আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
361 views
in পবিত্রতা (Purity) by (5 points)
Assalamualaikum wa rohmatullahi wa barokatuh

নামাজের মধ্যে, বায়ু নির্গমন অথবা রক্তখরণ হলে যদি ইমামতী করা ব্যাক্তির ওজু ছুটে যায়, তাহলে তখন ইমাম কি করবেন? আর পেছনের নামাযী বেক্তিগণ কি করবেন? তাদের কি নামাজ চালিয়ে যেতে হবে?

জাঝাকল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (57,270 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/1886/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

ইবনে নুজাইম হানাফি রাহ লিখেন,

وكان إماما فإنه يستخلف رجلا مكانه يأخذ بثوب رجل إلى المحراب أو يشير إليه والسنة أن يفعله محدودب الظهر واضعا يده في أنفه يوهم أنه قد رعف لينقطع عنه كلام الناس، ولو تكلم بطلت صلاتهم، ولو ترك ركوعا يشير بوضع يده على ركبتيه أو سجودا يشير بوضعها على جبهته أو قراءة يشير بوضعها على فمه، وإن بقي عليه ركعة واحدة يشير بأصبع واحدة، وإن كان اثنين فبأصبعين هذا إذا لم يعلم الخليفة ذلك أما إذا علم فلا حاجة إلى ذلك ولسجدة التلاوة بوضع أصبعه على الجبهة واللسان وللسهو على صدره وقيل يحول رأسه يمينا وشمالا كذا في الظهيرية،

যদি ইমামের অজু ভেঙ্গে যায়,তাহলে তিনি একজন খলিফা নির্ধারণ করবেন।অর্থাৎ পিছন থেকে কারো কাপড় ধরে মেহরাবে নিয়ে আসবেন।অথবা মেহরাবের দিকে ইশারা করবেন।সুন্নাহ হলো,তিনি কুজো পিঠে নাকে হাত দিয়ে খলিফা নির্ধারণ করবেন।যাতেকরে লোকজন নাকের সমস্যা বুঝে ভিন্ন কোনো কথাবার্তায় লিপ্ত না হয়।যদি ইমাম কথা বলে ফেলেন, তাহলে সবার নামাযই বাতিল বলে গণ্য হবে।যদি উনি রুকুকে ছেড়ে দেন,তাহলে হাটুতে হাত রাখবেন,যদি সেজদাকে ছেড়ে যান,তাহলে হাত কপালে রাখবেন।যদি কিরাত ছেড়ে দেন তাহলে আঙ্গুলকে মুখে রাখবেন।যদি উনি এক রা'কাত কে ছেড়ে দেন,তাহলে এক আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করবেন।যদি দুই রা'কাত ছেড়ে দেন তাহলে দুই আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করবেন।

এটা তখনই যখন খলিফা এগুলো সম্পর্কে অবগত থাকবেন না।যদি খলিফা এ সম্পর্কে অবগত থাকেন,(তথা প্রথম থেকেই নামাযে) তাহলে এ সমস্ত ইশারার কোনো প্রয়োজন নেই।সেজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব থাকলে কপালে এবং জবানে আঙ্গুল রাখবেন।সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব থাকলে সিনায় হাত রাখবেন।কেউ কেউ এক্ষেত্রে ডানে বামে মাথা হিলানোর কথাও বলেছেন।

 ثم الاستخلاف ليس بمتعين حتى لو كان الماء في المسجد فإنه يتوضأ ويبني ولا حاجة إلى الاستخلاف كما ذكره الشارح وإذا لم يكن في المسجد فالأفضل الاستخلاف

খলিফা নির্ধারণ নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নয়।সুতরাং যদি মসজিদে পানি বিদ্যমান থাকে,তাহলে তিনি অজু করবেন,এবং বিনা(এসে অবশিষ্ট নামায পড়া) করবেন।তখন খলিফা নির্ধারণের কোনো প্রয়োজনিয়তা থাকবে না।যদি মসজিদে পানি না থাকে তাহলে খলিফা নির্ধারণই উত্তম হবে।(বাহরুর রায়েক-১/৩৮৯)

