بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/27540/?show=27540#q27540 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের
দেহ থেকে সব উপায়ে সুখ নেয়ার অনুমতি ইসলামে আছে।
কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّىٰ
شِئْتُمْ
‘তোমাদের স্ত্রীগণ
তোমাদের জন্য ক্ষেতস্বরূপ; অতএব তোমরা
যেভাবেই ইচ্ছা তোমাদের ক্ষেতে গমণ কর।’ (সূরা বাকারা ২২৩)
অন্যত্র তিনি বলেন,
هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ
‘তারা তোমাদের
পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ।’ (সূরা বাকারা ১৮৭)
তবে এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখা বাঞ্ছনীয়। যথাক্রমে-
১- যে উপায়ে সুখ নেয়া হারাম হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট দলিল আছে, তা পরিহার করতে হবে। যেমন, মলদ্বারে সহবাস এবং ঋতুবতী ও প্রসব পরবর্তী সময়ে নির্গত রক্তস্রাব অবস্থায়
সহবাস।
২- স্বামী-স্ত্রী পরস্পর থেকে সুখ ভোগ করার সময় ইসলামী শিষ্টাচার
ও নীতি-নৈতিকতার প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। আরো
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন:
https://ifatwa.info/25000/?show=25000#q25000
দুই. এবার আসা যাক,
স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের লজ্জাস্থান মুখে দেয়া প্রসঙ্গে। এ ক্ষেত্রে নিষিদ্ধতার ব্যাপারে কোরআন হাদিসে স্পষ্ট
কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় না বিধায় বিষয়টিকে অকাট্য হারাম বলার সুযোগ নেই। তবে এর মাঝে
ইসলামী শিষ্টাচার-বহির্ভূত কিছু দিক রয়েছে। যেমন,
১. লজ্জাস্থান থেকে নির্গত নাপাক (বীর্য, মযি ইত্যাদি) জিহ্বা, মুখ ইত্যাদিতে লাগবে। আর জরুরত ছাড়া নাপাক স্পর্শ করাকে ফকিহগণ বৈধ মনে করেন
না।
২. মানুষের শরীরের সবচে’ সম্মানিত অঙ্গ হলো চেহারা। আর লজ্জাস্থান
হলো নাপাকির জায়গা। সুতরাং সম্মানিত জায়গাকে নাপাকির জায়গায় স্পর্শ করানো অবশ্যই নিন্দনীয়।
৩. মুখ দ্বারা আল্লাহর কালাম তিলাওয়াত করা হয়, যিকির করা হয়। এই মুখে নাপাক লাগানো এবং নাপাকির
স্থান চুমো দেয়া বা Suck করা বড় গর্হিত কাজ।
৪. মুখের অনেক জীবাণু লজ্জাস্থানে রোগ সংক্রামণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তাছাড়া লজ্জাস্থানের জীবাণু মুখে এবং মুখের ভায়া হয়ে ভেতরে রোগ সংক্রামণ করার আশংকা
থাকে। দুর্ঘটনাবশত ধারালো দাঁতও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এসব কারণে ফকিহগণ এটাকে মাকরুহ বলেছেন। তবে সহবাসের পূর্বে নাপাক
না লাগার শর্তে কিছু ফকিহ লজ্জাস্থানে চুমু দেয়ার (লেহন নয়) অবকাশ দিলেও এটাকে পরিহার
করাকে উত্তম বলেছেন। যেমন, প্রসিদ্ধ
হানাফি ফকিহ বুরহানুদ্দীন মাহমুদ ইবন তাজুদ্দীন রহ. বলেন,
إذا أدخل الرجل ذكره في فم امرأته يكره لأنه موضع قراءۃ
القرآن فلا یلیق به إدخال الذکر به
‘যদি পুরুষ নিজের
লজ্জাস্থান স্ত্রীর মুখে প্রবেশ করায় তাহলে তা মাকরুহ হবে। কেননা, মুখ কোরআন তেলাওয়াতের স্থান। সুতরাং এখানে লজ্জাস্থান
প্রবেশ করানো অনুচিত।’ (আল্মুহীতুল বুরহানী ৮/১৩৪)
আল মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যা (৯/৩২)– এসেছে,
وصرح الحنابلة بجواز تقبیل الفرج قبل الجماع ، وکراہته بعدہ
‘হাম্বলি ফকিহগণ
স্পষ্টভাবে বলেছেন, সহবাসের পূর্বে
হলে স্ত্রীর লজ্জাস্থান চুমো দেয়া জায়েয এবং পরে মাকরুহ।’
* স্বামী তার স্ত্রীর কাছ থেকে ততটুকু মনোরঞ্জনেরই
প্রত্যাশা করতে পারে, যতটুকু শরীয়ত বিরোধী নয়। এক্ষেত্রে কোন
নির্দিষ্ট বিধান নেই যে, এই কাজ করতে পারবে, বা ঐ কাজ করতে পারবে না।
তবে মূলনীতি এটাই শরীয়ত গর্হিত কোন কিছু করতে পারবে না।
