আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
139 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (36 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
১.শায়েখ, আমার একটা রুগ দেখা দিয়েছে। এখন আমি চাচ্ছি ডাক্তার না দেখাতে। এতে কি আমার গুনাহ হবে? বা এতে যদি আমার পরে বেশি ক্ষতি হয় যায়?? ডাক্তার কখন দেখানো উচিত??
২. আমাদের মাদ্রাসায় তালিম ৭ টায়। আলহামদুলিল্লাহ। ওই সময় আবার ইশার ওয়াক্ত হয়ে যায় তো তালিমে বসব না নামাজ পড়ব?? তালিমের জন্য নামাজ ধেরিতে পড়লে কি গুনাহ হবে? তালিমে বসলে দেখা যায় মনে একটা অশান্তি কাজ করে নামাজ ত আগে, নামাজ রেখে তালিমে বসলাম আল্লাহ নারাজ হবেন না তো? এখন আমার কি করা উচিত??
পবিত্রতাঃ

৩. পাতলা সাদাস্রাব যদি কাপড়ে লাগে তাহলে ওই কাপড় কি পাল্টাতেই হবে?? যদি প্রতি ওয়াক্ত অযু করি তারপর নতুন পায়জামা পরে নামাজ পরি তাহলে হয়ে যাবে?? যে পায়জামায় সাদাস্রাব লেগেছে সেটা পরে কুরআন তিলাওয়াত করা যাবে??

জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

হাদিস শরিফে আছে, মানুষ যখন কোনো বিপদে পড়ে কিংবা কোনো রোগাক্রান্ত হয় তখন তার মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা ও হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তারা নববী আদর্শ ও শিক্ষা ভুলে যায়। অথচ অসুস্থ হলে সবর করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। সুহাইব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুমিনের জীবন খুবই বিস্ময়কর। তার সব কাজ কল্যাণকর। এই কল্যাণ মুমিন ছাড়া অন্য কেউ লাভ করতে পারে না। সে সুখে-শান্তিতে থাকলে আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করে, আর বিপদাপদে পতিত হলে ধৈর্য ধারণ করে। উভয়টিই তার জন্য কল্যাণকর।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৩৯০)

রোগকে গালমন্দ করা যাবে না । কারণ, রোগ-ব্যাধি তাকদিরের অংশ। তাই অসুস্থ হলে রোগ-ব্যাধিকে গালমন্দ করা যাবে না। এটি ইসলামে নিষিদ্ধ। আবদুল্লাহ ইবনে জাবের (রা.) বর্ণিত, একবার রাসুল (সা.) উম্মুস সায়েব বা উম্মুল মুসায়্যিবকে দেখতে গেলেন। তাকে বলেন, হে উম্মুস সায়েব বা উম্মুল মুসায়্যিব তোমার কী হয়েছে? তুমি কাঁপছ কেন? তিনি বলেন, জ্বর হয়েছে। এ কথা শুনে রাসুল (সা.) বলেন, জ্বরকে গালি দিয়ো না। কেননা, জ্বর বনি আদমের গুনাহ মাপ করে বা এর মাধ্যমে গুনাহ মাপ হয়। হাঁপর যেভাবে লোহার মরিচা দূর করে, জ্বরও মানুষের গুনাহ দূর করে দেয়। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৭৫)

কেউ অসুস্থ হলে তার উচিত উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করা। চিকিৎসা গ্রহণ করা তাওয়াক্কুলপরিপন্থী নয়। প্রত্যেক হালাল বস্তু দ্বারা চিকিৎসা গ্রহণ বৈধ। রাসুল (সা.) মধু, কালিজিরা, হিজামা প্রভৃতির মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। উসামা ইবনে শারিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা অসুস্থ হলে চিকিৎসা গ্রহণ করো। কেননা, আল্লাহ বার্ধক্য ছাড়া সব রোগের ঔষধ সৃষ্টি করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৫৫)

* মেয়েদের সাদা স্রাব নাপাক। তরল বা সাদা স্রাব বের হয়ে যদি পায়জামায় লাগে,তাহলে যদি এক দিরহাম চেয়ে কম লাগে,তাহলে ঐ পায়জামা পরে নামাজ হবে,আর যদি এক দিরহাম বা তার চেয়ে বেশি লাগে,তাহলে সেই পায়জামা পড়ে নামাজ হবেনা। হাদীস শরীফে এসেছেঃ

قَالَ عَطَاءٌ: «تَوَضَّأْ مِنْ كُلِّ حَدَثٍ مِنَ الْبَوْلِ، وَالْخَلَاءِ، وَالْفُسَاءِ، وَالضُّرَاطِ، وَمِنْ كُلِّ حَدَثٍ يَخْرُجُ مِنَ الْإِنْسَانِ

হযরত আত্বা রহঃ বলেন, অযু কর প্রত্যেক হদসের কারণে। যেমন পেশাব, পায়খানা, বায়ু বের হওয়া শব্দসহ বা শব্দ ছাড়া। প্রতিটি বস্তু যা মানুষের শরীর থেকে বের হয়। [মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক-১/১৩৯, হাদীস নং-৫২৭]

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন / ভাই!

১.অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা গ্রহণ করা তায়াক্কুলের পরিপন্থি নয়। এমনকি নবীজি (সা:) অসুস্থ হলে চিকিৎসা গ্রহণ করতেন।সুতরাং কোন রোগে আক্রান্ত হলে উপরোক্ত আমলগুলো করা উচিত।

২. যদি তালিম এত লম্বা সময় ধরে হয় যে, নামাজ ক্বাযা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তাহলে নামাজ বাদ দিয়ে তালিম করা জায়েয হবে না। তবে যদি তালিম শেষ হওয়ার পর নামাজের সময় অবশিষ্ট থাকে তাহলে তালিমে শরিক হবে এবং তালিম শেষে নামাজ আদায় করবে। কিন্তু সর্বপরি তালিম বা অন্য কোন কারণে নামাজ ক্বাযা করা কখনই জায়েয হবে না।

৩.কাপড়ের যেই স্থানে সাদা স্রাব লেগেছে ঐ জায়াগাটুকু পবিত্র করে নিলেই উক্ত কাপড়ে নামাজ আদায় করা যাবে। তবে সবচেয়ে উত্তম হলো, নামাজের জন্য আলাদা পায়জামা রাখবে, যা নামাজের সময় পরিধান করবে।কিন্তু উক্ত নাপাক পায়জামা পরিহিত অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত করা কুরআনের আদবের পরিপন্থি।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...