আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
228 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (27 points)
edited by

১. "আরং" এর নামে তৈরি একটি লিংক (http://desertplentiful.top/aarong/tb.php?rmtybefc1643358731599) আমার এক আত্মীয় শেয়ার করে,এখানে ৪ টি প্রশ্ন উত্তর করলে কিছু প্রাইজ বক্স আসে,সেখানে ৩ বার চান্স থাকে,যেকোন এক বক্সে পুরষ্কার হিসেবে টাকা থাকে,সে টাকাওয়ালা বক্স কোনভাবে খুললে বলে আরো ২০ জনের সাথে শেয়ার করতে,তাহলে আমাকে উপহার পাঠানো হবে।আমার সে টাকা ওয়ালা বক্স খুলেছে ২য় বার এ।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে,এভাবে বক্স গুলো ওপেন করা,এটা কি হারামের পর্যায়ে পরে যায়,২০ জনের সাথে শেয়ার না করে আমি তখনি লিংক থেকে বের হয়ে গিয়েছি,চাইলে আপনারা উপরোক্ত লিংক থেকে পুরো ঘটনা দেখে নিতে পারেন।

২. আমি কিছু অনলাইন পত্রিকার আর্টিকেলে একটি কথা পরলাম,প্রতিদিন সকল মুসলিমের জন্যে ২৫-২৬ বার আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করলে নাকি সে ব্যক্তি মুস্তাজাবুদ দাওয়াহ হতে পারবে এবং এটি নাকি রাসুল(স.) বলেছেন( হাদিস এর রেফারেন্স দেওয়া ছিলো না),আমার ধারণা এটি বিদআত হতে পারে,আমি নিশ্চিত না,এ ব্যাপারে ইকটু বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি

৩. আল সিলসিলা আল সহিহা-২৯৪২ নং হাদিস কি সহিহ?

আমল করা নিরাপদ হবে?

৪. আবু দাউদ ৯৩৮(আন্তর্জাতিক নাম্বার) অনুসারে আমিন বলার মাধ্যমে দোয়ায় মোহর মেরে নেয়া হয় এবং এর দ্বারা দোয়া কবুলের সুসংবাদ গ্রহণ করতে বলেছেন রাসুল(স.)।

তাহাজ্জুদে দোয়া করতে করতে ফজরের ওয়াক্ত শুরু হয়ে গেলে,শুক্রবার আসর-মাগরিবের মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া করতে করতে মাগরিবের আজান হয়ে গেলো। উভয় ক্ষেত্রে আমি তখনো দোয়া শেষ করে আমিন বলতে পারিনি,এখন শুক্রবার মাগরিবের আজান মাত্র শুরু এমন সময়ে আমীন বললেও কি গ্রহণযোগ্য হবে,তাহাজ্জুদের সময় ফজরের ওয়াক্ত শুরু গেছে ২-১ মিনিট হয়েছে তখনো আমিন বললে কি গ্রহণযোগ্যতা পাবে নাকি ফিক্স করা সময় শেষ বলে এই দুই ক্ষেত্রে পরে আমিন বললেও লাভ হবেনা? 

৫. কোন এক মাগরিবের সালাতে ২ রাকাত পরেই শেষ বৈঠক করে সালাম ফিরিয়েছি নাকি ৩ রাকাত পড়েই শেষ বৈঠক করেছি তা একেবারেই মনে পরছিলো না,এমতাবস্থায় কি করণীয়? 

৬. হালাল টাকায় সাদকাহ করা হলেও অজ্ঞতার কারণে বিদআত করে ফেললে সাদকাহ বাতিল/অগ্রহণযোগ্য হবে? পরে যদি বিদআত থেকে তাওবাহ করি সাদকাহ কবুল হওয়ার কোন হুকুম কুরআন হাদিসের আলোকে পাওয়া যায়?

সাদকাহ বাতিল হওয়ার/হয়েছে কুরআন হাদিসের আলোকে বুঝার কোন লক্ষণ আছে কি?

