আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
192 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ।

১. সালাতের সিজদায় কী কুরআন থেকে দুয়া করা যাবে?  যেমন : ৪০ টি রাব্বানা দোয়া,  দোয়ায়ে ইউনুস এই দুয়াগুলো কী সালাতের সিজদায় পড়া যাবে?
২. আমার কুরআনের অনেক দোয়া মুখস্থ নেই সেগুলো কী আমি পিরিয়ড অবস্থায় মুখস্থ করতে পারব? তিলাওয়াতের উদ্দেশ্যে না পড়ে বরং দোয়া মুখস্থ করার উদ্দেশ্যে পড়তে পারব?
৩. পিরিয়ড অবস্থায় হাদীসে বর্ণিত রুকাইয়া সংক্রান্ত দোয়া ও আমলগুলো করার মাধ্যমে সেল্ফ রুকাইয়া করতে পারব?  অর্থাৎ কুরআনের আয়াত বাদে শুধু হাদীসের দোয়াগুলো পড়ে রুকাইয়া করা যাবে?
৪. দুই সিজদার সময়সীমা একই হওয়া কী জরুরী?  কারণ সিজদায় দোয়া করলে অনেক সময় দুই সিজদার সময়সীমা এক  হয় না।  এটা কী ঠিক?
৫. একইভাবে দুই সিজদার মধ্যবর্তী সময়সীমাও কী  সিজদার সমান সময়সীমা অনুযায়ী মেইনটেইন করতে হবে?  নাকি সিজদার সময় যতটুকুই হোক না কেন দুই সিজদার মাঝখানে শুধু ২ বার “রাব্বিগ ফিরলী ” বলতে যতটুকু সময় লাগে অতটুকু হলেই হবে?
৬. এক সিজদায় যদি আমি ৩ বার “ সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা " বলি তাহলে অপর সিজদায় কী আমি ৫/৭/৯/১১ বার “ সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা ” বলতে পারব?  উভয় সিজদায় কী তাসবীহ পাঠের সংখ্যা একই হতে হবে নাকি বিজোড় সংখ্যক হলেই হবে?
৭. আমি সিজদায় দুআ করার সময় সাধারণত একটি দুয়াকে ৩ বার করে পড়ি।  একের অধিক দোয়া পড়লেও প্রতিটি দোয়াকে ৩ বার করে করে পড়ি। অনেক  সময় ৫/৭ বারও পড়ে ফেলি।  এটা কী ঠিক?
৮. শায়েখ যদি সিজদায় দুয়া করার সময় একটি দুয়া বারবার বারবার পড়তে থাকি এবং কয়বার পড়ছি সেই বিষয়ে খেয়াল না থাকে তাহলে সেটা কী ঠিক হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
নামাযের সেজদায় শুধুমাত্র কুরআন-হাদীসে বর্ণিত দু'আ গুলোই করা যাবে।
সেজদায় গিয়ে سبحان  ربي الأعلى 
ছাড়াও অন্যান্য দোয়া পড়া যাবে। সমস্যা নেই। কিন্তু দুনিয়াবি দোয়া বা আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় দুআ করা যাবে না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন

إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النَّاسِ، إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ»

নিশ্চয় এ নামায; এতে মানুষের মুখে প্রচলিত কথা বলা উচিত নয়। নিশ্চয় এটি তাসবীহ, তাকবীর এবং কুরআন তিলাওয়াতের স্থান। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৩৭] 

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেজদায় অনেক দোয়া পাঠ করতেনঃ

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ يَقُولُ فِى سُجُودِهِ « اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِى ذَنْبِى كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ সেজদায় পড়তেন আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি’ কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু ওয়া আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু”। {তাহাবী শরীফ, হাদিস নং-১৩০৭, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৮৭৮, সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-১১১২, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস নং-৬৭২, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-১৯৩১}

আরো জানুনঃ  
.
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি সালাতের সেজদায় কুরআনে বর্ণিত  উল্লেখিত ৪০ টি দোয়া,দোয়ায়ে ইউনুস পড়তে পারবেন।

(০২)
যেহেতু পিরিয়ড অবস্থায় সেই দোয়া পাঠ করা জায়েজ আছে,তাই সেই দোয়া গুলি মুখস্থ করাও বৈধ আছে।

(০৩)
পিরিয়ড অবস্থায় কুরআনের আয়াত ব্যাতিত শুধু হাদীসের দোয়াগুলো পড়ে রুকইয়া করা যাবে।
সমস্যা নেই।

(০৪)
দুই সিজদার সময়সীমা একই হওয়া জরুরী নয়।
,
(০৫)
দুই সিজদার মধ্যবর্তী সময়সীমা সিজদার সমান সময়সীমা অনুযায়ী মেইনটেইন করতে হবেনা।

(০৬)
রুকুতে কমপক্ষে তিনবার রুকুর তাসবীহ (সুবহানা রাব্বিয়াল ‘আযীম) পড়া সুন্নাত।(আবু দাউদ, হাদীস নং- ৮৮৯)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، - يَعْنِي ابْنَ سَعْدٍ - عَنْ أَيُّوبَ بْنِ مُوسَى، - أَوْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ - عَنْ رَجُلٍ، مِنْ قَوْمِهِ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، بِمَعْنَاهُ زَادَ قَالَ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَكَعَ قَالَ " سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ وَبِحَمْدِهِ " . ثَلاَثًا وَإِذَا سَجَدَ قَالَ " سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى وَبِحَمْدِهِ " . ثَلاَثًا .

আহমদ ইবনে ইউনুস (রহঃ) .... উকবা ইবনে আমের (রাঃ) হতে বর্ণিত ... পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ। এতে আরও বর্ণিত হয়েছে যে, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু করতেন, তখন “সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম ওয়া বিহামদিহি” তিনবার বলতেন। তিনি যখন সিজদা করতেন তখন “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা ওয়া বিহামদিহি” তিনবার পাঠ করতেন। (
[হাদীসটি সুনানগ্রন্থকারগণ ও ইমাম আহমাদ সংকলন করেছেন। আবূ দাউদ, হাদীস নং ৮৭০; তিরমিযী, হাদীস নং ২৬২; নাসাঈ, হাদীস নং ১০০৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৮৯৭; আহমাদ, হাদীস নং ৩৫১৪। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ১/৮৩।] 

★ রুকু সেজদার তাসবিহ যেহেতু সুন্নাত,তাই এগুলো না পড়লে বা তিন থেকে কম বা বেশি,জোড় সংখ্যক  পড়লে বা  একটার জায়গায় আরেকটা পড়লে কোনো সমস্যা নেই। 
,
নামাযের রু'কু এবং সেজদাতে তাসবীহ পাঠ সুন্নত।যদি কোনো কারণে কেউ তাসবীহ পাঠ করতে পারে না।তাহলে তার নামায ফাসিদ হবে না।তবে বিনা কারণে এমনটা করা মাকরুহ।(কিতাবুন-নাওয়াযিল-৪/৫৮)

আরো জানুনঃ  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উভয় সিজদায় তাসবীহ পাঠের সংখ্যা একই হতে হবেনা।
তিন বা তিনের অধিক হলেই সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত (এক সেজদায় তিনবার তাসবিহ পাঠ,অপর সেজদায় এর বেশি সংখ্যক বার তাসবিহ পাঠ)  সহীহ আছে।
এতে সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে।   

(০৭)
কুরআন হাদীসের বর্ণিত দোয়া আরবীতে পাঠ করলে এমনটির সুযোগ রয়েছে।
,
(০৮)
এতে কোনো সমস্যা নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...