আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
159 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (37 points)
প্লিজ আগেই অনুরোধ যে পুরোটা পরুন।বেপারটা জটিল।

আমাদের এখনো বিয়ে হয়নি।কয়দিন পর আমাদের বিয়ে।আমি  তালাকের মাসালা পরে যখন দেখলাম শর্তযুক্ত তালাক দেয়া যায় বিয়ের আগেই,তখন আমার মনে সন্দেহ ঢুকে গেলো যে আমি কখনো তাকে এরকম শর্ত দিয়েছিলাম কিনা বিয়ের আগে।তো এটা নিয়ে আমি টেনসন করতাম শুধু যে দিয়েছিলাম কি দেইনি, আমি অনেক সন্দেহের মদ্ধে ছিলাম।তো এ সব সন্দেহ এড়াতে এবং  এসকল টেনসন থেকে বাচতে আমি একা একা বসে বলেছিলাম যে,"ও যদি কোনো ছেলের সাথে নাচে তাহলে ওর সাথে আমার বিয়ে হলে বিয়ের পর তালাক হয়ে যাবে"।এটা বলার সময় আমার মনে কোনো নিয়ত ই ছিলো না যে বিয়ের আগে নাচলে নাকি বিয়ের পরে নাচলে তালাক হবে মানে এ বেপারে আমার কোনো ধারনা ঈ ছিলো না।কিন্তু বাক্য টা বলার পর মনে মনে ভেবেছিলাম যে,"কিন্তু বাক্য টা বলার পর মনে মনে ভেবেছিলাম "বিয়ের আগে নাচলে  নাকি পরে নাচলে তালাক হবে, হয়তো সারাজীবন ই" এটা মনে মনে ভেবেছি বাক্য টা বলার পর মুখে বলিনি।

****অনেক হুজুর বলছে সারাজীবন অনেকে বলছে এটা বিয়ের আগ পরযন্ত।

1.তাই এখন আপনারাই বলুন এই শর্ত টা কতদিন থাকবে? আপনারা যা বলবেন তা অনুযায়ী আমল করতে চাই।এতে কি আমি গুনাহগার হবো নাকি নিশ্চিন্ত ভাবে করবো?অনেকের অনেক কথা শুনে আমার অনক টেন্সন হচ্ছে তাই এভাবে বল্লাম।

2.আর যেহেতু কথাটা বলার সময় আমার কোনো বেপারেই কোনো নিয়ত ছিলো না,তো মুফতি ইমদাদ ভাই বল্লো যে নিয়তে পরপুরুষ না থাকলেও এটা পরপুরুষ ধরা হবে,আবার আপনারা প্রশ্নের উত্তর  বল্লেন যে বাবার সাথেও নাচলে তালাক হয়ে যাবে,এখন কোন্টা সঠিক?


3.ভাই ফিকহ এর নাকি একটা নিয়ম আছে যে ,যে শর্ত  দেয় সে সবসময় সে শর্তের বাইরে থাকে আর বাকি সবাই কে ধরা হয়? মানে আমি কোনো ছেলে শর্ত দিছি ,আর আমি যেহেতু দিছি তাই এখানে আমি ছাড়া অন্ন ছেলে ধরা হবে ?এটা সঠিক?আর নিয়তে পরপুরুষ না থাকলেও এটা পরপুরুষ ধরা হবে?সবাই এটাই বল্লো যে পরপুরুষ ধরা হবে।আপনাদের মতামত চাই।

পয়েন্ট আকারে বিস্তারিত বল্লে অনেক উপকার হবে।।

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
পূর্বের কিছু ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,   
বিবাহ পূর্বক মুয়াল্লাক তালাক দিলে সেটি বিবাহ করা মাত্র পতিত হবে।
,
মুয়াল্লাক তালাক দেওয়ার পদ্ধতি হলো কেহ যদি এমন বলে যে আমি যাকেই বিবাহ করবো,সেই তালাক,বা এমন বলে যে  আমি যদি অমুক মহিলাকে বিবাহ করি,তাহলে সে তালাক,বা এমন বলে যে আমি যখনই বিবাহ করিবো,তখনই তালাক ইত্যাদি। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

عَنْ الشَّعْبِیِّ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ رَجُلٍ قَالَ لامْرَأَتهِ: کُلُّ امْرَأَةٍ أَتَزَوَّجُهَا عَلَیْک فَهَیَ طَالِقٌ، قَالَ: فَکُلُّ امْرَأَةٍ یَتَزَوَّجُهَا عَلَیْهَا، فَهِیَ طَالِقٌ.
ابن أبي شیبة، المصنف، 4: 65، رقم: 17838، الریاض: مکتبة الرشد

যার সারমর্ম হলো কেহ যদি বলে যে আমি যেই মহিলাকেই বিবাহ করবো,সে তালাক।
তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।     