আপনি এমন বিষয় উল্লেখ করেছেন যাতে শরীয়ত নিষিদ্ধ বিষয়ও অন্তর্ভূক্ত।অর্থাৎ
মিউজিক দিয়ে নাচা।, মিউজিক দিয়ে
নাচ করা হারাম ও নাজায়েজ।
তাই উপরোক্ত কাজ করার আদেশ দেয়া যেমন স্বামীর জন্য অন্যায় অবৈধ।
তা পালন করাও আপনার জন্য অবৈধ।
নবী সা: বলেন,
لَا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ
আল্লাহ তাআলার অবাধ্য হয়ে কোন সৃষ্টির আনুগত্য করা জায়েজ নয়।
[মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১০৯৫,
সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৭০৭]
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ:
«لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المُتَشَبِّهِينَ مِنَ
الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ»
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ইরশাদ অভিশাপ দিয়েছেন সেসব পুরুষকে যারা মহিলাদের সাদৃশ্য গ্রহণ করে, আর সেসব নারীদের যারা পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণ
করে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৮৫, ৫৫৪৬,
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৯০৪]
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ:
الدُّفُّ حَرَامٌ، وَالْكُوبَةُ حَرَامٌ، وَالْمِزْمَارُ حَرَامٌ
হযরত আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দফ হারাম। বাদ্যযন্ত্র হারাম। মদের পেয়ালা হারাম।
বাঁশী হারাম। [সুনানে সুগরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৩৩৫৯,
সুনানে কুরবা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২১০০০]
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
১. যদি পুরুষ নিজের লজ্জাস্থান স্ত্রীর মুখে প্রবেশ
করায় বা স্ত্রীর লজ্জাস্থানে মুখ দেয় তাহলে তা মাকরুহ হবে। কেননা, মুখ কোরআন তেলাওয়াতের স্থান। সুতরাং এজাতীয় বিষয় থেকে দূরে থাকায় শ্রেয়। তাছাড়া
এতে রোগ জীবানু বিস্তার হওয়ার আশংকা থাকে যা উপরে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।
২. কোন দ্বীনদার ডাক্তার যদি বলেন যে,
মায়ের জন্য গর্ভে বাচ্চা ধারণ করা ঝুকিপূর্ণ।
সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনের ক্ষাতিরে তা বৈধ হতে পারে। তবে শরীয়ত সম্মত প্রয়োজন ব্যতীত বাচ্চা
গ্রহণ না করা মাকরুহে তানযিহি। তবে শরীয়ত সম্মত নিম্নোক্ত প্রয়োজনে বৈধ রয়েছে।
(ক)মহিলা এত দুর্বল যে, গর্ভধারণের বর্তমানে যোগ্যতা নেই।
(খ)মহিলা নিজ বাসস্থান থেকে এত দূর সফরে যেখানে স্থায়ীভাবে
বসবাসের আপতত কোনো মনোবাসনা নেই।আবার নিজ বাসস্থানে আসতেও কয়েক মাস লেগে যাবে বা কয়েক
মাসের প্রয়োজন।
(গ)স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক সম্পর্ক চূড়ান্ত নিম্ন পর্যায়ের,এমনকি উভয়ের অন্তরে বিচ্ছেদের চিন্তাভাবনা চলছে।
(ঘ)পূর্বের বাচ্চার সু-সাস্থ্যর ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে।
(ঙ)স্থান-কালের ফাসাদ অর্থাৎ দ্বীনী পরিবেশের চূড়ান্ত পর্যায়ের
অবনতির ধরুন বাচ্চা বদ-আখলাক বা অসচ্চরিত্র এবং মাতাপিতার বে-ইজ্জতির কারণ হবে বলে
আশঙ্কা করলে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عن جابر قال كنا نعزل على عهد النبي صلى الله عليه و سلم ـ
صحيح البخاري – (2 / 784)، باب العزل
হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
যুগে আযল(যা জন্ম নিয়ন্ত্রণের একটা পুরনো ও অস্থায়ী পদ্ধতি) করতাম। (বুখারী ২/৭৮৪)
★বিঃদ্রঃ সম্পদ কমে যাবে বা মেয়ে সন্তান জন্ম নিলে সমাজে লজ্জিত
হতে হবে মনে করে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ কখনো বৈধ হবে না। আরো বিস্তারিত জানতে
ভিজিট করুন:
https://ifatwa.info/9675/?show=9675#q9675