আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
135 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (17 points)
আসসালামু আলাইকুম।

  আমার বয়স ১৭ বছর।আমি ছেলে।আমি জেনারেল লাইনে পড়েছি।  আমি কুরআনের অর্থ বুঝি না। এজন্য আমার খুব খারাপ লাগে। আমি অর্থ বুঝে কুরআন পড়তে চাই।এখন মাদরাসায় যাওয়ার সুযোগ নেই।     আমি হারাম থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করি।
আমার জন্য কি ইউটিউবে আরবি Ertugrul সিরিজ     দেখা জায়েজ হবে? শুধু আরবি শিখার উদ্দেশ্য। Ertrugrul সিরিজটিতে  Hollywood, Bollywood এর  মতো খারাপ দৃশ্য বেশি নেই। নারীরাও বলিউডের মতো বেশি খোলামেলা থাকে না।এটিতে মিউজিক আছে।বেগানা নারীকে কিছ করা বা জড়িয়ে ধরার মতো দৃশ্য আছে। কিন্তু আমি শুধু আরবি ভাষা শিখার উদ্দেশ্যে সিরিজ দেখতে চাই।

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

 লাইভ সম্প্রচার জায়েয এটা নিয়ে কোনো মতবিরোধ নেই।রেকর্ড ভিডিও নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। মুফতী তাক্বী উসমানী রেকর্ড ভিডিওকে তাসবীর(যা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম)এর আওতাধীন করতে ইতস্ততাবোধ করেছেন। উনি উনার অমরগ্রন্থ তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিমে লিখেন,

ﻭﺍﻣﺎ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺘﻰ ﻟﻴﺲ ﻟﻬﺎ ﺛﺒﺎﺕ ﻭﺍﺳﺘﻘﺮﺍﺭ، ﻭﻟﻴﺴﺖ ﻣﻨﻘﻮﺷﺔ ﻋﻠﻰ ﺷﻴﺊ ﻳﺼﻔﺔ ﺩﺍﺋﻤﺔ ﻓﺈﻧﻬﺎ ﺑﺎﻟﻈﻞ ﺍﺷﺒﻪ (ﺍﻟﻰ ﻗﻮﻟﻪ) ﻓﺎﻥ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﻻ ﺗﺴﺘﻘﻮ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻜﻴﺴﺮﺍ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺸﺎﺷﺔ ﻭﺗﻈﻬﺮ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺑﺘﺮﺗﻴﺒﻬﺎ ﺍﻷﺻﻠﻰ ﺛﻢ ﺗﻔﺘﻰ ﻭﺗﺰﻭﻝ،

 ভাবার্থ-  ঐ ছবি যার কোনো স্থায়িত্ব বা দীর্ঘতা নেই, এবং যা কোনো জিনিষের উপর স্থায়ী অঙ্কিত ও নয়।সেটা ছায়ার অধিকতম নিকটবর্তী। কেননা ছবি স্কীনে অবশিষ্ট থাকে না বরং তা মেমোরি বা রিলে সংরক্ষিত ধারাবাহিকার সাথে স্কীনে আসে আবার তা দূতই চলে যায়।(তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম-৪/১৬৪)

 দ্বীনী প্রচার প্রসার এর উদ্দেশ্যে কোনো ফিল্ম তৈরী হলে এবং তাতে কোনো প্রকার হারাম জিনিষ যেমন গান-বাদ্য, নারী দৃশ্য ইত্যাদি না থাকলে, অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।(জাদীদ ফেকহী মাসাঈল;১/২৩৬)

উক্ত বিষয়ে দারুল উলুম দেওবন্দের জবাব হলো, নাটক অথবা ফিল্ম যাই বলিনা কেন, তাতে ভিডিওগ্রাফী, নাচ-গান ও বেগানা নারীদের উপস্থিতি বিদ্যমান। যার সবই শরিয়তের দৃষ্টিতে অবৈধ। ছবি নির্মাতাদের ব্যাপারে হাদিসের স্পষ্ট ভাষ্য- ছবি নির্মাতাদের কিয়ামতের দিন প্রচণ্ড শাস্তি দেয়া হবে। এবং সে যা তৈরি করেছে তাকে জীবন দিতে বলা হবে। (সহিহ বুখারি, ছবি নির্মাণকারীদের শাস্তি সম্পর্কিত হাদিস :৫৯৫)