আরো জানুনঃ  

তালাককে শর্তের সাথে সংযুক্ত করলে সেই শর্ত পাওয়া গেলেই বক্তব্য অনুপাতে তালাক পতিত হয়ে যাবে।

واذا اضافه إلى الشرط، وقع عقيب الشرط اتفاقا، مثل أن يقول لامرأته: إن دخلت الدار فأنت طالق، (الفتاوى الهندية، الفصل الثالث فى تعليق الطلاق-1/420، الهداية، كتاب الطلاق، باب الأيمان فى الطلاق-2/385، تبيين الحقائق، باب التعليق-3/109)

সারমর্মঃ
যদি তালাককে কোনো শর্তের সাথে যুক্ত করে,তাহলে শর্ত পাওয়ার পরেই তালাক পতিত হয়ে যাবে।

ألفاظ الشرط إن … ومتی ومتی ما ففي ہٰذہٖ الألفاظ إذا وجد الشرط انحلت الیمین وانتہت؛ لأنہا لا تقتضي العموم والتکرار، فبوجود الفعل مرۃ تم الشرط وانحلت الیمین فلا یتحقق الحنث بعدہ۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۴۱۵) 
সারমর্মঃ
শর্তের কিছু বাক্য আছে,যখন শর্ত পাওয়া যাবে,কসম ভেঙ্গে যাবে এবং শেষ হয়ে যাবে।
সেই শর্ত অনুপাতে হুকুম ফিরে আসবেনা।
কেননা এটি বারংবার কে চায়না।  

وشرط الحنث في قولہ إن خرجت مثلاً فأنت طالق أو إن ضربت عبدک فعبدي حر لمرید الخروج والضرب فعلیہ فورًا؛ لأن قصدہ المنع عن ذٰلک الفعل عرفًا ومدار الأیمان علیہ، وہٰذہ تسمی یمین الفور۔ (درمختار، الأیمان / باب الیمین في الدخول والخروج والسکنیٰ، مطلب في یمین الفور ۵؍۵۵۳-۵۵۴ زکریا، ۳؍۷۶۱-۷۶۲ دار الفکر بیروت، وکذا في البحر الرائق / باب الیمین في الدخول ۴؍۳۱۵ کوئٹہ)
সারমর্মঃ
কেহ যদি বলে তুমি যদি বের হও,,তাহলে তুমি তালাক, অথবা তুমি যদি তোমার গোলামকে প্রহার করো,তাহলে আমার গোলাম আযাদ,তাহলে এটির বিধান তাৎক্ষনিক হবে।
কেননা তার উদ্দেশ্য ছিলো ঐ কাজ থেকে সেই সময়েই বিরত রাখা,( সারাজীবন এর জন্য নয়)

আরো জানুনঃ

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই মেয়েটি বিবাহের আগে সেই শর্তযুক্ত কাজ (কোনো পরপুরুষ এর সাথে নাচানাচ) করলে আপনার সাথে বিবাহ হওয়া মাত্র তালাক হবে।
পরে আবার তাকে বিবাহ করে নিতে পারবেন।
আপনি মুয়াল্লাক তালাক বলার পর যেই বাক্য গুলি মনে মনে বলেছেন মর্মে প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে,তা হলোঃ-
কিন্তু বাক্য টা বলার পর মনে মনে ভেবেছিলাম "বিয়ের আগে নাচলে  নাকি পরে নাচলে তালাক হবে, হয়তো সারাজীবন ই" এটা মনে মনে ভেবেছি বাক্য টা বলার পর মুখে বলিনি।
 সেই সময়ের আপনার নিয়ত দেখে বুঝা যাচ্ছে আপনি নিজের নিয়ত সম্পর্কে সন্দিহান।
তাই এই সন্দেহ যুক্ত নিয়তের ধর্তব্য নেই।
এটি সারাজীবনের জন্য শর্ত হবেনা। 
বিবাহের পর সে অন্য ছেলের সাথে নাচলে তালাক হবেনা।

আরো জানুনঃ

মনে বেশি অশান্তি হলে সেই মেয়েকে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত ত্যাগ করুন।
অন্য কোনো দ্বীনদার মেয়েকে বিবাহ করুন। 
জাযাকাল্লাহ।  

(০২)
পূর্বের  জবাব সংশোধন করে নেওয়া হয়েছে।
মেয়েটি তার বাবা/ভাইয়ের সাথে নাচলে তালাক হবেনা।
,
(০৩)
এখানে পরপুরুষ ধরা হবে।
আপনার সাথে নাচলে বিবাহের পর এই শর্ত যুক্ত তালাক পতিত হবেনা।
কেননা আপনার শর্ত দেখেই এটি অনুমান হয় যে এখানে আপনি ছাড়া অন্য কোনো পরপুরুষ উদ্দেশ্য।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...