আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
133 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
১। যতদূর জানি, হাদিসে আগুন দিয়ে চিকিৎসা নিতে অনুৎসাহিত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ব্যথার জন্যে হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার বা যেকোনো হিট থেরাপি নেয়ার শরীয়াহ বিধান কী? আর কেউ যদি প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও হাদিস মান্য করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের চিকিৎসা নেয়া থেকে বিরত থাকে তবে কি আজিমতের ওপর আমল করা হবে?

২। গরু-ছাগলের ভুড়ি না খাওয়া কি আজিমতের ওপর আমল করা হবে?

৩। পিরিয়ডের আগের পরের ১ সপ্তাহ বেশ অনেক পরিমাণে সাদা স্রাব যায়। শারীরিক সম্পর্কের অনেক পর পর্যন্তও সাদা স্রাব যেতে থাকে। ভালোমতো অজু, গোসল করে বের হওয়ার প্রায় সাথে সাথেই বুঝতে পারি, স্রাব যাচ্ছে। নামাজের মধ্যেও এমন হয়। বারবার অজু, কাপড় পরিবর্তন খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমি কি নিজেকে মাজুর ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত ধরে নিতে পারি? নাকি এভাবেই প্রতিবার অজু আর কাপড় পরিবর্তনের ওপর থাকতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا - قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " الشِّفَاءُ فِي ثَلَاثٍ : فِي شَرْطَةِ مِحْجَمٍ ، أَوْ شَرْبَةِ عَسَلٍ ، أَوْ كَيَّةٍ بِنَارٍ . وَأَنَا أَنْهَى أُمَّتِي عَنِ الْكَيِّ " . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন জিনিসের মধ্যে রোগের নিরাময় রয়েছে, শিঙ্গা লাগানো বা মধু পান করা অথবা তপ্ত লোহা দ্বারা দাগ দেয়া। তবে আমি আমার উম্মাতকে দাগ হতে নিষেধ করেছি।

(সহীহ : বুখারী ৫৬৮০, ইবনু মাজাহ ৩৪৯১, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ১১৫৪, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১২০৭৫, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ২০০২৭, শু‘আবুল ঈমান ১১৬৪, আল জামি‘উস্ সগীর ৬০৪৭, সহীহুল জামি‘ ৩৭৩৪।)

★দাগ মানে আগুনে সেঁক দেয়ার বিষয়টি উল্লেখিত হাদীসে সাব্যস্ত হয়েছে।
তবে এটির নির্দেশনা দেয়া হয়নি। আগুনে সেঁক দেয়ার বৈধতা বর্ণিত হয়েছে এই শর্তে যে, তা একটি মাধ্যম মাত্র, আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশেই রোগের শিফা নির্ধারিত।

শায়খ আবূ মুহাম্মাদ আবূ জামরাহ্-এর মতে, আগুনের সেঁক দেয়ায় উপকার ও ক্ষতি উভয়বিধ সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু নিষেধাজ্ঞা এসেছে, সেহেতু এতে ক্ষতির আশংকা বিদ্যমান রয়েছে। পবিত্র কুরআনে যেমন মদের ব্যাপারে বলা হয়েছে, এতে উপকারিতা রয়েছে তবে উপকারের চাইতে ক্ষতির ভাগটি বেশী, তাই তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

★তবে রাসুল সাঃ নিজেও আগুনে আগুনে সেঁক দিয়েছে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ جَابِرٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ : رُمِيَ أَبِي يَوْمَ الْأَحْزَابِ عَلَى أَكْحَلِهِ ، فَكَوَاهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আহযাবের (খন্দাকের) যুদ্ধে উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-এর শিরারোগে তীর বিদ্ধ হয়েছিল। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (ক্ষত স্থানটিতে) দাগিয়েছেন।
(সহীহ : মুসলিম (২২০৭)-৭৪, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ২০০৩২, হিলইয়াতুল আওলিয়া ১০/৪০১ পৃঃ, আহমাদ ১৪২৫২, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ২২৮৫, মুসনাদে ‘আব্দ ইবনু হুমায়দ ১০১৮।)

وَعَنْهُ قَالَ : رُمِيَ سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ فِي أَكْحَلِهِ ، فَحَسَمَهُ النَّبِيُّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - بِيَدِهِ بِمِشْقَصٍ ، ثُمَّ وَرِمَتْ ، فَحَسَمَهُ الثَّانِيَةَ

উক্ত রাবী [জাবির (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সা‘দ ইবনু মু‘আয (রাঃ)-এর শিরারগে তীর বিদ্ধ হয়েছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে উক্ত স্থানটিতে তীরের ফলক দ্বারা দাগিয়েছেন। অতঃপর তাঁর (সা‘দ-এর) হাত ফুলে গিয়েছিল, সুতরাং দ্বিতীয়বার তাকে দাগিয়েছেন।
(সহীহ : মুসলিম (২২০৮)-৭৫, আহমাদ ১৪৩৪৩, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৮২৮৭, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ২০০৩৩, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৫১৮৮।)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
ব্যথার জন্যে হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার বা যেকোনো হিট থেরাপি নেয়া জায়েজ আছে।
এতে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো সমস্যা নেই।
কেউ যদি প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও হাদিস মান্য করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের চিকিৎসা নেয়া থেকে বিরত থাকে তবে কি আজিমতের ওপর আমল করা হবেনা।


(০২)
না,এতে আজিমতের উপর আমল হবেনা।

(০৩)
যদি আপনার নামাজের পূর্ণ সময়েও এভাবে সাদা স্রাব আসতেই থাকে,যে পবিত্রতার সহিত ছোট কিরাআত পড়ে হলেও নামাজ পড়া সম্ভব হচ্ছেনা,সাদা স্রাব আসছেই,তাহলে নিজেকে মা'যুর ধরতে পারবেন।

নতুবা নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...