আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
159 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (27 points)
কারোর স্বামী যদি প্রায় জালিম হয়,স্ত্রীর উপর অনেক বেশি মানসিক নির্যাতন করে,আরো যা যা করে বলার বাইরে,কয়েকবার দুই পরিবার একসাথে বসে ও তার কোনো আচরণে পরিবর্তন আানা সম্ভব হয়নি,বিয়ের পর ২.৫-৩  বছর ধরে এই অবস্থা। কোনো বাচ্চা ও নাই, স্বামী নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক সচেতন থাকার কারণে বাচ্চা নিতে চায়নি(পরে অবশ্য আরো কারণ ছিলো কিছু)।


এখন এই মেয়েটির পক্ষে কিছুতেই আার এই স্বামীর ঘর করা সম্ভব হচ্ছে না,কিছুতেই না, সে এখন অনেক সময়ই মানসিক ভাবে অসুস্থ থাকছে শুধু ভয়াবহ মানসিক নির্যাতনের কারণে,এমনকি প্রায় শারীরিক ভাবে ও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।


এখন আমি জানতে চাই-

১.এই মেয়েটি কি তার স্বামীর কাছ থেকে ডিভোর্স চায়তে পারে??
২.মেয়েটি বড় রকমের একটা মেন্টাল ট্রমার ভিতর আছে এখন শুধু ক্রমাগতভাবে স্বামীর মানসিক নির্যাতনের কারণে।স্বামীর ভয়ে সে এখন তার বাবার বাড়ি আছে( যদি ও এটা নিয়ে স্বামীর কোনো সমস্যা নেই,সে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত,আর খুশি),এই মেয়েটি ভয়ে তার স্বামীর সাথে এখন ফোনে কথা বলতে চায় না,বা তার বাড়িতে যেতে চায় না ভয়ে,(বহুবার স্বামী তার বউকে বাড়ি থেকে  বের করে দিয়েছে,আরো অনেক কিছু),


এখন মেয়েটি চায় একটু সুস্থভাবে বাচতে, এজন্য সে ছেলেটির সাথে ১-২ মাস কোনো যোগাযোগ না রেখে মেয়ের বাবার  বাসায় বাবা মার সাথে ১-২ মাস থাকতে চাচ্ছে স্বামীর বিনা অনুমতিতে আর এই এই সময়ে

 সে ভালোভাবে ডিভোর্সের জন্য ইস্তিখারা করতে চাচ্ছে,
মেয়েটির এই মানসিক অসুস্থতার সময়ে মেয়েটি সুস্থ হওয়ার জন্য এইভাবে বাবার বাড়িতে স্বামীর বিনা অনুমতিতে থাকতে পারবে কিনা?( উল্লেখ্য যে এর পরেই মেয়েটি তার স্বামীর কাছ থেকে ডিভোর্স চাচ্ছে, কারণ আর একসাথে থাকা সম্ভব না)

1 Answer

0 votes
by (687,440 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রশ্নে উল্লেখিত তথ্যে বুঝা যাচ্ছে ক্রমাগতভাবে স্বামীর মানসিক নির্যাতনের কারণে মহিলা একটা মেন্টাল ট্রমার ভিতর আছে।
স্বামীর সাথে ফোনে কথা বলতেও সে ভয় পাচ্ছে,স্ত্রীর উপর অনেক বেশি মানসিক নির্যাতন করে।
,
সুতরাং এহেন ছুরতে উভয় পরিবার একত্রে বসতে পারে।
আলোচনা করে সমাধানের দিকে আসতে পারে।
তাতেও যদি সমাধান না হয়,তাহলে স্ত্রী তালাক চাইতে পারবে।
আর স্ত্রী যদি নিজেকে নিজে তালাক  প্রদানের ক্ষমতা পেয়ে থাকে,তাহলে সে নিজেও নিজেকে তালাক দিতে পারবে।
এক্ষেত্রে শুধু যেনো এক তালাক দেওয়া হয়,কারন এক সাথে তিন তালাক দেওয়া ইসলামে জায়েজ নেই। 
যদিও তাতে তিন তালাকই পতিত হয়ে যাবে,তবে গুনাহগার হতে হবে।
,
স্বামীর অনুমতি ব্যাতিত এভাবে তার বাবার বাড়িতে থাকা তার জন্য বৈধ হচ্ছেনা।
সমাধানের দিকে আসতে হবে।

