আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
388 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম।

 ১)উক্ত ফাতওয়ার ২ নং প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়েছে কথা বন্ধ রাখলে গুনাহ্ হবে। এক্ষেত্রে আমার জানার বিষয় হলো- মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক গাইরাত থাকে। স্বামী যে স্ত্রীকে অনবরত মারধর করে তার মর্যাদাহানি করলো, এতে স্বাভাবিক আত্মমর্যাদাবোধে লাগবে স্বামীর সাথে গিয়ে নিজে থেকে কথা বলতে.. স্বামীও এটাকে দুর্বলতা ভাবতে পারে- এহেন অবস্থায়ও গুনাহ্ হবে কেন?

২) ওযু ধরে রাখতে বায়ুর চাপ চেপে ধরলে যদি মলদ্বারে গরম অনুভূতি হয় কিন্তু বায়ু বের হয়নি বলে শিউর থাকে, তবে কি ওযু ভাঙবে?

৩) কোন মুসলিম যদি অপর মুসলিমের সাথে কোন ধরনের ঝগড়া ব্যতীতই  এমনেই কথা না হয়, কথা বলা বন্ধ থাকে, তাহলেও কি গুনাহ্ হবে?

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم  

(০১) 
হাদীস শরীফে এসেছে  
عن أبي أیوب رضي اللّٰہ عنہ أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم قال: لا یحل لمسلم أن یہجر أخاہ فوق ثلاث لیال یلتقیان فیعرض ہذا و یعرض خذت وخیرہما الذي یبدأ بالسلام۔ (رواہ مالک في الموطا ۲؍۹۰۷، صحیح البخاري رقم: ۶۲۳۷، الترغیب و الترہیب رقم: ۴۱۸۹)
যার সারমর্ম হলো কোনো মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের সাথে ৩ দিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা,সম্পর্ক ছিন্ন রাখা জায়েজ নেই।   
,
অপর এক হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আউফ ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, কিছু লোক এসে আয়েশা (রা.)-কে বলল, আপনি যে অমুক জিনিস বিক্রি করেছেন কিংবা কাউকে দান করে দিয়েছেন, এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) বলেছেন, ‘যদি খালাম্মা আমার কথা না মানেন, তাহলে আমি তাঁর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে দেব। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে আয়েশা (রা.)-কে যে পরিমাণ ভাতা দেওয়া হয়, তা কমিয়ে দিয়ে শুধু খরচ চালনার পরিমাণ অর্থ দেব।’ আয়েশা (রা.) জিজ্ঞেস করেন, ‘সে কি এ কথা বলেছে?’ লোকেরা বলল, হ্যাঁ, তিনি এ কথাই বলেছেন। অতঃপর আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, ইবনে জুবাইরের সঙ্গে আর কখনো কথা বলব না।’ এরপর তিনি তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকে। 
ইবনে জুবাইর (রা.) আয়েশা (রা.)-এর কাছে সুপারিশকারী পাঠিয়েছেন। কিন্তু আয়েশা (রা.) কারো কোনো সুপারিশ মানতে চাননি এবং শপথও ভাঙতে চাননি। বিষয়টি ইবনে জুবাইরের (রা.) জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে। পরে আয়েশা (রা.)-কে ওই হাদিস স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, যে হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন দিনের বেশি কোনো মুসলমানের সঙ্গে রাগ করে কথা বলা বন্ধ রাখা বৈধ নয়।’ সবাই মিলে আয়েশা (রা.)-কে জোর দিয়ে বলে যে আপনি যা করছেন সেটা গুনাহ। তখন তিনি কেঁদে ফেলেন এবং বলেন, ‘আমি কসম খেয়ে ফেলেছি এবং কসম অত্যন্ত কঠিন বিষয়।’ শেষ পর্যন্ত তিনি কসম ভঙ্গ করে ইবনে জুবাইরের সঙ্গে কথা বলেন এবং কসমের কাফফারাস্বরূপ ৪০ জন দাস মুক্ত করে দেন। পরবর্তী জীবনে আয়েশা (রা.) তাঁর এ ভুলের কথা মনে হলেই কাঁদতেন এবং এত বেশি পরিমাণে কাঁদতেন যে চোখের পানিতে তাঁর ওড়না ভিজে যেতো।

★মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক গায়রাত থাকতেই পারে,তবে সেটাকে শরয়ী সীমারেখার আওতায় থেকেই হতে হবে।
শরয়ী সীমারেখার গন্ডি পেরিয়ে কোনো গায়রাতের গ্রহণযোগ্যতা নেই।
যে ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে প্রহার করে,গালাগালি করে তার মর্যাদাহানী করে,তার সাথে আইনি মোকাবেলা করা যেতে পারে।
উভয় পরিবার  মিলে বিষয়টি নিরসনের জন্য বৈঠক ডাকা যেতে পারে।
তার সাথে স্থায়ী ভাবে কথা বার্তা বন্ধ করে দিয়ে সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ হবেনা।
,
★তিন তিন অন্তর অন্তর স্বামীকে  কম আয কম সালাম দেওয়া যেতে পারে,যাতে রাসুল সাঃ এর হাদিসের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আপনাকে না পড়তে হয়।   
স্বামী যদি সালামের উত্তর না নেয়,তাহলে সে গুনাহগার হবে।
স্ত্রী গুনাহ থেকে বেঁচে যাবে।  
,
(০২) ওযু ধরে রাখতে বায়ুর চাপ চেপে ধরলে যদি মলদ্বারে গরম অনুভূতি হয় কিন্তু বায়ু বের হয়নি বলে শিউর থাকে, তবে ওযু ভাঙবেনা।
,
(০৩)    
শরীয়তের বিধান হলো কাহারো সাথে শরয়ী ওযর ব্যাতিত  তিন দিনের বেশি কথাবার্তা বন্ধ রাখা, সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ নেই। 
(কিতাবুল ফাতওয়া ৬/২১৭)

এটা যদি তাদের সামনা সামনি না হওয়ার কারনে হয়,যে সামনা সামনি,দেখা সাক্ষাৎ  যেহেতু আমাদের  হচ্ছেনা,তাই কথা বলার সুযোগও হচ্ছেনা।
তাহলে তো কোনো সমস্যা নেই। 
তবে দেখা সাক্ষাৎ হওয়ার পরেও বিনা কারনে কাহারো সাথে কথা বার্তা বলা বন্ধ করে দেওয়া,সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ নেই।    
হ্যাঁ যদি শরয়ী ওযর থাকে,তাহলে কোনো সমস্যা নেই।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 82 views
...