আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
406 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (102 points)
ইউটিউবে কিছু চ্যানেল এ ব্লগ এর পাশাপাশি নানান হাসির ভিডিও বানানো হয়।মানুষকে হাসানোর জন্য ইয়ারকি করে কিছু কিসসা জোকস বলা হোয় যা বাস্তব না। এমন ভিডিও বানানো ও দেখার ব্যাপারে শরিয়তের হুকুম কি জানতে চাই।

1 Answer

0 votes
by (707,240 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

 জবাবঃ- 
ভিডিও সম্পর্কে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।শুধুমাত্র ওয়াজ-নসিহত তথা দাওয়া মূলক কাজের জন্য শরীয়তের অন্যান্য বিধি-বিধান কে আন্তরিকতার সাথে পালন পূর্বক উলামায়ে কেরাম রূখসত দিয়ে থাকেন। মিথ্যা বলা মহাপাপ।রাসূলুল্লাহ সাঃ জীবনে কখনো মিথ্যা বলেননি।এমনকি মিথ্যা পরিহারকে সর্বোত্তম আ'মল বলে হাদীসে ঘোষিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ নিজে মজাক করেছেন, কিন্তু মিথ্যা পরিহার করে। রাসূলুল্লাহ সাঃ একবার এক বৃদ্ধাকে বলেন, কোনো বুড়ো মানুষ তো জান্নাতে যাবে না। বেচারী কান্না শুরু করে দিলে তিনি বলেন, বুড়িকে তো আল্লাহ জোয়ান বানিয়ে জান্নাতে দিবেন। 
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
 «وَيْلٌ لِلَّذِي يُحَدِّثُ بِالحَدِيثِ لِيُضْحِكَ بِهِ القَوْمَ فَيَكْذِبُ، وَيْلٌ لَهُ وَيْلٌ لَهُ»
 ‘‘যে ব্যক্তি মানুষ হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে তার জন্য ধ্বংস! তার জন্য ধ্বংস! তার জন্য ধ্বংস!’’ (তিরমিযী-২৩১৫; আবূ দাউদ-৪৯৯০) 
 অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
 «أَنَا زَعِيمٌ بِبَيْتٍ فِي رَبَضِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْمِرَاءَ وَإِنْ كَانَ مُحِقًّا، وَبِبَيْتٍ فِي وَسَطِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْكَذِبَ وَإِنْ كَانَ مَازِحًا وَبِبَيْتٍ فِي أَعْلَى الْجَنَّةِ لِمَنْ حَسَّنَ خُلُقَهُ»
 ‘‘যে ব্যক্তি সর্বদা মিথ্যা বর্জন করে, মস্কারা বা কৌতুক করতেও মিথ্যা বলে না, তার জন্য জান্নাতের মধ্যদেশে একটি বাড়ির জন্য আমি দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।’’ (আবূ দাউদ হাদীস নং ৪৮০০) 

 কৌতুক করে কাউকে ভয় পাইয়ে দেওয়াও জায়েয হবে না।এক সফরে সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ -এর সাথে ছিলেন। একজন সাহাবী ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তখন অন্য একজন গিয়ে তার রশিটি নিয়ে আসেন। এতে ঘুমন্ত ব্যক্তি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠে পড়েন। তার ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থা দেখে সাহাবীগণ হেসে উঠেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা হাসছ কেন? তারা ঘটনাটি বললে তিনি বলেন: «لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يُرَوِّعَ مُسْلِمًا» ‘‘কোনো মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে, সে অন্য মুসলিমকে ভয় পাইয়ে দিবে।’’(আবূ দাউদ-৫০০৪) 

 কোনো খবর শোনার পর তাহক্বীক না করে প্রচার করাও মিথ্যার একটি প্রকার।রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
 «كَفَى بِالْمَرْءِ كَذِبًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِعَ» ‘‘
একজন মানুষের মিথ্যাবাদি হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনবে তাই বলবে।’’ ( সহীহ মুসলিম১/১০-১১) 

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্যবাদীতা সম্পর্কে বলেন:
 «عَلَيْكُمْ بِالصِّدْقِ، فَإِنَّ الصِّدْقَ يَهْدِي إِلَى الْبِرِّ، وَإِنَّ الْبِرَّ يَهْدِي إِلَى الْجَنَّةِ، وَمَا يَزَالُ الرَّجُلُ يَصْدُقُ وَيَتَحَرَّى الصِّدْقَ حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللهِ صِدِّيقًا، وَإِيَّاكُمْ وَالْكَذِبَ، فَإِنَّ الْكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الْفُجُورِ، وَإِنَّ الْفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ، وَمَا يَزَالُ الرَّجُلُ يَكْذِبُ وَيَتَحَرَّى الْكَذِبَ حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللهِ كَذَّابًا»
 ‘‘তোমরা সর্বদা সত্য আঁকড়ে ধরবে; কারণ সত্য পুণ্যের দিকে ধাবিত করে আর পুণ্য জান্নাতে নিয়ে যায়। একজন মানুষ যখন সর্বদা সত্য বলতে থাকে এবং সত্য বলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে তখন সে এক পর্যায়ে আল্লাহর কাছে ‘‘সিদ্দীক’’ বা মহাসত্যবাদী বলে লিখিত হয়ে যায়। আর তোমরা মিথ্যা সর্বোতভাবে বর্জন করবে। কারণ মিথ্যা পাপের পথে পরিচালিত করে এবং পাপ জাহান্নামে নিয়ে যায়। একজন মানুষ যখন মিথ্যা বলে এবং মিথ্যা বলার সুযোগ খুঁজে বেড়ায় তখন সে এক পর্যায়ে আল্লাহর নিকট মহামিথ্যাবাদী বলে লিখিত হয়ে যায়। (সহীহ মুসলিম-২৬০৭) 

 সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
 মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে কৌতুক করা জোকস তৈরী করা কখনো জায়েয হবে না।তাছাড়া অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম ইউটিউব এডসেন্স সম্পর্কে বলেন,বেপর্দা ও হারাম পণ্যর শো করার কারণে এডসেন্স সন্দেহপূর্ণ জিনিষ।আর সন্দেহপূর্ণ জিনিষ থেকে বেঁচে থাকাই তাকওয়ার দাবী। সুতরাং এমন ভিডিও বানিয়ে মানুষকে হাসানো এবং ইনকাম না করাই শ্রেয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...