মিউজিকের ব্যাপারে নবুয়তের পাক জবানে উচ্চারিত হয়েছে ‘আল্লাহ তায়ালা আমাকে পৃথিবীবাসীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছেন। এবং অনর্থক কাজ, খেলাধুলা ও গান-বাজনার সরঞ্জামাদি ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছেন।’ (মিশকাত শরিফ, শাস্তি ও মদ সম্পর্কিত হাদীস, তৃতীয় অধ্যায়)

বেগানা নারীদের সাথে পর্দার ব্যাপারে হাদিসে যা বর্ণিত হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মুসলিম শাসকদের জীবনীনির্ভর নাটক ও সিরিয়ালের আরেকটা ক্ষতির দিক হল অনেকেই এসব সিরিয়াল দেখাকে গুনাহ মনে করেন না; অথবা কেউ কেউ এই গুনাহকে হালকা মনে করেন। আর গুনাহকে গুনাহ মনে না করা বা হালকা মনে করা কবিরা গুনাহ। এছাড়াও ধারাবাহিক সিরিয়াল দেখতে গিয়ে সময়ের অপচয়, নামাজ কাযা হওয়াসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে অমনোযোগী হওয়ার সমূহ সম্ভবনা থাকে। যা সব অনিষ্ঠ ও অশান্তির মূল বলেই বিবেচিত। কোন বৈধ খেলাধুলার প্রতি আসক্তি ফরজ, ওয়াজিব পালনে অলসতা সৃষ্টি করলে তাও নাজায়েজ বলে গণ্য হয়। আর ইতিহাসনির্ভর সিরিয়ালগুলোতে দর্শক চাহিদা বাড়াতে অনেক ক্ষেত্রে ইতিহাসের প্রধান চরিত্রগুলোর ব্যাপারে মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার সম্ভবনা থাকে।

এককথায় প্রশ্নে উল্লেখিত সিরিয়ালগুলোতে ভিডিও, মিউজিকসহ নারীর অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকায় তা দেখা নাজায়েজ। গুনাহকে হালকা মনে করে তা দেখা, ফরজ ওয়াজিব পালনে উদাসীনতাসহ অন্যান্য গুনাহে লিপ্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকায় তা হারাম। আপনার শেষ কথার প্রেক্ষিতে নিবেদন, এ সিরিয়ালগুলো অশ্লীল সিনেমা থেকে বাঁচার মাধ্যম হতে পারে না। কারণ এই সিরিয়াল নিজেই শরিয়তের দৃষ্টিতে অবৈধ। বলা যায়, দুটোতেই বিষ মেশানো একটাতে একটু কম আরেকটাতে বেশি। তাই দুটো থেকেই বেঁচে থাকার চিন্তা করা অবশ্যক। আর এ থেকে বাঁচা মানুষের ইচ্ছা শক্তির উপরই নির্ভর করে। অবৈধ পন্থা অবলম্বনের কোন প্রয়োজন নেই।’

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 প্রশ্নে বর্ণিত সূরতে মুভি দেখাকে কখনো জায়েয বলা যাবে না।কেননা নারীদেরকে দেখা,ও তাদের আওয়াজ শ্রবণ করা সম্পূর্ণই হারাম । হ্যাঁ যদি কোন নারীর দৃশ্য না থাকে , মিউজিক ও গান না থাকে তাহলে এমন সিনারী দেখার অনুমতি আছে । কিন্তু সাধারণত এমন মুভি পাওয়া যায় না । বিধায় আরবী ভাষা বা কুরআনের অর্থ শেখার জন্য বর্তমানে বিভিন্ন কোর্স চালু রয়েছে আপনি চাইল নির্ভরযোগ্য কোন কোর্সে ভর্তি হয়ে তা শিখতে পারেন । অথবা কোন উস্তাদের থেকে ব্যক্তিগত ভাবেও শিখতে পারেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...