মহিলা যদি নিজেই তালাক দিতে চায় তাহলে এক্ষেত্রে কিছু মাসয়ালা জানতে হবেঃ-

তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “তালাক তারই অধিকার যার রয়েছে সহবাস করার অধিকার” অর্থাৎ স্বামীর। 
সুনানে ইবনে মাজাহ (২০৮১)

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

অথবা খোলা করতে পারে।
খোলা হচ্ছে: কোন কিছুর বিনিময়ে স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে স্বামী সে বিনিময়টি গ্রহণ করে স্ত্রীকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে; এ বিনিময়টি স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে প্রদত্ত মোহরানা হোক কিংবা এর চেয়ে বেশি সম্পদ হোক কিংবা এর চেয়ে কম হোক।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
   
 اَلطَّلَاقُ مَرَّتٰنِ۪ فَاِمۡسَاکٌۢ بِمَعۡرُوۡفٍ اَوۡ تَسۡرِیۡحٌۢ بِاِحۡسَانٍ ؕ وَ لَا یَحِلُّ لَکُمۡ اَنۡ تَاۡخُذُوۡا مِمَّاۤ اٰتَیۡتُمُوۡهُنَّ شَیۡئًا اِلَّاۤ اَنۡ یَّخَافَاۤ اَلَّا یُقِیۡمَا حُدُوۡدَ اللّٰهِ ؕ فَاِنۡ خِفۡتُمۡ اَلَّا یُقِیۡمَا حُدُوۡدَ اللّٰهِ ۙ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡهِمَا فِیۡمَا افۡتَدَتۡ بِهٖ ؕ تِلۡکَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ فَلَا تَعۡتَدُوۡهَا ۚ وَ مَنۡ یَّتَعَدَّ حُدُوۡدَ اللّٰهِ فَاُولٰٓئِکَ هُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۲۲۹﴾

তালাক দু’বার। অতঃপর বিধি মোতাবেক রেখে দেবে কিংবা সুন্দরভাবে ছেড়ে দেবে। আর তোমাদের জন্য হালাল নয় যে, তোমরা তাদেরকে যা দিয়েছ, তা থেকে কিছু নিয়ে নেবে। তবে উভয়ে যদি আশঙ্কা করে যে, আল্লাহর সীমারেখায় তারা অবস্থান করতে পারবে না। সুতরাং তোমরা যদি আশঙ্কা কর যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা কায়েম রাখতে পারবে না তাহলে স্ত্রী যা দিয়ে নিজকে মুক্ত করে নেবে তাতে কোন সমস্যা নেই। এটা আল্লাহর সীমারেখা। সুতরাং তোমরা তা লঙ্ঘন করো না। আর যে আল্লাহর সীমারেখাসমূহ লঙ্ঘন করে, বস্তুত তারাই যালিম।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
أَزْهَرُ بْنُ جَمِيلٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ امْرَأَةَ ثَابِتِ بْنِ قَيْسٍ أَتَتْ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ ثَابِتُ بْنُ قَيْسٍ مَا أَعْتِبُ عَلَيْهِ فِي خُلُقٍ وَلاَ دِينٍ وَلٰكِنِّي أَكْرَهُ الْكُفْرَ فِي الإِسْلاَمِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَتَرُدِّينَ عَلَيْهِ حَدِيقَتَه“ قَالَتْ نَعَمْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اقْبَلْ الْحَدِيقَةَ وَطَلِّقْهَا تَطْلِيقَةً قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ لاَ يُتَابَعُ فِيهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ 

ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণিত যে, সাবেত ইবনে কাইসের স্ত্রী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! সাবেত ইবনে কাইসের দ্বীনদারী এবং চরিত্রের উপর আমার কোন অভিযোগ নেই; কিন্তু আমি মুসলিম হয়ে কুফরী করাটা মোটেও পছন্দ করি না। (তাদের উভয়ের সম্পর্কে অমিল ছিল) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কি তাকে (স্বামীকে)-মাহর হিসেবে তোমাকে যে বাগান দিয়েছিল-তা ফিরিয়ে দেবে? সে বলল, হ্যাঁ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাবেত রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে বললেন, বাগানটি ফেরত নিয়ে তাকে এক তালাক দিয়ে দাও। [বুখারীঃ ৫২৭৩]


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...