আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
239 views
in সালাত(Prayer) by (18 points)
আসসালামু ওয়ালাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
১)শায়েখ হানাফি মাজহাবে চন্দ্র গ্রহণ ও সুর্য গ্রহণের নামাজের হুকুম কি? এটি ফরজ সুন্নত নাকি নফল?
২) এই নামাজের রাকাত সংখ্য এবং কিভাবে এই নামাজ আদায় করব তার পদ্ধতি সহজভাবে একটু বলবেন কি বিস্তারিত।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَانْكَسَفَتِ الشَّمْسُ، فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَجُرُّ رِدَاءَهُ حَتَّى دَخَلَ الْمَسْجِدَ، فَدَخَلْنَا فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ، حَتَّى انْجَلَتِ الشَّمْسُ فَقَالَ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لاَ يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا فَصَلُّوا، وَادْعُوا، حَتَّى يُكْشَفَ مَا بِكُمْ ".

আমর ইবনু আওন (রহঃ) ... আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম, এ সময় সুর্যগ্রহণ শুরু হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন উঠে দাঁড়ালেন এবং নিজের চাদর টানতে টানতে মসজিদে প্রবেশ করলেন এবং আমরাও প্রবেশ করলাম। তিনি আমাদেরকে নিয়ে সূর্য প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত দু’রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর তিনি বললেনঃ কারো মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ কিংবা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা যখন সূর্যগ্রহণ দেখবে তখন এ অবস্থা কেটে যাওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করবে এবং দু’আ করতে থাকবে।
(বুখারী শরীফ ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৯৮৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ১০৪০)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ انْخَسَفَتِ الشَّمْسُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلاً نَحْوًا مِنْ قِرَاءَةِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلاً، ثُمَّ رَفَعَ فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلاً، وَهْوَ دُونَ الْقِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلاً، وَهْوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ سَجَدَ، ثُمَّ قَامَ قِيَامًا طَوِيلاً وَهْوَ دُونَ الْقِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلاً، وَهْوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَفَعَ فَقَامَ قِيَامًا طَوِيلاً، وَهْوَ دُونَ الْقِيَامِ الأَوَّلِ، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلاً، وَهْوَ دُونَ الرُّكُوعِ الأَوَّلِ، ثُمَّ سَجَدَ، ثُمَّ انْصَرَفَ وَقَدْ تَجَلَّتِ الشَّمْسُ، فَقَالَ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ فَاذْكُرُوا اللَّهَ ". قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، رَأَيْنَاكَ تَنَاوَلْتَ شَيْئًا فِي مَقَامِكَ، ثُمَّ رَأَيْنَاكَ كَعْكَعْتَ. قَالَ صلى الله عليه وسلم " إِنِّي رَأَيْتُ الْجَنَّةَ، فَتَنَاوَلْتُ عُنْقُودًا، وَلَوْ أَصَبْتُهُ لأَكَلْتُمْ مِنْهُ مَا بَقِيَتِ الدُّنْيَا، وَأُرِيتُ النَّارَ، فَلَمْ أَرَ مَنْظَرًا كَالْيَوْمِ قَطُّ أَفْظَعَ، وَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا النِّسَاءَ ". قَالُوا بِمَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " بِكُفْرِهِنَّ ". قِيلَ يَكْفُرْنَ بِاللَّهِ قَالَ " يَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ، وَيَكْفُرْنَ الإِحْسَانَ، لَوْ أَحْسَنْتَ إِلَى إِحْدَاهُنَّ الدَّهْرَ كُلَّهُ، ثُمَّ رَأَتْ مِنْكَ شَيْئًا قَالَتْ مَا رَأَيْتُ مِنْكَ خَيْرًا قَطُّ ".

