আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
283 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (15 points)
ইসলামে চুপ থাকার গুরুত্ব ও ফযীলত জানতে চাই।
ইসলামে চুপ থাকার গুরুত্ব ও ফযীলত জানতে চাই।

ইসলামে চুপ থাকার গুরুত্ব ও ফযীলত জানতে চাই।

ইসলামে চুপ থাকার গুরুত্ব ও ফযীলত জানতে চাই।

ইসলামে চুপ থাকার গুরুত্ব ও ফযীলত জানতে চাই।

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

স্বল্পভাষিতা বা কম কথা বলা মানুষের মহৎ গুণগুলোর একটি। এ অভ্যাস বিপদ থেকে বেঁচে থাকার মন্ত্রবিশেষ। দুনিয়ার জীবনে মানুষ নিজ হাতে সৃষ্ট যত বিপদে পড়ে অনেকাংশেই সেগুলো তার কথার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে থাকে। পাশাপাশি এর পরকালীন অনিষ্ট তো রয়েছেই। দুনিয়া ও পরকালের সার্বিক কল্যাণের কথা বিবেচনা করে স্বভাবধর্ম ইসলামে স্বল্পভাষিতাকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

 

হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে এর নানাবিধ উপকার ও গুরুত্বের কথা। পাশাপাশি রয়েছে বেশি কথা বলার ক্ষতির বিষয়টিও। আমরা যদি আমাদের সামাজিক জীবনাচরণের দিকে খেয়াল করি তাহলে দেখব, যারা কথা বেশি বলে সমাজের চোখে তাদের মর্যাদা খুব উন্নত নয়। কারও কারও ক্ষেত্রে ‘কথা বেশি বলা’ অন্যদের নিকট মহাযন্ত্রনার কারণ বিবেচিত হয়। আর যে কথার চেয়ে কাজে মনোযোগী  হয় বেশি, তার আলাদা একটা মর্যাদা থাকে সবার কাছে; ধন-সম্পদ তার যেমনই থাকুক না কেন।

 

 সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলে কারিম (সা.) ইরশাদ করেছেন,

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَمْرٍو الْمُعَافِرِيِّ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ صَمَتَ نَجَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ لَهِيعَةَ . وَأَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيُّ هُوَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ .

 ‘যে নীরব থাকে সে মুক্তি পায়’ -সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং: ২৫০১

 

এ হাদিসের উদ্দেশ্য হচ্ছে, কোনো ব্যক্তি যখন মন্দ ও অনর্থক কথা থেকে নিজেকে বিরত রাখবে, তখন সে ধ্বংসের হাত থেকে বেঁচে যাবে। নিষ্কৃতি পাবে সে জাহান্নামের আজাব থেকেও। আমাদের দেখা একটি বাস্তবতা হচ্ছে, যখন কেউ প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বেশি বেশি কথা বলে, তখন সে যে কেবল অনর্থক কথাই বলে বেড়ায় এমন নয়। বরং সে জড়িয়ে পড়ে অনেক ধরনের অন্যায়-অপরাধের সঙ্গেও। যারা বেশি কথা বলে তারা মানুষের গিবত-পরনিন্দায় লিপ্ত হয় বেশি। অবচেতনভাবেই হয়তো তারা অনেকের গিবত করতে থাকে এবং এ গিবত-পরনিন্দার কারণে অনেক সময় কারো সম্মানহানি হয়। কখনও আবার দুই ব্যক্তির মাঝে সম্পর্ক নষ্টও হয়। এ কাজটি সামাজিকভাবে চরম নিন্দিত ও শরিয়তের দৃষ্টিতে এক জঘন্য অন্যায়।

 

কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন একে অন্যের গিবত না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে?’ –সূরা হুজুরাত: ১২

 

যারা বেশি কথা বলে, কখনও মিথ্যা-অশ্লীলতার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ে তারা। অনেক ক্ষেত্রেই অসংলগ্ন ও অসতর্ক কথায় তারা লিপ্ত হয়। ফলে ঝগড়া-বিবাদও সৃষ্টি হয় কখনও কখনও। পরিণতিতে বিঘ্নিত হয় সামাজিক শান্তি-শৃংখলা ও সম্প্রীতি।

 

কিন্তু যদি তারা কথাবার্তায় সংযত হতো, অপ্রয়োজনীয় কথা থেকে বিরত থাকত- তাহলে এ ধরনের মারাত্মক গোনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকা তাদের জন্যে অনেক সহজ হতো।

 

সাহাবি হজরত উকবা ইবনে আমের (রা.) হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মু্ক্তির উপায় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। তিনি উত্তরে বললেন, তুমি তোমার জিহ্বাকে সংযত রেখো… -সুনানে তিরমিজি শরিফ

 

কারণ জিহ্বাকে সংযত রাখাই হচ্ছে গিবত-পরনিন্দা-চোগলখুরি জাতীয় গোনাহসমূহ থেকে বেঁচে থাকার প্রধান হাতিয়ার। আরেক হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে আল্লাহ ও পরকালের ওপর ঈমান আনে সে যেন উত্তম কথা বলে কিংবা চুপ থাকে। -সহিহ বোখারি, হাদিস নং: ১০২

 

কম কথা বলা বুদ্ধিমত্তা ও জ্ঞানের পরিচায়ক। যে কথা কম বলে, সে অনেক ধরনের অনর্থক বিষয় থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে। গিবত-পরনিন্দা-মিথ্যা-অশ্লীল কথাবার্তা ইত্যাদি নানা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকাও তার পক্ষে সম্ভব হয়। এ জন্যেই তো যারা কথা কম বলে হাদিস শরিফে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোনো বান্দাকে দুনিয়াবিমুখ ও স্বল্পভাষী দেখবে তখন তার সঙ্গে উঠাবসা করো। কেননা সে হেকমতপ্রাপ্ত। -বায়হাকি

আরো জানুন- https://ifatwa.info/34499/?show=34499#q34499


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 206 views
...