আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
98 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম
১/কেউ যদি বাবা মাকে সন্তানের সামনে অপমান করে বা গালি দেয় তখন সন্তানের করনিয় কি।

২/সন্তানের সামনে বাবা যদি মায়ের গায়ে হাত তোলে তখন সন্তানের করনিয় কি?যদি এই অবস্থায় বাবার সাথে তর্ক হয় এটা কি অন্যায় হবে?

৩/নিজের মা বোন দের নিয়ে কেউ বাজে মন্তব্য করলে বা তাদের দিকে আড় চোখে তাকালে তখন করনিয় কি?

৪/কোন কোন লোকের উপর কোন কোন দোষের জন্য হাত উঠানো বৈধ হবে ?

৫/আত্তিয়স্বজন দের মধ্যে কেউ যদি বাবা মাকে নিয়ে আপত্তিকর কথা বলে তাদের গায়ে হাত উঠায়।তাহলে তাদের সাথে কেমন আচারন হওয়া উচিত?

৬/কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষ যদি আমার কথায় কষ্ট পায় তাহলে আল্লাহ আমার উপর অসন্তুষ্ট হবেন না?

৭/গায়রত এর ব্যাপারে যদি একটু বুজিয়ে বলতেন।গায়রত কিভাবে প্রকাশ পায়?

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
মুসলিম মানেই উন্নত চরিত্রবান, নম্র, ভদ্র, শালীন ও ব্যক্তিত্ববান মানুষ। মুমিন ব্যক্তি কখনোই অশালীন, নোংরা ও অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করতে পারে না। এটা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। 

তাই তো ইসলামে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করাকে কবিরা গুনাহ, ফসেকি কাজ এবং মুনাফেকির স্বভাব হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

হাদিস শরীফে  এসেছে:

عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: أربع من كن فيه كان منافقا خالصا ومن كانت فيه خصلة منهن كانت فيه خصلة من النفاق حتى يدعها : إذا ائتمن خان، و إذا حدث كذب، وإذا عاهد غدر، و إذا خاصم فجر. (متفق عليه)

‘আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যার মধ্যে চারটি দোষ থাকবে সে নির্ভেজাল মুনাফিকে পরিণত হবে আর যার মধ্যে সেগুলোর মধ্যে থেকে একটি থাকবে সে তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে একটি মুনাফেকির নিদর্শন বিদ্যমান থাকবে। সেগুলো হল:
১. আমানত রাখা হলে খেয়ানত করে।
২. কথা বললে মিথ্যা বলে।
৩. প্রতিশ্রুতি দিলে বিশ্বাসঘাতকতা করে।
৪. এবং ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীল কথা বলে।” (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)

 অন্য হাদিসে আছে,
لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بالطعان، ولا اللعان، ولا الفاحش، ولا البذيء
“মুমিন কখনো দোষারোপ কারী, অভিশাপ দাতা, অশ্লীল ভাষী ও গালিগালাজ কারী হয় না।” (তিরমিজি, হাদিস নং : ২০৪৩


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি অন্যায় ভাবে বাবা মাকে সন্তানের সামনে গালি দেওয়া হয়,বা অপমান করা হয়, তাহলে তার জবাবে গালি না দিয়ে সামর্থ থাকলে তাদের ধমক ইত্যাদি দিয়ে বাবাকে নিয়ে স্থান ত্যাগ করা উচিত।
প্রয়োজনে মুরব্বিদের মাধ্যমে সমাধানে আনার চেষ্টা করতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَن أَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِه فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِه فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِه وَذٰلِكَ أَضْعَفُ الْإِيْمَانِ.

আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন শারী‘আত বিরোধী কার্যকলাপ হতে দেখে, সেটাকে যেন নিজ হাতে পরিবর্তন করে দেয়। যদি নিজ হাতে সেগুলো পরিবর্তন করার ক্ষমতা না থাকে, তাহলে মুখে নিষেধ করবে। আর যদি মুখে নিষেধ করারও সাধ্য না থাকে, তাহলে অন্তরে সেটা ঘৃণা করবে। এটা সবচেয়ে দুর্বল ঈমানের পরিচায়ক।

(সহীহ : মুসলিম ৭৮-(৪৯), আবূ দাঊদ ১১৪০, তিরমিযী ২১৭২ ইবনু মাজাহ ৪০১৩, নাসায়ী ৫০০৮, সহীহ আত্ তারগীব ২৩০২, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ৫৬৪৯, আহমাদ ১১১৫০, মুসনাদ আবূ ইয়া‘লা ১২০৩, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩০৭, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ১১৭৩৯, হিলইয়াতুল আওলিয়া ১০/২৮, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬৪২৩,মিশকাত ৫১৩৭।)

আরো জানুনঃ 

(০২)
এক্ষেত্রে এটি যদি অন্যায় ভাবে করা হয়,বাবা মা যদি মাজলুম হয়,তাহলে সন্তানের শক্তি সামর্থ থাকলে সেও হাত তুললে দোষনীয় হবেনা।
তবে হাত না তুলে আইনের সহায়তা নেওয়া উচিত।
এতেই উত্তম সমাধান মিলবে,ইনশাআল্লাহ। 

এ অবস্থায়েও বাবার সাথে তর্ক করা যাবেনা।

(০৩)  
তার শক্তি সামর্থ থাকলে তাদেরকে ধমকা ধমকি করতে পারে।
অথবা আইনের সহায়তা নিতে পারে।
বা মুরব্বিদের সহায়তা নিতে পারে।  

(০৪)
 নিজে যদি মাজলুম হয়,জালেম যদি গায়ে তুলে,তাহলে তার উপর হাত তোলা যাবে।
,
(০৫)
যদি হাত তোলা হয়,তাহলে ২ নং জবাব দ্রষ্টব্য।
আর যদি শুধু গালি বা অপমান করা হয়,তাহলে  
তাহলে ১ নং জবাব দ্রষ্টব্য।

(০৬)
আপনি যদি হক ও সত্যের পথে থাকেন,কাহারো গীবত না করেন,মিথ্যা না বলেন। 
তাহলে বান্দা অসন্তুষ্ট হলেও আল্লাহ সন্তুষ্ট থাকবেন।

(০৭)
গায়রত মানে আত্মমর্যাদাবোধ।
নিজের সামনে নিজের বোনকে গালি দিলে নিজের মধ্যে যেই আত্মমর্যাদাবোধ চলে আসে,নিজের মধ্যে যেই রাগ চলে আসে,এটিই গায়রত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...