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় সূর্যগ্রহণ হল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন সালাত আদায় করেন এবং তিনি সুরা বাকারা পাঠ করতে যত সময় লাগে সে পরিমাণ দীর্ঘ কিয়াম করেন। এরপর দীর্ঘ রুকু’ করেন। তারপর মাথা তুলে পুনরায় দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে তা প্রথম কিয়ামের চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকু করলেন। তবে তা প্রথম রুকুর চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি সিজদা করেন। আবার দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ কিয়াম করলেন। তবে তা প্রথম কিয়ামের চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর আবার দীর্ঘ রুকু করেন, তবে তা আগের রুকুর চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি মাথা তুললেন এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কিয়াম করলেন, তবে তা প্রথম কিয়াম অপেক্ষা অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকু করেন, তবে তা প্রথম রুকু অপেক্ষা অল্পস্থায়ী ছিল। এরপর তিনি সিজদা করেন এবং সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করেন। ততক্ষণে সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গিয়েছে।
তারপর তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহে সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শন সমুহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে এ দু’টির গ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা গ্রহণ দেখবে তখনই আল্লাহ কে স্মরণ করবে। লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা দেখলাম, আপনি নিজের জায়গা থেকে কি যেন ধরেছেন, আবার দেখলাম, আপনি যেন পেছনে সরে এলেন। তিনি বললেনঃ আমি তো জান্নাত দেখছিলাম এবং একগুচ্ছ আঙ্গুরের প্রতি হাত বাড়িয়ে ছিলাম। আমি তা পেয়ে গেলে, দুনিয়া কায়িম থাকা পর্যন্ত অবশ্য তোমরা তা খেতে পারতে। এরপর আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়, আমি আজকের মত ভয়াবহ দৃশ্য কখনো দেখিনি। আর আমি দেখলাম, জাহান্নামের অধিকাংশ বাসিন্দা স্ত্রী লোক।
লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কী কারণে? তিনি বললেনঃ তাদের কুফরীর কারণে। জিজ্ঞাসা করা হল, তারা কি আল্লাহর সাথে কুফরী করে? তিনি জবাব দিলেন, তারা স্বামীর অবাধ্য থাকে এবং ইহসান অস্বীকার করে। তুমি যদি তাদের কারো প্রতি সারা জীবন সদাচরণ কর, এরপর সে তোমার থেকে (যদি) সামান্য ত্রুটি পায়, তা হলে বলে ফেলে, তোমার থেকে কখনো ভালো ব্যবহার পেলাম না।
(বুখারী শরীফ ৯৯৪)


(০১)
উভয় নামাজই সুন্নাত।
তবে সূর্য গ্রহণের সময়ের নামাজ সর্ব সম্মতিক্রমে সুন্নাত।
আর চন্দ্র গ্রহনের সময়ের নামাজের ক্ষেত্রে কিছু স্কলারগন মুস্তাহাবও বলেছেন।
তবে বেশিরভাগই সুন্নাত বলেছেন।
,
(০২)
★★যখন সূর্য গ্রহণ লাগে, তখন জামাতে নামাজ আদায় করার জন্যে মানুষকে ডাকবে। মানুষ যখন জমায়েত হবে তখন ইমাম তাদের নিয়ে দীর্ঘ দু রাকাত নামাজ পড়বে। নীরব আওয়াজে কিরাত পড়বে। প্রথম রাকাতে পড়বে সূরা ফাতিহা এবং অপর একটি দীর্ঘ সূরা। এরপর রুকু দেবে। এরপর দীর্ঘ দুই সিজদা করবে। অতঃপর দ্বিতীয় রাকাত, কিয়াম ও রুকু সিজদায়, প্রথম রাকাতের মতোই আদায় করবে। তবে সবকিছুই পরিমাণে প্রথম রাকাতের চেয়ে কম হবে। এরপর বসবে, তাশাহ্হুদ পড়বে ও সালাম ফিরাবে।
,
★উল্লেখ্য যে সূর্য গ্রহণের নামাজের আরও একাধিক পদ্ধতি রয়েছে।

★তবে চন্দ্র গ্রহনের নামাজে জামা'আত নেই।
একাকী উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিতে দুই রাকাত আদায় করতে হয়।

الفتاوى الهندية (1/ 153):
'' يصلون ركعتين في خسوف القمر وحداناً، هكذا في محيط السرخسي.''
সারমর্মঃ 
চন্দ্রগ্রহণ এর সময় একাকী দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...