উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ইসলামী শরিয়তের বিধান অনুসারে মুরতাদের জন্য ইহলৌকিক ও পারলৌকিক শাস্তি রয়েছে। মুরতাদের পরকালীন শাস্তির ফয়সালা হবে হাশরের ময়দানে। সেখানে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিজেই ফয়সালা করবেন। কিন্তু দুনিয়ার আদালতে কারো মনের অবস্থার ওপর বিচার করা যায় না। কারো মনের খবর নিশ্চিতভাবে জানাও সম্ভব নয়।
তাই দুনিয়ায় বিচার হয় বাহ্যিক অবস্থা বিবেচনা করে। কোনো মুনাফিক তথা ছদ্মবেশী মুসলমান নিজের কুফরি আকিদা ও বিশ্বাস লুকিয়ে রাখতে সক্ষম হলে বিচারকের সামনে তার ইরতিদাদ বা ধর্মত্যাগ প্রমাণিত হবে না। তখন পার্থিব কোনো শাস্তিও তার ওপর আপতিত হবে না। পার্থিব শাস্তি প্রয়োগ হবে কেবল ওই ব্যক্তির ওপর, যার মুরতাদ হওয়া স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে
এবং ন্যায়পরায়ণ বিচারকের কাছে তা প্রমাণিত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিচারকের করণীয় হলো, মুরতাদকে প্রথমে তাওবা করার সুযোগ দেবে। তাওবা করলে সেটা তার জন্য মঙ্গলজনক, অন্যথায় নির্ধারিত শাস্তি প্রয়োগ করবে। ইসলামে মুরতাদের পার্থিব একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এ বিষয়ে সব যুগের, সব মাজহাবের আলেমরা একমত পোষণ করেছেন।
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছে
,و یحبس ثلاثۃ أیام فإن أسلم،وإلا قتل‘
الفتاوی الھندیۃ : ۲؍ ۲۵۳۔
তাকে তিন দিন কয়েদ করে রাখা হবে,যাতে করে সে পুনরায় মুসলমান হয়ে যায়।
অন্যথায় তাকে হত্যা করে দেওয়া হবে।
,
★★ মুরতাদের মৃত্যুদণ্ড, "হিকমত"
মুরতাদ ব্যক্তি ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করে প্রকৃতপক্ষে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। যুদ্ধ কখনো বাগ্যুদ্ধে রূপ নেয়, কখনো সশস্ত্র লড়াইয়ে।
কঠিন বাক্যবিনিময়ের মধ্য দিয়েই সশস্ত্র লড়াইয়ের সূচনা হয়। কখনো কখনো সমর যুদ্ধের চেয়েও বাগ্যুদ্ধ বেশি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। একটি বক্তৃতা একটি বিপ্লব ঘটাতে পারে। একটি ঐতিহাসিক ভাষণ একটি দেশ জয় করতে পারে। বদলে দিতে পারে সমাজ কাঠামো। ছড়িয়ে দিতে পারে প্রবল উত্তাপ, দ্রোহের আগুন।
তাই জিহ্বা দিয়ে যে ‘যুদ্ধ’ হয়, তা সশস্ত্র সংগ্রাম থেকে কোনো অংশেই কম নয়। ইসলামে সব ধরনের মুরতাদের শাস্তিই মৃত্যুদণ্ড।
,
মুরতাদের মৃত্যুদণ্ডের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে আল্লামা ইবনুল কায়্যিম জাওজিয়্যাহ (রহ.) লিখেছেন, ‘ইরতিদাদের বা ধর্মত্যাগের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়াই যুক্তিসংগত। কারণ সমাজে মুরতাদের অবস্থান সংঘাত-সহিংসতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণ হয়ে থাকে।
এমন ব্যক্তির বেঁচে থাকার মধ্যে কোনো কল্যাণের আশা করা যায় না। সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিকল্প নেই।’ (ইলামুল মুওয়াক্যিইন ২/৮৪)
.
আরো জানতে পড়ুন
ফাতাওয়ায়ে খতমে নবুয়ত ৩/৩৯