আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
190 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাবা একটি রিয়্যেল স্টেট কোম্পনিতে টাকা বিনিয়োগ করে আয় করছে এটা কি হালাল হবে?
প্লিজ প্লিজ উত্তর দিবেন খুব চিন্তায় আছি।

কোম্পানি টি বড় বড় প্রকল্প নিয়ে কাজ করে, তারা কতগুলো জমি কিনে সেখানে বিল্ডিং করে প্লট আকারে বিক্রি করে।এই কাজে কোম্পানিতে যারা join করে তাদের বিনিয়োগের টাকা দিয়ে জমিগুলো কিনে,আর ভবিষ্যতে প্লট আকারে বিক্রি করে যে লাভ হবে সেটা আগেই অনুমান করে একটা নির্দিষ্ট পরিমান লাভের অংশ বিনিয়োগকারীদের দেয়া হয় (যেমন ১০০০০০ টাকা বিনিয়োগে ২৪০০ টাকা প্রতি মাসে)।যেহেতু ভবিষ্যতে এখানে লাভ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। কিন্তু যদি কোম্পানির লস হয় (যেমন বিল্ডিং ধসে পড়ল)তাহলে লস এর ভাগ ও বিনিয়োগকারীদের নিতে হবে।৪ বছর এর চুক্তিতে এভাবেই শুরু থেকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ লাভের অংশ এবং সাথে বিনিয়োগের আসল টাকার কিছু পরিমাণ ফেরত দিতে থাকবে,৪ বছরে পুরো আসল ফেরত দিবে + লাভের অংশ তো আছেই এভাবে ৪ বছর এ চুক্তি শেষ করবে।কেও চাইলে নতুন করে চুক্তি করতে পারে। আর যদি কেও চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই পুরো বিনিয়োগের টাকা উঠায় নেয় তাহলে নিতে পারবে কিন্তু লভ্যাংশ পাবে না।কোম্পানি এই লভ্যাংশ দেয় জমি কিনে প্লট বানানোর আগেই বুকিং বা বিক্রি হয়ে যায় তা থেকে। যদি লাভ অনুমান থেকে বেশি হয় সেটুকু কোম্পানি নিবে।

বিনিয়োগকারী যত বিনিয়োগ বাড়াবে,লভ্যাংশ তত বাড়তে থাকবে।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে,আমার বাবা এই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে প্রতি মাসে শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই আয় করছে এটা কি হালাল হবে?
যদি হারাম হয়ে থাকে বাবাকে কি করে সেটা বুঝাবো সেটাও একটু বলবেন প্লিজ।

জাজাকিল্লাহ খইরন।

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
রিবা বা সূদ কাকে বলে?
বর্ণিত রয়েছে  এ ব্যপারে উলামায়ে কেরামগণ একমত যে, প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তাই রিবা বা সুদ হিসেবে পরিগণিত হবে।
যেমন
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺣَﻔْﺺٌ، ﻋَﻦْ ﺃَﺷْﻌَﺚَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟْﺤَﻜَﻢِ، ﻋَﻦْ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻛُﻞُّ ﻗَﺮْﺽٍ ﺟَﺮَّ ﻣَﻨْﻔَﻌَﺔً، ﻓَﻬُﻮَ ﺭِﺑًﺎ » ﻣﺼﻨﻒ ﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺷﻴﺒﺔ 
তরজমাঃ-প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তাই রিবা বা সুদ। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বাহ-২০৬৯০)

মুনাফার শর্তে ঋণ দিলে তা রিবার অন্তর্ভুক্ত।তবে শর্ত ব্যতীত যদি ঋণদার ঋণ পরিশোধের সময় কিছুটা বেশী দিয়ে দিলে তা রিবার অন্তর্ভুক্ত হবে না।বরং তা বৈধ-ই হবে।

