আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
485 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
আস-সালামু আলাইকুম। একটা সময় আমি অ্যানিমেশন ভিডিও বানানো নিয়ে অনেক আগ্রহি ছিলাম।আমি এই কাজকে উপার্জনের একটি মাধ্যম হিসাবে গ্রহন করতে চেয়েছিলাম। এবং অ্যানিমেশন ভিডিও বানানো শেখার জন্য অনেক সময় ব্যয় করি। এবং অনেক কষ্টে গছানো টাকা আমি এর জন্য বায় করি। কিন্তু আমি নিশ্চিত ছিলাম না যে এই কাজটা কি ঠিক হবে কি না। তো আমি বন্ধুর কাছে এই বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। সে আমাকে বলল যে "এই কাজটি অবশ্যই জায়েজ হবে না। ছবি ফটো ও মুর্তি ভাস্কর্য সবকিছুই হারাম। " এর পর সে আমাকে সেই সম্পকিত হাদিসটি জানালো। তারপর সে আমাকে বুদ্ধি দিল যে আমি যদি আমার অ্যানিমেশন ভিডিওতে বিভিন্ন চরিত্রকে এমন করে তৈরি করি জাতে দেখে তাদের পুরোপুরি মানুষ না হয় তাহলে সমস্যা নাই। অর্থাৎ হয়তো তাদের নাক বা কান বা চোখ বাদ দিলাম এবং তাদের তাদের শারীরিক আকৃতিতে মানুষের গুনাগুন খুব কম। এমন ভাবে তৈরি করলাম জাতে কোনো ভাবেই তাদের প্রকৃত মানুষের সাথে তুলনা করা যায় না। কিন্তু এই বক্তবের সাথে এই সম্পকিত কোনো হাদিস সেই সময় সে বলতে পারে নি।

এর ১ দিন পরই আমি ইউটিউব থেকে এই ভাইয়ের চ্যানেল (https://www.youtube.com/c/BanglaFreeQuranEducation/featured) খুজে পাই। এই চ্যানেল এ ভাইটি ইসলাম প্রচার করছে অ্যানিমেশন ভিডিও এর মাধ্যমে। নিশ্চয়ই ভাইটি এই কাজটি করার পূর্বে ভালমতো খোঁজ করে নিয়েছেন যে এই কাজটি করা যাবে কি না।
তো আমি এখন সিধান্তহীনতায় ভুগছি যে আমি এখন কি করব।
উল্লেখ্যঃ আমি যেই ধরনের ভিডিও বানাতাম সেই ভিডিও তে হইত এর থেকেও কম গুনাগুন চরিত্র গুলকে দিতাম কিন্তু এই ভাই এর মত ইসলাম প্রচারের কাজ এ অ্যানিমেশন ভিডিও কে ব্যবহার করতাম না। তবে তার মানে এই না যে কোন হারাম বিষয় প্রচার করতাম।
তো আমি কি অ্যানিমেশন ভিডিও বানানো?

1 Answer

+1 vote
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


https://ifatwa.info/23411/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,  তাসবীর বা ফটো হারাম।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর(রা.)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " إِنَّ الَّذِينَ يَصْنَعُونَ هَذِهِ الصُّوَرَ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ، يُقَالُ لَهُمْ: أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ "

রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন,যারা ফটো বানায়, কিয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদের উদ্দেশ্যে বলা হবে,যা তোমরা বানিয়েছ তাতে জীবন দাও।[সহীহ বুখারী-৫৯৫১]

আরো জানুন-https://www.ifatwa.info/2253

কিন্তু মাথা কর্তিত থাকলে সেই ছবি হারামের হুকুম থেকে বাহির হয়ে যাবে।

যেমনঃ হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ : " ﺍﻟﺼُّﻮﺭَﺓُ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱُ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗُﻄِﻊَ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱُ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﺑِﺼُﻮﺭَﺓٍ ."
প্রাণীর মাথা-ই হল মূলত ছবি তথা প্রাণীর মাথাটাই ছবির উল্লেখযোগ্য অংশ।যখন কোনো ছবির অাকৃতি থেকে মাথাকে কেটে ফেলা হবে,তখন সেটা যেন কোনো ছবিই না।(সুনানে বায়হাক্বী-১৪৫৮০)

যেহেতু মাথা ছাড়া কোনো প্রাণী জীবিত থাকতে পারেনা,তাই বলা হচ্ছে মাথা কাটা থাকলে সেটা ছবির হুকুমের আওতাধীন হবেনা।

★সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এনিমেশন ভিডিওতে যদি বাদ্য-বাজনা না থাকে,চোখ,কান মুখ,না থাকে মহিলার ছবি না থাকে,তাহলে বৈধ ভিডিও হলে তাহা বানানো জায়েজ বলে অনেক উলামায়ে কেরামগন বলেছেন।       

তবে অনেক এনিমেশন সম্পর্কে একদিকে চিন্তা করলে দেখা যায় যে, তাতে পূর্ণ অবয়ব বুঝা যাচ্ছে,আবার অন্যদিকে চিন্তা করলে দেখা যায় যে, তাতে পূর্ণ অবয়ব বুঝা যাচ্ছে না।তাই এগুলো সন্দেহপূর্ণ। আর সন্দেহপূর্ণ জিনিষ থেকে বেঁচে থাকাই তাকওয়ার নিকটবর্তী।

হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।

ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ 

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)

সুতরাং আপনি এগুলি বানানো থেকে বিরত থাকবেন।
এভাবে ইনকাম না করে অন্য কোনো বৈধ উপায়ে ইনকাম করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...