আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
406 views
in পবিত্রতা (Purity) by (2 points)
আমরা অনেক সময় তাফসীর গ্রন্থ পড়ি, মোবাইলে কোন একটা আয়াত না বুঝলে একটু ভালো করে বুঝার জন্য, এরপরে না বুঝলে উলামায়ে কেরাম দের শরণাপন্ন হই।  কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি কি অযূ ছাড়া মোবাইলে আ্যাপে কুরআন পড়তে পারবো কি?
এবং সেই সাথে আমি সেই অবস্থায় তাফসীর গ্রন্থ স্পর্শ করতে পারবো কি? সেইখান থেকে প্রয়োজনীয় অংশ পড়তে পারবো কি?
আবার আমাদের বোনেরা বা মায়েরা হিজাব পড়ে অনেকে রাস্তায় বের হোন,  এখন মেয়েদের নামাজের জায়গায় নামাজ পড়তে যাবেন, ধরেন কোন একটা মসজিদে মহিলাদের নামাজের ব্যবস্থা আছে সেক্ষেত্রে হিজাব খুলতে গেলে আবার বাধা মাঝেসাঝে কষ্ট সাধ্য হয়ে যায়,  এক্ষেত্রে হিজাব পড়া অবস্থায় অযূ করা যায় কিনা?
আবার হিজাব পড়া অবস্থায় মাথা মাসেহের ব্যাপারে বিধান কি?

1 Answer

0 votes
by (707,840 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-

সমাধানঃ-
মহাগন্ত্র আল-কোরআন কে বিনা অজুতে স্পর্শ করা নাজায়েয। এ সম্পর্কে কোরআনে কারীমের যে আয়াত দ্বারা সাধারণত দলীল পেশ করা হয়ে থাকে,সেই আয়াত হল নিম্নরূপ-
ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﻘُﺮْﺁﻥٌ ﻛَﺮِﻳﻢٌ
নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন,
ﻓِﻲ ﻛِﺘَﺎﺏٍ ﻣَّﻜْﻨُﻮﻥٍ
যা আছে এক গোপন কিতাবে,
ﻟَّﺎ ﻳَﻤَﺴُّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﻄَﻬَّﺮُﻭﻥَ
যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।
ﺗَﻨﺰِﻳﻞٌ ﻣِّﻦ ﺭَّﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ
এটা বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
সূরা ওয়াক্বেয়া-৭৭----
এই আয়াতে সমূহের ব্যাখ্যা সম্ভবত শরীয়তে ইসলামীর জটিল-কঠিন মাস'আলা সমূহর একটি।
এই আয়াতে সমূহের একটি আয়াত-
(যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।)
দ্বারা আমাদের সামনে বিদ্যমান কোরআনে কারীম উদ্দেশ্য কি না?
এ সম্পর্কে অনেক অনেক মতপার্থক্য রয়েছে।

তবে এই সমূহ মতপার্থক্যর মধ্যে এটাই বিশুদ্ধ যে,অত্র আয়াতে ঐ কোরআন-ই  উদ্দেশ্য যা আমাদের সামনে বিদ্যমান।
সুতরাং আয়াতের অর্থ হবে, 'তোমরা অপবিত্র অবস্থায় তোমাদের সামনে বিদ্যমান কোরআন-কে স্পর্শ করবে না।'

রাসূলুল্লাহ সাঃ এর যামানা এবং প্রথম দুই খলিফার যামানায় কোরআন বর্তমান সময়ের মত লিপিবদ্ধ ছিলনা।অথচ তখনই কোরআনের এ আয়াত নাযিল হয়েছে।তাই বুঝা গেল, যেখানেই কোরআন লিখা থাকবে,সে জিনিষকে স্পর্শ করা যাবে না।

আমাদের সহসাই যে প্রশ্নটা জাগে, তাহলে
গিলাফ বা কিছুর আবরণ দ্বারা স্পর্শ করা যাবে কি?
সে প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যে,
একদল উলামায়ে কেরাম বলেন, অপবিত্র ব্যক্তি কোরআনকে স্পর্শ করতে পারবে না।চায় গিলাফ বা কিছুর আবরণ দ্বারা হোক না কেন?
ইহা মুহাম্মদ ইবনে আলী রাহ,আ'তা রাহ,তাউস রাহ,সালিম রাহ,ক্বাসিম রাহ,আব্দুর রহমান ইবনে আসওয়াদ রাহ,ইবরাহিম রাহ,সুফইয়ান রাহ,ইমাম মালিক রাহ,শাফেয়ী রাহ মহোদয়গণের মত ও মাযহাব।(তাফসীরে বাসিত-২১/২৬১)

