আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
273 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (50 points)
edited by
১। মসজিদের প্রথম কাতারে শুধুমাত্র বয়স্ক লোকরা নামাজ পড়বে, ছোটরা নামাজ পড়বে না, এ জাতীয় কোন হাদীস কি আছে? অনেক সময় ছোটরা আগে এসে প্রথম কাতারে বসলে বয়স্করা পরে এসে ছোটদের পিছনে পাঠিয়ে দেয়। এটা কতটা যৌক্তিক?

২। আমাদের মসজিদে দেখা যায়, নতুন কাতার বানানোর ক্ষেত্রে মসজিদে ডান আর বাম ২ দিকে গেট থাকায়, মুসল্লীরা ডান আর বাম দিকে দাড়িয়ে কাতার শুরু করে, মাঝের দিকে দেখা যায় খালি থাকে, পরে অবশ্য অন্যরা আসলে কাতার পূর্ন হয়ে যায়। এইযে মাঝে খালি থাকে তাহলে এভাবে কাতার করে পড়লে  নামাজ হবে?

৩। জামায়াতে পড়ার সময়, ওযু ছুটে গেলে কিভাবে কি করব? আমি শুনেছিলাম, জামায়াতে ইমাম হলো সুতরা, মুসল্লিদের সামনে দিয়ে যাওয়া যায়। এটা কি সঠিক? ওযু ছুটল কি করব?

৪। দুখুলুল মসজিদ নামাজটা শুনেছিলাম ওয়াজিব সুন্নত। এক হাদীসে শুনেছি, মহানবী (সা)  খুতবা দেয়ার সময়, এক সাহাবি নামাজ না পড়ে খুতবা শুনতে বসে পড়লে তাকে তখনই নামাজ পড়তে বলে। এটা কি ওয়াজিব?

৫।  যেসব ভন্ড পীর বলে তারা মুরিদদের সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যাবে, এরকম কথা কি শিরকের অংশ? আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউ সুপারিশ করতে পারেনা, এসব কথা কি তাদের ঈমানের বড় ক্ষতি হবে কিনা।

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো,জামাতের সাথে নামাজ আদায় কালে কাতারের স্তরবিন্যাস বিন্যাস হলোঃ
 প্রথমে পুরুষেরা দাড়াবে,(এখানে গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের কোনো অগ্রাধিকার নেই,সকল পুরুষই এক্ষেত্রে সমান অধিকার রাখে।)
পুরুষদের কাতারের পর শিশুদের কাতার হবে,(তবে শিশুদের সংখ্যা যদি কম হয়,তাহলে তাদেরকে পুরুষদের কাতারের মাঝে মাঝে দাড় করাবে।)
তারপর হিজরাদের কাতার হবে,তারপর মহিলাদের কাতার হবে।
(ফাতাওয়ায়ে হিকমত ১/১২৮)

হাদীস শরীফে এসেছে  
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: خَيْرُ صُفُوفِ الرِّجَالِ أَوَّلُهَا وَشَرُّهَا آخِرُهَا وَخَيْرُ صُفُوفِ النِّسَاءِ آخِرُهَا وَشَرُّهَا أَوَّلُهَا.

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন, পুরুষ লোকের কাতারসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম কাতার হল প্রথম কাতার এবং সর্বনিকৃষ্ট কাতার হল শেষ কাতার, আর স্ত্রীলোকের কাতারসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম কাতার হল শেষ কাতার এবং নিকৃষ্ট কাতার হল প্রথম কাতার (মুসলিম, মিশকাত হা/১০৯২)।
,
,
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছে   
ویصف الرجال ثم الصبیان ثم الخناثیٰ ثم النساء ۔ نور الایضاح فصل فی اللاحق بالامامہ ۔ قال الشامی علی قول الماتن ’’ ثم الصبیان ظاہر ہ تعدد ہم فلو واحداً أدخل الصف ۔ کذا لو کان المقتدی رجلاً وصبیاً یصفہما خلفہ بحدیث انسؓ۔ ۔ ۔ وہذا بخلاف المرأۃ الواحدۃ فانہا تتأخر کالمتعدّدات

ویقف الرجال ثم الصّبیان ظاہرہ تعدّدہم فلو واحداً أدخل الصف ۔ در مختار ص ۳۸۴ ج۱ بر حاشیہ شامی طبع مجتبائی باب الامامۃ
যার সারমর্ম হলো আগে পুরুষদের কাতার হবে,তারপর শিশুদের কাতার হবে,তারপর হিজড়াদের কাতার হবে,তারপর মহিলাদের কাতার হবে।   
,
★★তবে বর্তমান যামানায় শিশুদেরকে পুরুষদের কাতারের মাঝে মাঝে দাড় করাইতে হবে।
কারন এই সময়ে শিশুদের একসাথে এক কাতারে দাড় করাইলে মসজিদে হট্রগোল শুরু হয়ে যাবে,শিশুরা মারামারি,হাসাহাসি ইত্যাদি করবে,  তাই তাদেরকে পুরুষদের কাতারের মাঝে মাঝে রাখতে হবে।   

وفى تقريرات الرافعى- قال الرحمتى ربما يتعين فى زماننا ادخال الصبيان فى صفوف الرجال لأن المعهود منهم اذا اجتمع صبيان فاكثر فيبطل صلاة بعضهم ببعض وربما بعدى ضررهم الى افساد صلاة الرجال (رد المحتار-2/73  
যার সারমর্ম হলো বর্তমান যামানায় শিশুদেরকে পুরুষদের কাতারের মাঝে মাঝে দাড় করাবে।       

আরো জানুনঃ  

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ছোটরা যদি বালেগ বা ১০/১২ বছরের (তথা বালেগ হওয়ার নিকটতম বা বুঝমান)  হয়,তাহলে তাদেরকে এভাবে সরিয়ে পিছনের কাতারে পাঠানো ঠিক হবেনা। 
তবে যদি এর চেয়েও কম বয়সী শিশু হয়,তাহলে তাদের কে পিছনের কাতারে পাঠানো যাবে।
তবে তাদেরকে বড়দের কাতারে বড়দের মাঝে দাড় করানোই ভালো,এতে তারা দুষ্টমি করতে পারবেনা।

(০২)
নামাজ হবে,তবে এটি সুন্নাত তরীকা নয়।
তাই এক্ষেত্রে যদি কাতার পূর্ণ না হয়,তাহলে কাজটি মাকরুহ হবে।

(০৩)
অযু ছুটে গেলে নাকে হাত দিয়ে পিছনের কাতার আস্তে আস্তে ফাকা করে বের হয়ে গিয়ে অযু করে আসবে।
অযু করে আসার পর পিছনের কাতারে দাড়াবে।

(০৪)
না,এটি ওয়াজিব নামাজ নয়।
নফল নামাজ।

(০৫)
এটি শরীয়ত বহির্ভূত কথা।
এতে তাদের ঈমানের ক্ষতি হবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...