আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
242 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
আসসালামুয়ালাইকুম,

কিছুদিন আগে এক বড় ভাই দেশে এসে বিয়ে করেন. এবং তার পরের দিন চলে যান..বিয়ের পর সে রাতে তার সহবাস হয় নি। তাই, তার বউকে দ্রুত এক মাসের মধ্য ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়.. কেননা ৬মাসের মধ্য সহবাস না হলে নাকি  বিবাহ ভেংগে যাবে.. এই বিষয় টা সম্মন্ধে জানতে চাচ্ছিলাম..

আর যদি এসব ক্ষেত্রে বিবাহ ভেংগে যায় তবে যাদের স্বামী বিদেশে থাকে অনেক বছর আসে না তাদের বিয়ে গুলা কি অবৈধ?
অনেকক্ষেত্রে আকদ এর বছর খানেক পর মেয়েকে (সহবাস ব্যাতীত) স্বামীর ঘরে দেওয়া হয়,এসব ক্ষেত্রেও কি বিয়ে অবৈধ?
আর যদি স্বামী-স্ত্রী উভয়েই  বিয়ের পর সহবাস ছাড়াই বিচ্ছেদ নেওয়ার উদ্দেশ্য আলাদা থাকে অনেক বছর যাবৎ মৌখিক তালাক না দিয়ে.. তবে কি তালাক হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,470 points)
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/12098/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ
  
বিয়ে সহীহ থাকার জন্য সহবাস শর্ত নয়।বরং সারা জীবন সহবাস না হলেও বিয়েতে কোনো প্রভাব পড়বে না।

স্বামী-স্ত্রী পরস্পর হকঃ
স্বামী-স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের উপর অনেক হক রয়েছে।তন্মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হক হল,সহবাসের হক।
স্ত্রীর উপর স্বামীর সহবাস হক কতটুকু? 
উত্তরঃ স্বামী স্ত্রীকে সহবাসের জন্য তলব করলে স্ত্রীর জন্য তৎক্ষনাৎ স্বামীর ডাকে সাড়া দেয়া ওয়াজিব।শরয়ী উযর ব্যতীত জবাব না দেয়ার কোনো অপশন নেই।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
عن أبي هريرة رضي الله عنه، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إذا دعا الرجل امرأته إلى فراشه فأبت فبات غضبان عليها لعنتها الملائكة حتى تصبح»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
কোন লোক যদি নিজ স্ত্রীকে নিজ বিছানায় আসতে ডাকে আর সে অস্বীকার করে এবং সে ব্যক্তি স্ত্রীর উপর দুঃখ নিয়ে রাত্রি যাপন করে, তাহলে ফেরেশ্তাগণ এমন স্ত্রীর উপর সকাল পর্যন্ত লা‘নত দিতে থাকে। 
(সহীহ বুখারী-৩২৩৭)

এখন সহসাই প্রশ্ন জাগে, 
তাহলে স্বামীর নিকট স্ত্রীর সহবাস হক্ব কতটুকু?

এ সম্পর্কে উলামাদের কাছ থেকে বিরোধপূর্ণ বক্তব্য পাওয়া যায়।
(ক) 
ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,
ﻭﻳﺠﺐ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺰﻭﺝ ﻭﻁﺀ ﺍﻣﺮﺃﺗﻪ ﺑﻘﺪﺭ ﻛﻔﺎﻳﺘﻬﺎ ﻣﺎ ﻟﻢ ﻳﻨﻬﻚ ﺑﺪﻧﻪ ﺃﻭ ﻳﺸﻐﻠﻪ ﻋﻦ ﻣﻌﻴﺸﺘﻪ ، .. ﻓﺈﻥ ﺗﻨﺎﺯﻋﺎ ﻓﻴﻨﺒﻐﻲ ﺃﻥ ﻳﻔﺮﺿﻪ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ ﻛﺎﻟﻨﻔﻘﺔ ﻭﻛﻮﻃﺌﻪ ﺇﺫﺍ ﺯﺍﺩ " 
স্ত্রীর সন্তুষ্টি পর্যন্ত স্বামীর উপর স্ত্রীকে সহবাস করা ওয়াজিব(অর্থাৎ স্ত্রীর চাওয়া মাত্র স্বামীকে সহবাস করতে হবে)।যতক্ষণ না স্বামীর শরীর দুর্বল হচ্ছে বা স্বামীকে তার জীবিকানির্বাহ পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। সহবাসের পরিমাণ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হলে এক্ষেত্রে উচিৎ খোরপোষ ইত্যাদির মত সহবাসের পরিমাণকে বিচারক ঠিক করে দেবেন।(দৈনিক না সাপ্তাহিক? এইভাবে ঠিক করে দিবেন)
ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়্যাহ-২৪৬

(খ)
জুমহুর উলামায়ে কেরাম বলেন,প্রতি চার মাসে একবার স্বামীর উপর স্ত্রীকে সহবাস করা ওয়াজিব।(যখন স্ত্রী তা চাইবে)
সে সম্পর্কে ইবনে আবেদীন শামী রাহ, লিখেন..
স্বামী-স্ত্রীর হক সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সহবাস, সুতরাং স্ত্রীর সাথে স্বামী কতদিন পর্যন্ত সহবাস না করে থাকতে পারবে সে বিষয়ে অালোকপাত করে বলেনঃ
وَيَجِبُ أَنْ لَا يَبْلُغَ بِهِ مُدَّةَ الْإِيلَاءِ إلَّا بِرِضَاهَا وَطِيبِ نَفْسِهَا بِهِ. اهـ
স্ত্রীর সন্তুষ্টি ব্যতীত স্বামী মুদ্দতে ই'লা তথা চার মাস এর বেশী সময় সহবাস ব্যতীত থাকতে পারবে না।অন্যকথায় চার মাসের ভিতরে স্ত্রীর সাথে একবার সহবাস করা স্বামীর উপর ওয়াজিব।তবে স্ত্রী সহবাস ব্যতীত সন্তুষ্ট থাকলে ভিন্ন কথা অর্থাৎ যতদিন ইচ্ছা সহবাস ব্যতীত স্বামী থাকতে পারবে।

বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/990

(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত তথ্য সঠিক নয়।
৬ মাস কেনো,সারাজীবন স্বামী স্ত্রীর মাঝে সহবাস না হলেও তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হবেনা।
আগের মতোই তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল থাকবে।

(০২)
যদি স্বামী-স্ত্রী উভয়েই  বিয়ের পর সহবাস ছাড়াই বিচ্ছেদ নেওয়ার উদ্দেশ্য আলাদা থাকে অনেক বছর যাবৎ মৌখিক তালাক না দিয়ে.. তবে তালাক হবেনা।
তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল থাকবে।
সেই স্ত্রীর জন্য অন্যত্রে বিবাহ বসা হারাম হবে।
যদি সে তালাক ব্যতিত অন্যত্রে বিবাহ বসে,তাহলে সেটি যেনার সংসার হবে।
আগের বিবাহই বহাল থাকবে। 

মৌখিক বা লিখিত তালাক না দেওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...