আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
253 views
in সালাত(Prayer) by (28 points)
হানাফি মাযহাবে মহিলাদের নামাজ নিয়ে সব প্রশ্ন:

১)মহিলারা কি নামাজের সেজদায় কনুই মিলিয়ে রাখবে নাকি কনুই লাগানো যাবে না?

২) বেতরের নামাজে ২রাকাতে বৈঠকে বসতে হয়? আর ২রাকাত পর  কি তাকবীর দিতে হয়?
৩)বিতরের ২রাকাত পরের তাকবীর কি সূরা ইখলাস পড়ে দিতে হবে? তাকবীর দেওয়া কি ওয়াজিব নাকি সুন্নত?

৪) এশারের নামাজে ১ম ৪ রাকাত সুন্নত পড়াটা যইফ হাদিস  দ্বারা প্রমাণিত শুনলাম।উস্তাদ এখন কি এই ৪রাকাত আদায় করবো নাকি ছেড়ে দিবো?
৫) মহিলারা নামাজের রুকুতে আঙুল ফাঁক রাখবে নাকি রাখবেনা?
৬) হানাফি মাযহাব অনুযায়ি তাশাহুদ পড়ার মাঝে আঙুল তোলার বিষয়টা জানতে চাই।আর দরুদ শরীফ পড়ার সময় কি আঙুল তুলে রাখবো? আর দরুদ শরীফের মাঝে আঙুল নাড়াতে হবে?
৭)হানাফি মাযহাবে মেয়েদের হাতের কব্জি, চুল,পায়ের কব্জি দেখা গেলে কি নামাজ ভঙ্গ হবে?

৮ নামাজের ১ম ২রাকাতে কোন ২টি সূরা পড়া উত্তম?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
https://www.ifatwa.info/498 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
নারী-পুরুষের মাঝে এরকম পার্থক্য সম্বলিত ইবাদত সমূহের অন্যতম হল নামায। তাকবীরে তাহরীমার জন্য হাত উঠানো, হাত বাঁধা, রুকু, সেজদা, প্রথম ও শেষ বৈঠক ইত্যাদী ক্ষেত্রগুলোতে পুরুষের সাথে নারীর পার্থক্য রয়েছে। তাদের সতরের পরিমাণ যেহেতো বেশি তাই যেভাবে তাদের সতর বেশী রক্ষা হয় সেদিকটিও বিবেচনা করা হয়েছে ক্ষেত্রগুলিতে। মুসলিম উম্মাহর প্রায় দেড় হাজার বছরের অবিচ্ছন্ন আমলের ধারা তাই প্রমাণ করে। বিষয়টি প্রমাণিত রাসূলে কারীম সাঃ এর হাদিস, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগণের ফতোয়া ও আছারের মাধ্যমে।
প্রথমে আমরা সহীহ হাদিস, তারপর পর্যায়ক্রমে সাহাবায়ে কিরাম ও তাবেয়ীদের ফতোয়া ও আছার উল্লেখ করছি।

হাদিস
3016 – ﺃﺧﺒﺮﻧﺎﻩ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺃﻧﺒﺄ ﺃﺑﻮ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﺍﻟﻔﺴﻮﻱ ﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻠﺆﻟﺆﻱ ﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ﺛﻨﺎ ﺳﻠﻴﻤﺎﻥ ﺑﻦ ﺩﺍﻭﺩ ﺃﻧﺒﺄ ﺑﻦ ﻭﻫﺐ ﺃﻧﺒﺄ ﺣﻴﻮﺓ ﺑﻦ ﺷﺮﻳﺢ ﻋﻦ ﺳﺎﻟﻢ ﺑﻦ ﻏﻴﻼﻥ ﻋﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺣﺒﻴﺐ : ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻣﺮ ﻋﻠﻰ ﺍﻣﺮﺃﺗﻴﻦ ﺗﺼﻠﻴﺎﻥ ﻓﻘﺎﻝ ﺇﺫﺍ ﺳﺠﺪﺗﻤﺎ ﻓﻀﻤﺎ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﻠﺤﻢ ﺇﻟﻰ ﺍﻷﺭﺽ ﻓﺈﻥ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﻟﻴﺴﺖ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﻛﺎﻟﺮﺟﻞ ( ﺳﻨﻦ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ ﻟﻠﺒﻴﻬﻘﻰ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﻴﺾ،
ﺑﺎﺏ ﻣﺎ ﻳﺴﺘﺤﺐ ﻟﻠﻤﺮﺃﺓ ﻣﻦ ﺗﺮﻙ ﺍﻟﺘﺠﺎﻓﻲ ﻓﻲ ﺍﻟﺮﻛﻮﻉ ﻭﺍﻟﺴﺠﻮﺩ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ 3016- )
তাবেয়ী ইয়াযীদ বিন আবী হাবীব রহ. বলেন-একবার রাসূল সা. দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশ্য) বললেন-“যখন সেজদা করবে তখন শরীর যমীনের সাথে মিলিয়ে দিবে। কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মত নয়। (সুনানুল বায়হাকী, হাদিস নং-৩০১৬, কিতাবুল মারাসিল লি ইমাম আবু দাউদ-৫৫, হাদিস নং-৮০)
প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আলেম নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ “আওনুল বারী” (১/৫২০) তে লিখেছেন-“উল্লেখিত হাদিসটি সকল ইমামদের উসুল অনুযায়ী দলীল হিসেবে পেশ করায় যোগ্য”।
মুহাদ্দিস মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল আমীর ইয়ামানী “সুবুলুস সালাম” শরহু বুলুগিল মারাম” গ্রন্থে (১/৩৫১-৩৫২) এই হাদিসকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করে পুরুষ ও মহিলার সেজদার পার্থক্য করেছেন।

