আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
162 views
in সালাত(Prayer) by (16 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
আমার বাসা, হল থেকে ২৫০ কিমি দূরে। হল থেকে বাসা যাওয়ার সময় বাসার পৌছার আগ পর্যন্ত আমি নিজ জেলার মধ্যে থাকলেও কসর নামাজ পড়ে আসছি এতদিন।
এইবার বাসার যাওয়ার আগে আমি বাসা থেকে ৭৬ কিমি দূরে( হল থেকে ২৩৭ কিমি দূরে)   এক আত্নীয় এর বাসায় দুই রাত থেকে বাসায় যাব। আত্নীয় এর বাসায় থাকাকালীন কসর পড়বো?
আই ফাতওয়া আগে একটা প্রশ্ন করেছিলাম ওটার ভিত্তিতে কনফিউশনে পড়ে গেছি। আমাকে একজন বলেছেন নিজ এলাকায় প্রবেশের আগে পর্যন্ত মুসাফির। এখন নিজ এলাকা বলতে নিজ জেলা, শহর বা পাড়া যেকোনো কিছু হতে পারে। সফর পরিমান দূরের কোথাও এর উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হলেই অনেকে মুসাফির বলেন। এই জন্য আমি নিজ বাসায় প্রবেশের আগ পর্যন্ত নিজেকে মুসাফির ধরতাম। এই ধারনা সঠিক না হলে আমার আগের পড়া নামাজ গুলোর জন্য করনীয় কী
এই ব্যাপারে উস্তাজ একটা ক্লিয়ার ধারণা চাচ্ছি।
জাজাকাল্লাহ খাইরান

1 Answer

0 votes
by (560,820 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


কোনো মানুষ মুসাফির হওয়ার জন্য যে কয়টি শর্ত রয়েছে,তার মধ্যে অন্যতম একটি হলোঃ
নিজ এলাকাকে অতিক্রম করা।তথা নিজের শহর বা গ্রামের শেষ সীমানা পার হওয়ার পর কেউ মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে।
(রদ্দুল মুহতার ২/১২৮)।

সফরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবার পর যে শহরে বসবাস করছেন,বা যে গ্রামে বসবাস করছেন, সে শহর বা গ্রামের সিমানা অতিক্রম করার দ্বারাই আপনি মুসাফির বলে সাব্যস্ত হয়ে যাবেন। ততক্ষণ পর্যন্ত মুসাফির বলেই গণ্য হবেন যতক্ষণ আবার স্বীয় শহর বা গ্রামের সীমানা প্রবেশ না করেন।
,
আয়েশা রাযি. বলেন,
فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ

মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)

অপর হাদিসে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

قال في الدر (مع الرد، کتاب الصلاة باب صلاة المسافر: ۲/۵۹۹، ۶۰۰، ط: زکریا دیوبند): من خرج من عمارة موضع إقامتہ من جانب خروجہ وإن لم یخرج من الجانب الآخر.. قاصدًا... إھ 

সারমর্মঃ যেই দিক থেকে সে বাহির হবে,সেই দিক থেকে শহরের সীমা অতিক্রম করতে হবে,,,,


فى تنوير الابصار- (من خرج من عمارة موضع إقامته) قاصدا مسيرة ثلاثة أيام ولياليها بالسير الوسط مع الاستراحات المعتادة صلى الفرض الرباعي ركعتين حتى يدخل موضع مقامه أَوْ يَنْوِيَ إقَامَةَ نِصْفِ شَهْرٍ (الدر المختار، كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر-2/599-605، قاضى خان-1/164)

সারমর্মঃ কোনো ব্যাক্তি যদি তিন দিন তিন রাত সমপরিমাণ  দুরত্ব সফর করে,নিজ শহরের মৌজা থেকে বের হওয়া মাত্র ব্যাক্তি চার রাকাত ওয়ালা ফরজকে চার রাকাত করে আদায় করবে।


আরো জানুনঃ  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
প্রশ্নে উল্লেখিত আত্মীয়ের বাসায় থাকা অবস্থায় আপনি কসরের নামাজ আদায় করবেন।
,
আপনি যেই গ্রামে বসবাস করেন,বা যেই শহরে,সেই গ্রাম বা শহরের সীমানায় আসার আগ পর্যন্ত কসর করবেন।
একেবারে নিজ বাসায় প্রবেশের আগ পর্যন্ত মুসাফির ধরা যাবেনা।
 বরং এখানে নিজ শহর/গ্রাম উদ্দেশ্য। 
,
সুতরাং এতো কোনো নামাজ নিজ গ্রামে/শহরে আসার পরেও কসর করে থাকলে সেই নামাজ গুলির কাজা আদায় করুন।
সংখ্যা মনে না থাকলে আনুমানিক হিসেব করে সেটির কাজা আদায় করুন।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 118 views
...