আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
278 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম
১. আমার জন্মদিন উপলক্ষে আমার রুমমেটরা চকলেট এবং হাদিয়া দিয়েছে যদিও আমি স্পষ্ট বলেছিলাম আমি জন্মদিন পালন করিনা। এখন এগুলো খাওয়া কি জায়েজ হবে আমার জন্য? আর হাদিয়া গুলো দেয়ার মত কেউ নেই, এগুলো কি রেখে দেয়া জায়েজ হবে?

২. রুমে প্রানীর ছবি থাকলে ফেরেশতা আসে না আর নামাজ মাকরুহ হয় বলে জানি। বিভিন্ন প্যাকেটের গায়েও ছবি দেয়া থাকে। খাবারের প্যাকেটের গায়ে, টুথপেষ্ট ইত্যাদির প্যাকেট এ ছোট ছোট ছবি থাকলে সেগুলো ঘরে থাকলে কি নামাজ মাকরুহ হবে। অনেক সময় তো খেয়াল ও করা হয় না যে ছবি আছে। তখন সেই রুমে পড়া সব নামাজ ই কি মাকরুহ হয়ে যাবে?
৩. আমার অনুমতি ছাড়া গায়রে মাহরাম কে আমার বাবা ছবি পাঠিয়েছেন। কিন্তু আমি পরিপূর্ণ পর্দা করার চেষ্টা করছি আলহামদুলিল্লাহ। এক্ষেত্রে তাকে কি বলতে পারি?

৪. কেউ যদি আমার আশেপাশে গান গায়, আমি শুনতে চাচ্ছিনা তবু শুনতে হচ্ছে, থামতেও বলা যাচ্ছেনা এক্ষেত্রে কি গুনাহ হবে? খালি গলার গান শুনলেও কি গুনাহ হবে?

৫. অসুস্থতার কারণে মাথায় টাক পড়ে গিয়েছে। এ অবস্থায় কি মেয়েদের জন্য মাথার চুল ফেলে দেয়া ঠিক হবে?
৬. এলকোহল আছে এমন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করে নামাজে দাড়ালে কি কোনো সমস্যা হবে?

৭. নামাজে কোনো সূরার এক লাইন ভুল করে ফেলেছি এবং সাথে সাথেই ঠিক করে ফেলেছি এমন হলেও কি নামাজ ভেংগে যাবে?
৮. নামাজে সূরার মাঝে ভুলে গিয়েছি তাই লাইন শুরু করে দুই শব্দ পড়ে আর পড়তে পারিনি, রুকু তে চলে গিয়েছি এমন হলে কি সাহু সিজদা দিতে হবে? নাকি নামাজ ভেংগে যাবে?
৯. বিতরের সালাতে দুয়া কুনুত পড়তে ভুলে গেলে কি রুকুতে পড়া যায়?

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
(১)
https://www.ifatwa.info/26271 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
গিফট যেহেতু আপনাকে দেয়া হয়েছে।যারা দিয়েছেন,তারা অন্তর থেকেই দিয়েছেন।তাই এগুলোর মালিক আপনি।তাই চাইলে এগুলোকে আপনি নিজের কাছেও রেখে দিতে পারেন।আবার চাইলে নিকটাত্মীয় কাউকে দান করে দিতেও পারেন।আপনার কোনো আত্মীয় ছোটবোনকে দিয়ে দিতে পারেন।নিজের কাছে রাখার চেয়ে কাউকে দিয়ে দেয়াই উত্তম হবে।

ঐ জিনিসগুলো কে আপনার কাছে তাঁদের মন রক্ষার্থে রাখতে পারবেন,যতদিন না তারা পূর্ণ হেদায়তের পথে আসছেন।এক্ষেত্রে আপনি তাদেরকে হেকমতের সাথে দাওয়াত ও তাবলীগ করবেন।

(২)
https://www.ifatwa.info/974 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
মাথা কর্তিত থাকলে সেই ছবি হারামের হুকুম থেকে বাহির হয়ে যাবে। যেমনঃ হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ : " ﺍﻟﺼُّﻮﺭَﺓُ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱُ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗُﻄِﻊَ ﺍﻟﺮَّﺃْﺱُ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﺑِﺼُﻮﺭَﺓٍ ."
প্রাণীর মাথা-ই হল মূলত ছবি তথা প্রাণীর মাথাটাই ছবির উল্লেখযোগ্য অংশ।যখন কোনো ছবির অাকৃতি থেকে মাথাকে কেটে ফেলা হবে,তখন সেটা যেন কোনো ছবিই না।(সুনানে বায়হাক্বী-১৪৫৮০)

যেহেতু মাথা ছাড়া কোনো প্রাণী জীবিত থাকতে পারেনা,তাই বলা হচ্ছে মাথা কাটা থাকলে সেটা ছবির হুকুমের আওতাধীন হবেনা।ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসএ্যাপ ইত্যাদিতে চ্যাটিং-এর সময় বিভিন্ন ধরণের emoji ব্যবহারের বিধান:যদি emoji এর পূর্ণ অবয়ব তথা emoji তে ব্যবহৃত প্রাণীর মাথা,মুখ,চোখ,নাক,কান ইত্যাদি স্পষ্টভাবে বুঝা যায়,তাহলে সেগুলোকে ব্যবহার করা যাবে না। কেননা এগুলো হাদীসে বর্ণিত নিষিদ্ধ ছবির অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু যদি চোখ, মুখ ইত্যাদি অঙ্গগুলো স্পষ্টত বুঝা না যায়, তাহলে সেগুলোকে ব্যবহার করা যাবে। কেননা, এগুলোকে ‘প্রাণীর ছবি’ বলা যাবে না বরং খুব বেশী এগুলোকে আঁকিবুকি, চিহ্ন বা কিছু রেখা ইত্যাদি ভাবা হবে। তবে যথাসম্ভব এ সব ব্যবহার না করাই শ্রেয়।(শেষ)

(৩)
বাবা যদি বিয়ের জন্য পাঠান তাহলে জায়েয।অন্যথায় জায়েয হবে না।আপনি বাবাকে হেকমতের সাথে বুঝান।

(৪)
এক্ষেত্রে আপনার গোনাহ হবে না। গায়কেরই গোনাহ হবে। খালি গলায় ভালো অর্থবোধক গজল কবিতা জায়েয।তবে ফাসিক বা প্রচলিত গায়কদের গানকে খালি গলায় গাওয়াও জায়েয হবে না।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1898


(৫)
সম্পূর্ণ চুল ফেলা যাবে না।যতটুকু রয়েছে,ততটুকুই রাখতে হবে।তবে যদি বেশ গড়মিল দেখা যায়, যা দৃষ্টিকটু, তাহলে এমতাবস্থায় সমস্ত চুল মুন্ডানো যাবে।

(৬)
এলকোহল আছে এমন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করে নামাজে দাড়ালে কোনো সমস্যা হবে না।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/5553

(৭)
নামাযে সূরার এক অংশ ভূল করার পর সাথে সাথেই ঠিক করে নিলে নামাযে কোনো সমস্যা হবে না।

(৮)
নামাযে সূরা ভূলে গেলে যদি লম্বা এক আয়াত বা ছোট্ট তিন আয়াত সমপরিমাণ তিলাওয়াত করা না হয়ে থাকে, তাহলে সাহু সিজদা দিতে হবে।যদি সাহু সিজদা না দেয়া হয়, তাহলে নামাযকে আবার দোহড়াতে হবে।

(৯)
বিতিরের নামাযে দু'আয়ে কুনুত পড়তে ভূলে গেলে রুকুতে পড়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...