জাজাকুমুল্লাহ খাইরান

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
https://www.ifatwa.info/1505 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
ক্ষেত্র বিশেষে লটারী বৈধ রয়েছে।সব রকম লটারী হারামের অন্তর্ভুক্ত না।বরং ঐ সমস্ত লটারী-ই হারাম যা দ্বারা কোনো হক্ব বা যোগ্যতা অথবা মালিকানা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কিন্তু যদি পূর্ব থেকেই হক্ব বা অধিকার প্রতিষ্টিত থাকে।কিন্তু উভয় সমান সমান হওয়ার ধরুণ কাউকে অগ্রাধিকার দেওয়া যাচ্ছেনা।এমতাবস্তায় একজনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য লটারির মাধ্যমে তাকে নির্ধারণ করা হচ্ছে। এ প্রকার লটারী বৈধ রয়েছে ।যা কোরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যেমনঃ- আল্লাহ তা'আলার বানী,
َ ﻭَﻣَﺎ ﻛُﻨﺖَ ﻟَﺪَﻳْﻬِﻢْ ﺇِﺫْ ﻳُﻠْﻘُﻮﻥ ﺃَﻗْﻼَﻣَﻬُﻢْ ﺃَﻳُّﻬُﻢْ ﻳَﻜْﻔُﻞُ ﻣَﺮْﻳَﻢَ ﻭَﻣَﺎ ﻛُﻨﺖَ ﻟَﺪَﻳْﻬِﻢْ ﺇِﺫْ ﻳَﺨْﺘَﺼِﻤُﻮﻥَ
"আপনি তখন তাদের কাছে উপস্থিত ছিলেন না। যখন তারা লটারীর মাধ্যমে প্রতিযোগিতা করছিল যে, কে মারইয়ামকে প্রতিপালন করবে। এবং আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা এ নিয়ে ঝগড়া করছিলো।"(সূরা-আলে ইমরান-৪৪)

মারয়ামের পিতা না থাকার ধরুণ সবাই মারয়ামকে লালন-পালনের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলো।তাদের মধ্য থেকে একেকজন একেক আঙ্গিকে নিজেকে লালনপালনের অগ্রাধিকারী ধাবী করছিলো।
যেহেতু তাদের সবার মধ্যে লালন-পালনের যোগ্যতা ও অধিকার প্রায় সামন সমান ছিলো।তাই লটারীর মাধ্যমে যাকারিয়া (আঃ)কে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছিলো। এখানে লালন-পালনের হক্বকে প্রমাণিত করা হচ্ছেনা।বরং লটারির মাধ্যমে ঝগড়াকে নিরসন করা হচ্ছিলো।

হাদীস শরীফে এসেছে,হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত,
عَنْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ( ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺳَﻔَﺮًﺍ ﺃَﻗْﺮَﻉَ ﺑَﻴْﻦَ ﻧِﺴَﺎﺋِﻪِ ، ﻓَﺄَﻳَّﺘُﻬُﻦَّ ﺧَﺮَﺝَ ﺳَﻬْﻤُﻬَﺎ ﺧَﺮَﺝَ ﺑِﻬَﺎ ﻣَﻌَﻪُ ) . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ( 2454 ) ﻭﻣﺴﻠﻢ ( 2770 ) .
নবীজী সাঃ যখনই সফরের ইচ্ছা করতেন,তখন সমস্ত বিবিগণের মধ্যে লটারী দিতেন, লটারীতে যার নাম উঠে আসত,তাকে নিয়েই সফরে বের হতেন।(সহীহ বুখারী -২৪৫৪,সহীহ মুসলীম-২৭৭০)

এখানেও নবীজী সাঃ এর সাথে সফরের অধিকার নিয়ে লটারী হচ্ছিল না। কেননা স্বামী সফরকালীন সময়ে স্ত্রীদের কোনো অধিকার নেই।যে কেউ যেতে পারবে।এখন লটারীর মাধ্যমে একজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।এরকম লটারী ইসলামী শরীয়তে বৈধ রয়েছে।

ইমাম নববী রাহ বলেন
  ﻭﻫﺬﺍ ﺍﻹﻗﺮﺍﻉ ﻋﻨﺪﻧﺎ ﻭﺍﺟﺐ
এরকম স্থানে লটারী আমাদের দৃষ্টিতে ওয়াজিব।(আল-মিনহাজ-১৫/২১০)

★সু-প্রিয় পাঠকবৃন্দ!
উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম,লটারী সর্বক্ষেত্রে নিষিদ্ধ নয়,বরং ক্ষেত্র বিশেষে বৈধও রয়েছে।

সুতরাং প্রশ্নে বর্ণিত সূরতে লটারি নাজায়েয হবে না।

(২)
মুস্তাবুদ দাওয়াহ হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো আ'মল কুরআন সুন্নাহে বর্ণিত হয়নি।

(৩)
জ্বী, সহীহ।তবে এর বাইরেও আরো অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে। আ'মলের ক্ষেত্রে মাযহাবের ব্যখ্যাকে অগ্রাধিকার দিবেন।

(৪)
জ্বী , এসময়েও আমীন বলতে পারবেন।আমীন যেকোনো মুহূর্তে বলা যায়।

(৫)
উক্ত নামাযকে আবার দোহড়িয়ে পড়ে নিন।

(৬)
সাদাকাহ কবুল হওয়ার বা না হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো আলামত নেই। অজ্ঞতার কারণে বিদ'আত করে নিলে এবং এত্থেকে তাওবাহ করে নিলে সাদাকাহ এর সওয়াব বাতিল হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...