবার মিলিত হয়েছে। কিছু দিন পর আবার এক তালাক দিয়ে আবার মিলিত হয়েছে। এভাবে বেশ কয়েকবার প্রায় ১০ বার এক তালাক দিয়ে আবার মিলিত হয়েছে। এরকম করা কি জায়েজ? না কি তালাক পতিত হয়ে গিয়েছিল?

৩. একজন লোক গোপনে বিয়ে করে এবং বলেছে ঐ মহিলা কে স্বীকৃতি দিবে না কোনদিন। কারণ তার আগের স্ত্রী ও বাচ্চা আছে। মহিলা স্বীকৃতি চাচ্ছিল কিন্তু লোকটা দিচ্ছিল না। লোকটা মহিলাকে বাড়ি কিনে দিয়েছে আরো কিছু সম্পদ দিয়েছিল আর তাকে সারাজীবন রক্ষিতার মত রাখতে চেয়েছে। কিন্তু ঐ মহিলা বলেছে আমি আপনার সাথে কোনদিন যদি না থাকি তাইলে আপনার বাড়ি ও সব জিনিস ফেরত দিব। পরে ও মহিলা অন্যত্র বিয়ে করে। এখন ঐ লোকটা উনার বাড়ি ফেরত চাচ্ছে যেহেতু ঐ মহিলা বলেছিলেন সব ফেরত দিবেন। এ কথার প্রেক্ষিতে লোকটা ফেরত চাচ্ছে। এখন আবার ঐ মহিলা ও তার পরিবার বাড়ি ফেরত দিতে চাচ্ছে না। এখন লোকটা এক প্রকার জোর করে সব ফেরত নিচ্ছেন। এটা কি জায়েজ হচ্ছে?

৪. একজন লোকের ২ জন স্ত্রী। লোকটা এক স্ত্রীর প্রতি শারীরিক সম্পর্কে বেশি আগ্রহী। ১ম জন কে তার কম ভালো লাগে। তাঁর সাথে শারীরিক সম্পর্ক অনেক পর পর স্থাপন করে। আর ২য় স্ত্রী ও প্রথম স্ত্রীর কাছে যেতে বাধা দিয়ে রাখে। এতে করে কি লোকটা ও তার ২য় স্ত্রী প্রথমার প্রতি অন্যায়। করছেন না? হক নষ্ট করছেন না?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।
,
রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ
 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

বিস্তারিত জানুনঃ  

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত বিবাহে ছেলে মেয়ের মাঝে কুফু মিল না থাকলে তাদের অভিভাবকগন আদালতের মাধ্যমে উক্ত বিবাহ বিচ্ছেদ করে দিতে পারবে। 

(তবে উল্লেখিত বিবাহের সময় মেয়ে নাবালেগাহ থাকলে সেই বিবাহি সহীহ হবেনা। সেই ছুরতে বিবাহই যেহেতু শুদ্ধ হয়না,তাই বিচ্ছেদ করানোরও প্রয়োজনীয়তা নেই। )

(০২)
এভাবে ৩য় বার তালাক প্রদানের পর সেই স্ত্রীকে আর সেই ফিরে নিতে পারবেনা।
শরয়ী হালাল্য ব্যাতিত তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। 

কেননা এক্ষেত্রে স্ত্রী তিন তালাক প্রাপ্তা হয়ে যাবে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ৩য় তালাকের পর তাকে ফিরিয়ে নিয়ে ঘর সংসার করাতে যেনা হবে।
যেনার গুনাহ চলমান থাকবে।
,
(০৩) 
যেহেতু এখানে তালাক ছাড়াই সেই মহিলা অন্যত্রে বিবাহ বসেছে,তাই তার এই পরবর্তী  বিবাহ সহীহ হয়নি।
এতে তার যেনা হচ্ছে।
,
উক্ত ঘর যেহেতু তাকে দলিল করে দেওয়া হয়নি,আর স্ত্রীও যেহেতু বাধ্য নয়,তাই এক্ষেত্রে সেই ঘর ফিরিয়ে কিতে পারবে। 

তবে স্ত্রী পুনরায় তার সংসারে ফিরে আসলে ঘর তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে।

(০৪)
এতে তিনি অন্যায় করছেন।
হক নষ্ট করছেন।
এর কারনে কিয়ামতে ময়দানে তার জন্য কঠিন কিছু অপেক্ষা করছে।
উক্ত ব্য্যাক্তির জন্য ২য় বিবাহ জায়েজই হয়নি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে।

(সহীহ : তিরমিযী ১১৪১, আবূ দাঊদ ২১৩৩, ইবনু মাজাহ ১৯৬৯, নাসায়ী ৩৯৪২, আহমাদ ৭৯৩৬, সহীহ আল জামি‘ ৭৬১, সহীহ আত্ তারগীব ১৯৪৯।)

বিস্তারিত জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...