যেমন এক হাদীসে এসেছে
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
عن ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﻟِﺮَﺟُﻞٍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺳِﻦٌّ ﻣِﻦْ ﺍﻹِﺑِﻞِ ﻓَﺠَﺎﺀَﻩُ ﻳَﺘَﻘَﺎﺿَﺎﻩُ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﺃَﻋْﻄُﻮﻩُ ، ﻓَﻄَﻠَﺒُﻮﺍ ﺳِﻨَّﻪُ ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺠِﺪُﻭﺍ ﻟَﻪُ ﺇِﻻ ﺳِﻨًّﺎ ﻓَﻮْﻗَﻬَﺎ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ( ﺃَﻋْﻄُﻮﻩُ ، ﺇِﻥَّ ﺧِﻴَﺎﺭَﻛُﻢْ ﺃَﺣْﺴَﻨُﻜُﻢْ ﻗَﻀَﺎﺀً ) 
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে জনৈক ব্যক্তির একটি বাচ্ছা বয়সী উট পাওনা ছিলো,অতঃপর যখন সে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে এসে তা চাইলো।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ উনার পাওনা উনাকে বুঝিয়ে দাও।সাহাবায়ে কেরাম (সদকার মালের মধ্যে খুজে)উক্ত ব্যক্তির পাওনা কমবয়সী উট পেলেন না।বরং তার থেকে একটু বেশী বয়সী উট পেলেন।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেনঃ তোমরা তা তাকে দিয়ে দাও,কেননা তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই সর্বোত্তম, যে ঋণ পরিশোধের সময় উদারতা প্রদর্শন করে।তথা অতিরিক্ত দিয়ে দেয়। (সহীহ বুখারী-২৩৯৩,সহীহ মুসলিম-১৬০০)

মুহতারাম প্রশ্নকর্তা দ্বীনী ভাই!
আপনার বাবা এবং কম্পানি মিলে যদি লাভের একটা পার্সেন্টিজ ঠিক করে, এবং উভয় লাভে লোকসানে শরীক থাকে, পার্সেন্টিজ হিসেবে যত টাকা লাভ হওয়ার কথা,এবং লাভটা নিশ্চিত হলে, সেই টাকা থেকে নির্দিষ্ট একটা পরিমাণ আপনার বাবার নিকট আসলে, এবং লাভের অবশিষ্ট থাকা কম্পানি রেখে দিলে, এ পদ্ধতির ব্যবসা সুদের সংজ্ঞায় পড়ে না। সুতরাং আপনার বর্ণিত পদ্ধতি নাজায়েয হচ্ছেনা।তথাপি প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সংখ্যায় লাভের টাকা হওয়ায় সুদের একটা সংমিশ্রণ বুঝা যায়, এজন্য তাকওয়ার দাবী হল, এ জাতীয় ব্যবসায় না জড়ানো।


নু'মান ইবনে বশির বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি-
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,(কোনো জিনিষ)হালাল (হওয়া)পরিস্কার।(এবং কোনো জিনিষ) হারাম(হওয়া) ও পরিস্কার। হ্যা এ দুয়ের মধ্যে কিছু বিধান রয়েছে সাদৃশ্যপূর্ণ। যার সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই জানেনা।যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষ থেকে বেঁছে থাকল, সে যেন তার দ্বীন এবং ইজ্জতকে হেফাজত করে নিল। আর যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষে পতিত হল, সে যেন হারামে পতিত হল। যেমন রাখাল ক্ষেতের দেয়াল ঘেষে পশু চড়ালো।এখানে সম্ভাবনা রয়েছে যে, পশু ক্ষেতে নেমে যাবে। 
জেনে রাখ! প্রত্যেক বাদশারই একটি সীমান্তরেখা রয়েছে।এবং আল্লাহ যমীনে তার সীমারেখা হল,তার হারাম বিধি-বিধান।জেনে রাখ! শরীরে একটি মাংসপিণ্ড রয়েছে। যখন সেই মাংসপিণ্ড ভাল থাকে তখন সারা শরীর-ই ভাল থাকে।আর যখন সেই মাংসপিণ্ড নষ্ট হয়ে যায়,তখন সমস্ত শরীরই নষ্ট হয়ে যায়। সেই বস্তু হল,ক্বলব বা অন্তর।(সহীহ বুখারী-৫২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (712,400 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...