ইমাম যে সূরা পড়তেছিলেন,যদি মুক্তাদির সেই সূরা স্বরণ না থাকে,তাহলে উনি ভিন্ন সূরাও পড়তে পারবেন।ইমাম সাহেব যদি ওয়াজিব পরিমাণ কেরাতকে আদায় করে নিয়ে থাকেন,তাহলে খলিফা তাৎক্ষণিক রুকুতে চলে যেতে পারবেন।(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-৩/২৬৪)

আমর ইবনুল হারেস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নামাজরত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত বের হলে কী করণীয় এ সম্পর্কে উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি. বলেন, يَنْفَتِلُ فَيَتَوَضَّأُ، ثُمَّ يَرْجِعُ فَيُصَلِّي সে অযুর জন্য বের হয়ে যাবে এবং অযু করে আসবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৫৯৫০)

ইবরাহিম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

أَنَّ عَلْقَمَةَ رَعَفَ فِي الصَّلاَةِ، فَأَخَذَ بِيَدِ رَجُلٍ فَقَدَّمَهُ، ثُمَّ ذَهَبَ، فَتَوَضَّأَ، ثُمَّ جَاءَ فَبَنَى عَلَى مَا بَقِيَ مِنْ صَلاَتِهِ

অর্থাৎ, আলকামার নামাজে নাক থেকে রক্ত বের হয়েছে, তখন তিনি এক ব্যক্তির হাত ধরে ইমামতির স্থানে দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং তিনি বের হয়ে গিয়ে অযু করে আসলেন। তারপর বাকি নামাজে বেনা করছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৫৯৫৬)

হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব হেদায়াতে আছে

ومن سبقه الحدث في الصلاة انصرف فإن كان إماما استخلف وتوضأ وبنى

অর্থাৎ, যে ব্যক্তির নামাযে হদস হবে অর্থাৎ নামাযে অযু চলে যাবে সে ফিরে আসবে। সে যদি ইমাম হয় তাহলে সে একজন প্রতিনিধি বানাবে এবং অযু করবে এবং তার নামাযে বেনা করবে। (হেদায়া: ১/৫৯)

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!

জামাতে নামাজ পড়া অবস্থায় ওজু ছুটে গেলে তৎক্ষণাৎ ওজুর জন্য বের হয়ে যেতে হবে। সুতরাং ফেতনার আশঙ্কায় অযু ছাড়া নামাজের অনুমতি নেই। বরং নামাযে যদি ইমাম সাহেবের অযু ভেঙ্গে যায় তাহলে তিনি কিরাত শুদ্ধ আছে এমন কাউকে তার প্রতিনিধি বানাবেন। প্রতিনিধি বাকি নামাজ মুসল্লীদের নিয়ে আদায় করবে। ইমাম সাহেব অযু করে এসে তার ইকতেদা করবেন।

নামায যদি জাহরি হয়,তাহলে ইমাম যে সূরা বা আয়াতকে রেখে যাবেন,খলিফা সেখান থেকে পড়বেন।যদি ইমাম ওয়াজিব পরিমাণ পড়ে নিয়ে থাকেন,তাহলে তখন খলিফা চাইলে কেরাত পড়তেও পারেন,আবার রুকুতে চলে যেতেও পারেন।

আর যদি নামায সির্রি হয়, তাহলে ওয়াজিব কেরাত বাকী থাকলে ইমাম মূখে হাত দিবেন,তখন খলিফা প্রথম থেকেই ওয়াজিব কেরাত তথা সূরা ফাতেহা সহ আরেকটি সূরা পড়বেন।এবং তারপর ধারাবাহিক নামাযকে সমাপ্ত করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 117 views
0 votes
1 answer 111 views
...