নারী পুরুষের নামাযের পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/498

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
মহিলারা নামাজের সেজদায় কনুই মিলিয়ে রাখবে, অর্থাৎ মহিলারা মাঠির সাথে মিশে নামায পড়বে।

(২)
দু'রাকাতের পর তাকবীর দিতে হয় না, বরং তৃতীয় রাকাতে সূরায়ে ফাতেহা এবং ভিন্ন একটি সূরা পড়ার পর দু'আয়ে কুনুতের পূর্বে তাকবীর দিয়ে রা'ফে ইয়াদাইন করতে হয়।

(৩)
তাকবীর দেওয়া ওয়াজিব।ছুটে গেলে সাহু সিজদা দিতে হবে। বিতিরের নামাযে কোনো সূরা নির্দিষ্ট নয়।

(৪)
https://www.ifatwa.info/13295 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
এশার ফরযের পূর্বে ৪ রাকাত সুন্নতে নামায সুন্নতে গায়রে মু'আক্কাদা।
إنَّ التَّطَوُّعَ بِالْأَرْبَعِ قَبْلَ الْعِشَاءِ حَسَنٌ؛ لِأَنَّ التَّطَوُّعَ بِهَا لَمْ يَثْبُتْ أَنَّهُ مِنْ السُّنَنِ الرَّاتِبَةِ، وَلَوْ فَعَلَ ذَلِكَ فَحَسَنٌ؛ لِأَنَّ الْعِشَاءَ نَظِيرُ الظُّهْرِ فِي أَنَّهُ يَجُوزُ التَّطَوُّعُ قَبْلَهَا وَبَعْدَهَا،
এশার পূর্বে চার রাকাত নফল নামায পড়া উত্তম।এ চার রাকাত নামায হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।তবে যদি কেউ পড়ে নেয়,তাহলে উত্তম কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে।কেননা এ'শা জোহরের মতই।তাই যেভাবে জোহরের পূর্বে চার রাকাত পড়া হয়,ঠিক তেমনি এশার পূর্বেও চার রাকাত পড়া হবে। (বাদায়ে সানায়ে-১/২৮৫)

(৫)
মিলিয়ে রাখবে।

(৬)
https://www.ifatwa.info/1280 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
তাশাহুদের মধ্যে 'আশহাদু আন-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর সময়ে শাহাদত অঙ্গুলি উত্তোলন করা সুন্নাত।

পদ্ধতি হল-
সর্বকনিষ্ঠ অঙ্গুলি এবং তার পাশের অঙ্গুলি কে হাতের তালুর সাথে মিলিয়ে রাখা হবে।এবং মধ্যম অঙ্গুলি ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা গোল করে হালকা বানাবে।অতপর 'আশহাদু আন-লা-ইলাহা' পড়ার সময়ে অঙ্গুলিকে উত্তোলন করবে।(কেননা আশহাদু আন-লা-ইলাহা এর অর্থ হলো,কোনো মা'বুদ নাই।তাই অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করে বুঝাবে আমার আক্বিদা বিশ্বাসে শুধুমাত্র একজন মা'বুদ রয়েছেন,এবং তিনি হলেন,আমার আল্লাহ)

এবং ইল্লাল্লাহ বলার পর অঙ্গুলিকে আস্তে আস্তে আস্তে নামিয়ে ফেলবে।অতঃপর অঙ্গুলি সমূহের এই হালকাকে নামাযের শেষ পর্যন্ত রাখবে।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৫/৬৩৫)

(৭)
হানাফি মাযহাবে মেয়েদের হাতের কব্জি,পায়ের কব্জি দেখা গেলে নামাজ ভঙ্গ হবে না।তবে চুল দেখা গেলে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।

(৮)
নামাজের ১ম ২রাকাতে যেকোন ২টি সূরা পড়া যাবে।মাসনুন কিরাত দিয়ে নামায পড়া উত্তম।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/117


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 200 views
0 votes
1 answer 289 views
0 votes
1 answer 225 views
...