অন্য একদল উলামায়ে কেরামের মতে গিলাফ বা কিছুর আবরণ দ্বারা কুরআনকে স্পর্শ করা যাবে।ইহা ইমাম আবু হানিফা রাহ সহ আরো কিছু ফুকাহায়ে কেরামের মাযহাব।


গিলাফ বা আবরণ মূলত সেটাই যা কুরআনকে ঢেকে ফেলবে।কিন্তু সেন্সর গ্লাস মূলত কুরআনকে ঢাকে না।যেন মনে হয় কাগজে লিখিত কুরআনই আমাদের দিকে থাকিয়ে আছে।তাই কুরআনের সম্মানার্থে সেন্সর গ্লাসের উপর দিয়ে স্পর্শ করাও উচিৎ হবে না।

এই মাসআলা কে  নিয়ে মানহাযগত ইখতেলাফ বলতে গেলে ইখেলাফের চুড়ান্ত সীমায়।কেউ কেউ তো এমন ও বলেছেন যে,পূর্বে বর্ণিত সূরা ওয়াক্বেয়ার ৭৭ নং আয়াতের অর্থ হল,এটা এমন এক কুরআন যাকে লৌহে মাহফুজে ফিরিস্তাগণ ব্যতীত আর কেউ স্পর্শ করতে পারে নি।বিধায় এ অর্থ অনুযায়ী আমাদের সামনের কুরআনকে বিনা অজুতে স্পর্শ করা জায়েয রয়েছে।কেননা তখন এ অায়াত নাজায়েয হওয়ার পক্ষে দলীল থাকবে না।
 কিতাবুন-নাওয়াযিল-৩/১০৬

আরো জানতে ভিজিট করিন-১৪৫


(২)
ইসলামি রাষ্ট্রর জন্য ওয়াজিব যে, রাস্তার পাশে ও বাস/রেল ষ্টেশনে নারী পুরুষের জন্য পৃথক পৃথক নামাযের স্থান বা মসজিদ নির্মাণ করে দেয়া।সাথে সাথে নারীদের জন্যও ওয়াজিব যে,তারা নামাযের ওয়াক্তকে বিবেচনা করে ঘরের বাইরে বের হবে।

যদি কখনো ঘরের বাহিরে থাকাবস্থায় নামাযের সময় হয়ে যায়,তাহলে নির্জনে নামায পড়া যায়,এমন কোনো স্থানকে তলব করতে হবে।সাথের মাহরামকে নিয়ে নামাযের শেষ সময় পর্যন্ত নির্জন স্থানের তালাশ করতে হবে। নিরাপদ দেখে কারো বাসা বাড়িতে নামাযের জন্য উঠতে হবে।এবং তথায় পর্দার সাথে অজু ও নামায পড়তে হবে।এই চেষ্টা নামাযের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত করতে হবে।

যদি শতচেষ্টার পরও কোনো মহিলা পর্দা সম্মত অজু ও নামাযের স্থান না পায়।এবং তখন অজুর তুলনায় তায়াম্মুমকে পর্দার জন্য সুবিধাজনক মনে হয়,তাহলে মহিলা তায়াম্মুম করে নামায আদায় করে নেবে। যেহেতু পর্দা সম্মত নামাযের ব্যবস্থার চেষ্টা সে শেষ সময় পর্যন্ত করেছে,তাই তায়াম্মুম দ্বারা আদায়কৃত ঐ নামাযকে আর দোহড়াতে হবে না।বরং তা আদায় হয়েই যাবে।

কিন্তু যদি কেউ পর্দার সাথে অজু ও নামাযের কোনো চেষ্টা না করে, প্রথমেই তায়াম্মুম করে নেয়,তাহলে এই তায়াম্মুম দ্বারা আদায়কৃত নামাযকে আবার পূনরায় আদায় করতে হবে

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি শেষ সময় পর্যন্ত নির্জনে অজু করার চেষ্টাকে অভ্যাহত রাখবেন। যদি না পান, তাহলে তায়াম্মুম করে নামাযকে পড়তে হবে। হিজাব সহ অজু নয় বরং হিজাবের ভিতর দিয়ে তায়াম্মুম করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...