আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
106 views
in সালাত(Prayer) by (44 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাজ।
আমার ২ টা প্রশ্ন ঃ
১ঃ  ঢাকায় আমার বাবা মা, বড় বোন এবং তার হাজবেন্ড একই বাসায় থাকে, বাসা ভাড়া দেয় বড় বোন এবং তার হাজবেন্ড।
আমি এই অবস্থায় এই বাসায় গেলে মুকিম হবো নাকি মুসাফির?
২ঃ আমার বাবা আমাদের দেশের বাড়িতে গিয়ে জামাত আদায় করছেন। কিন্তু দেশের বাড়িতে আমাদের নিজস্ব বাড়িটি বছর দু এক আগেই বেচে দেওয়া হয়েছে, তার মানে এখন দেশের বাড়িতে আমাদের নিজের কোনো বাড়ি নেই।
আমার বাবা, আমার মা এর বাড়িতে গিয়ে উঠেছে, মানে আমার নানুর বাড়ি।
এ অবস্থায় আমার বাবা কি মুকিম নাকি মুসাফির  হবে?
জাযাকাল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (677,640 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) তে এক দিনের জন্য গেলেও পুরো নামাজ পড়তে হবে।
    
ব্যক্তি নিজের স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয়না। স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।

কেহ যদি নিজ আবাস স্থল থেকে ৭৭+ কিলোমিটার দুরত্বে কোথাও সফর করে , এবং সেখানে গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকাত নিয়ত করে,তাহলে ব্যাক্তি মুসাফির হয়ে যাবে।
সেখানে সে কসরের নামাজ আদায় করবে।
,

আয়েশা রাযি. বলেন,

فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ

মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)

আর যদি সেখানে গিয়ে ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি দিন থাকার নিয়ত করে অথবা এর কম দুরত্বে সফর করে,তাহলে ব্যাক্তি মুসাফির হবেনা।
তার কসর নামাজের সুযোগ নেই। 

سنن أبى داود -صلاة السفر باب متى يقصر المسافر (1 / 465)حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ يَحْيَى بْنِ يَزِيدَ الْهُنَائِىِّ قَالَ سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ عَنْ قَصْرِ الصَّلاَةِ فَقَالَ أَنَسٌ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- إِذَا خَرَجَ مَسِيرَةَ ثَلاَثَةِ أَمْيَالٍ أَوْ ثَلاَثَةِ فَرَاسِخَ – شُعْبَةُ شَكَّ – يُصَلِّى رَكْعَتَيْنِ.

সারমর্মঃ যখন তিন ফারছাখ সফরের নিয়ত করে,তাহলে কসরের নামাজ পড়তে পারবে।
.
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যেখানে থাকেন, যদি সেই বাসা আর ঢাকায় ভাড়া নেওয়া বাসার মাঝে ৭৮ কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি দুরত্বে হয়, তাহলে আপনি সেই ভাড়া নেওয়া ঢাকার বাসায় গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে মুসাফির হবেন। 
সেখানে কসরের নামাজ পড়বেন।।
,
আর যদি এতোটা দুরত্বে না হয়,অথবা ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি দিন থাকার নিয়ত করেন,তাহলে ঢাকার বাসাতে গিয়ে পূর্ণ নামাজই আদায় করবেন। 

(০২)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

যদি আপনার বাবা আপনার নানার সেই বাড়িকেই ওয়াতলে আসলী তথা মূল বাড়ি হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। অর্থাৎ সেখানেই তিনি স্থায়ী মূলত থাকবেন পরিবার নিয়ে।
আর নিজ দেশের বাড়িতে স্থায়ী ভাবে থাকার যদি কোনো নিয়ত না থাকে,স্থায়ী ভাবেই যদি দেশের বাসা ত্যাগ করে থাকে, তাহলে আপনার পিতা আপনার নানার বাসায় মুকিম হবেন।
তিনি পূর্ণ নামাজই আদায় করবেন। 
,
আর যদি তিনি আপনার নানার বাসায় স্থায়ী ভাবে থাকার নিয়য় না করেন,অল্প কয়েকদিন যদি থাকার নিয়ত করেন,তাহলে দেশের বাসা থেকে আপনার নানার বাসার মাঝের দুরত্ব দেখতে হবে।
যদি ৭৮ কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি দুরত্বে হয়, তাহলে আপনার বাবা আপনার নানার বাসায় গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে মুসাফির হবেন। 
সেখানে কসরের নামাজ পড়বেন।।
,
আর যদি এতোটা দুরত্বে না হয়,অথবা ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি দিন থাকার নিয়ত করেন,তাহলে আপনার নানার বাসাতে গিয়ে তিনি পূর্ণ নামাজই আদায় করবেন। 

فى رد المحتار- (الوطن الاصلى يبطل بمثله) ( قوله إذا لم يبق له بالأول أهل ) أي وإن بقي له فيه عقار قال في النهر : ولو نقل أهله ومتاعه وله دور في البلد لا تبقى وطنا له وقيل تبقى كذا في المحيط وغيره (رد المحتار-كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر، مطلب في الوطن الأصلي ووطن الإقامة-2/614)
সারমর্মঃ ওয়াতনে আসলিতে যদি স্থায়ী আর না থাকার নিয়ত করে,এবং  পরিবার সামানা যদি সেখানে আর না থাকে,তাহলে সেটা আর ওয়াতনে আসলি থাকবেনা। 
অন্যথায় সেটা ওয়াতনে আসলি হিসেবেই থাকবে।   

আরো জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...