আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
217 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (42 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

কোন ডাক্তার যদি সকল প্রেস্ক্রিপশনে প্রয়োজনীয় ইনভেস্টিগেশন দেয়ার পর ডিস্কাউন্ট লিখে দেয়।  ল্যাব বা ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সাথে কোন চুক্তি না থাকা সত্ত্বেও যদি ওরা মাস শেষে খামে করে ডাক্তারের জন্য ঐ রিপোর্ট বাবদ টাকা পাঠিয়ে দেয়
১) সেই টাকা কি নেয়া হালাল হবে?

২) সেই টাকা না নিলে ল্যাব মালিকের পকেটেই যাবে। আর রোগিকে সর্বোচ্চ যত পার্সেন্টই কমিশন লিখা হোক না কেন,  ল্যাব তত দিবে না, কারণ এতে ওদের ব্যবসায় লাভ হবে না। অন্য ডাক্তারদের রোগরাও বা অন্য রোগরাও একই ডিস্কাউন্ট চাইবে।

সেক্ষেত্রে করণীয় কি?
৩) টাকাটা কিসে ইউজ করা যাবে যদি হালাল না হয়।

জাযাকাল্লাহ খাইরান কাসিরান।

1 Answer

0 votes
by (566,400 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


কোন রোগী ডাক্তারের কাছে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে ব্যবস্থা পত্র আনতে গেলে ইসলামি ফিকহের পরিভাষায় রোগিকে বলা হবে মুস্তাজির -নিয়োগকর্তা বা অর্থ দাতা)। আর ডাক্তারকে বলা হবে আজির বা কর্মের বিনিময়ে অর্থ গ্রহীতা।

এক্ষেত্রে ইসলাম বলবে রোগির দায়িত্ব হল ডাক্তারকে তার অবস্থা জানানো এবং নির্ধারিত ভিজিট প্রদান করা। পক্ষান্তরে ডাক্তারের দায়িত্ব হলো রোগীর জন্য প্রযোজ্য চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র প্রদান করা। মেডিকেল টেস্টগুলো ডাক্তাররা করিয়ে থাকেন তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব (অর্থাৎ, রোগ নির্ণয় করে প্রেসক্রিপশান দেয়া) যথাযথভাবে আদায়ের সুবিধার্থে, তদ্রুপ কোন ল্যাব বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করালে ভালো হবে, তা নির্ধারণ করে দেয়া ডাক্তারেরই পেশাগত দায়িত্ব। নির্ধারিত ভিজিটের বিনিময়ে তিনি এসব কাজগুলো পূর্ণাঙ্গরূপে করে দিবেন।

উপরোক্ত বিশ্লেষণের নিরিখে একথাই প্রমাণিত হয় যে, মেডিকেল টেস্টে রোগী প্রেরণকারী ডাক্তারের জন্য কমিশন গ্রহণের কোন সুযোগ নেই। কারণ এক্ষেত্রে কমিশন গ্রহণের অর্থ হলো, নিজ দায়িত্ব সমাধানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য অন্যের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করেছেন। অথচ এ দায়িত্ব পূর্ণ করার জন্য তিনি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করছেন। তাই হাসপাতাল কর্তৃক ডাক্তারদের প্রদত্ত এই কমিশন শরিয়ত নিষিদ্ধ উৎকোচের অন্তর্ভুক্ত হবে। সূত্র : ইমদাদুল ফাতাওয়া ভলিয়ম ৩ পৃ:৪১০/ ফাতাওয়া রশিদিয়া পৃ:৫৫৮

বিস্তারিত জানুনঃ  

ওষুধ কোম্পানী থেকে ডাক্তারকে যদি ঔষধের স্যাম্পল, কোম্পানীর প্রচার সম্বলিত প্যাড, কলম, ক্যালেন্ডার ইত্যাদি গিফট হিসেবে দেয়, তাহলে ডাক্তার তা গ্রহণ করতে পারবে। কিন্তু অন্যের কাছে বিক্রি করে ডাক্তার তার মূল্য গ্রহণ করতে পারবেনা।

কিন্তু গিফট হিসেবে যদি নগদ টাকা বা চেক, বিদেশ ভ্রমণের প্যাকেজ বা মূল্যবান কোনো ব্যবহার সামগ্রী দেওয়া হয়, তাহলে সেগুলো আর গিফট থাকবে না বরং ঘুষের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। তখন সেগুলো গ্রহণ করা ডাক্তারের জন্য বৈধ হবে না। কারণ ইসলামি শরিয়তে ঘুষ দেওয়া নেওয়া উভয়ই নাজায়েয।

হাদিস শরিফে এসেছে,

عن عبد الله بن عمرو، قال: لعن رسول الله -صلي الله عليه وسلم – الرَّاشِيَ والمرتشي

‘আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসূল (সা.) ঘুষ দাতা ও গ্রহীতা উভয়ের উপর লানত করেছেন।’ [মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৬৫৩২]


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(১.২)
প্রশ্নে উল্লেখিত টাকা ঘুষের শামিল।
বিধায় তাহা নেওয়া ডাক্তারের জন্য জায়েজ হবেনা।
ডাক্তার না নিলে ল্যাব মালিকের পকেটেই যাবে,এহেন অবস্থাতেও উক্ত টাকা গ্রহন ডাক্তারের জন্য বৈধ হবেনা।

(০৩)
টাকাটা মূল মালিক/মূল প্রতিষ্ঠানের কাছেই ফেরত দিতে হবে।
যদি ফেরত দেওয়া অসম্ভব হয়,তাহলে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...