জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
কোন রোগী ডাক্তারের কাছে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে ব্যবস্থা পত্র আনতে গেলে ইসলামি ফিকহের পরিভাষায় রোগিকে বলা হবে মুস্তাজির -নিয়োগকর্তা বা অর্থ দাতা)। আর ডাক্তারকে বলা হবে আজির বা কর্মের বিনিময়ে অর্থ গ্রহীতা।
এক্ষেত্রে ইসলাম বলবে রোগির দায়িত্ব হল ডাক্তারকে তার অবস্থা জানানো এবং নির্ধারিত ভিজিট প্রদান করা। পক্ষান্তরে ডাক্তারের দায়িত্ব হলো রোগীর জন্য প্রযোজ্য চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র প্রদান করা। মেডিকেল টেস্টগুলো ডাক্তাররা করিয়ে থাকেন তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব (অর্থাৎ, রোগ নির্ণয় করে প্রেসক্রিপশান দেয়া) যথাযথভাবে আদায়ের সুবিধার্থে, তদ্রুপ কোন ল্যাব বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করালে ভালো হবে, তা নির্ধারণ করে দেয়া ডাক্তারেরই পেশাগত দায়িত্ব। নির্ধারিত ভিজিটের বিনিময়ে তিনি এসব কাজগুলো পূর্ণাঙ্গরূপে করে দিবেন।
উপরোক্ত বিশ্লেষণের নিরিখে একথাই প্রমাণিত হয় যে, মেডিকেল টেস্টে রোগী প্রেরণকারী ডাক্তারের জন্য কমিশন গ্রহণের কোন সুযোগ নেই। কারণ এক্ষেত্রে কমিশন গ্রহণের অর্থ হলো, নিজ দায়িত্ব সমাধানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য অন্যের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করেছেন। অথচ এ দায়িত্ব পূর্ণ করার জন্য তিনি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করছেন। তাই হাসপাতাল কর্তৃক ডাক্তারদের প্রদত্ত এই কমিশন শরিয়ত নিষিদ্ধ উৎকোচের অন্তর্ভুক্ত হবে। সূত্র : ইমদাদুল ফাতাওয়া ভলিয়ম ৩ পৃ:৪১০/ ফাতাওয়া রশিদিয়া পৃ:৫৫৮
বিস্তারিত জানুনঃ
ওষুধ কোম্পানী থেকে ডাক্তারকে যদি ঔষধের স্যাম্পল, কোম্পানীর প্রচার সম্বলিত প্যাড, কলম, ক্যালেন্ডার ইত্যাদি গিফট হিসেবে দেয়, তাহলে ডাক্তার তা গ্রহণ করতে পারবে। কিন্তু অন্যের কাছে বিক্রি করে ডাক্তার তার মূল্য গ্রহণ করতে পারবেনা।
কিন্তু গিফট হিসেবে যদি নগদ টাকা বা চেক, বিদেশ ভ্রমণের প্যাকেজ বা মূল্যবান কোনো ব্যবহার সামগ্রী দেওয়া হয়, তাহলে সেগুলো আর গিফট থাকবে না বরং ঘুষের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। তখন সেগুলো গ্রহণ করা ডাক্তারের জন্য বৈধ হবে না। কারণ ইসলামি শরিয়তে ঘুষ দেওয়া নেওয়া উভয়ই নাজায়েয।
হাদিস শরিফে এসেছে,
عن عبد الله بن عمرو، قال: لعن رسول الله -صلي الله عليه وسلم – الرَّاشِيَ والمرتشي
‘আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসূল (সা.) ঘুষ দাতা ও গ্রহীতা উভয়ের উপর লানত করেছেন।’ [মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৬৫৩২]
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত টাকা ঘুষের শামিল।
বিধায় তাহা নেওয়া ডাক্তারের জন্য জায়েজ হবেনা।
ডাক্তার না নিলে ল্যাব মালিকের পকেটেই যাবে,এহেন অবস্থাতেও উক্ত টাকা গ্রহন ডাক্তারের জন্য বৈধ হবেনা।
(০৩)
টাকাটা মূল মালিক/মূল প্রতিষ্ঠানের কাছেই ফেরত দিতে হবে।
যদি ফেরত দেওয়া অসম্ভব হয়,তাহলে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।