উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ইস্তেগফার অর্থ হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া।
সেটা আস্তাগফিরুল্লাহ বললেও হবে,রব্বিগ ফিরলি বললেও হবে।
(যেমনটি প্রশ্নে উল্লেখ করা হয়েছে।)
মোট কথা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার নাম হলো ইস্তেগফার,তাহা যেকোনো শব্দ বা যেকোনো ভাষাতেই হোকনা কেনো।
,
আল্লাহর কাছে ইস্তেগফারের গুরুত্ব অপরিসীম।
কুরআন কারিমে এসেছেঃ
হযরত নূহ আঃ বলেছিল,
ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﺍﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭﺍ ﺭَﺑَّﻜُﻢْ ﺇِﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﻏَﻔَّﺎﺭًﺍ
(হে আল্লাহ!)অতঃপর(আমার কওমকে) বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল।
ﻳُﺮْﺳِﻞِ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢ ﻣِّﺪْﺭَﺍﺭًﺍ
তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন।
ﻭَﻳُﻤْﺪِﺩْﻛُﻢْ ﺑِﺄَﻣْﻮَﺍﻝٍ ﻭَﺑَﻨِﻴﻦَ ﻭَﻳَﺠْﻌَﻞ ﻟَّﻜُﻢْ ﺟَﻨَّﺎﺕٍ ﻭَﻳَﺠْﻌَﻞ ﻟَّﻜُﻢْ ﺃَﻧْﻬَﺎﺭًﺍ
তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।
সূরা নুহ-১০-১১-১২
.
নুহ (আ.) আল্লাহর কাছে বন্যা থেকে নিজ ছেলেকে পরিত্রাণ দেয়ার আবেদন করেন। কিন্তু এটিকে আল্লাহ তায়ালা অন্যায় বলে গণ্য করলে নুহ (আ.) এ বলে ইস্তেগফার করেন, ‘হে প্রভু, আমি আপনার কাছে এমন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা থেকে পানাহ চাই যার ব্যাপারে আমার কোনো জ্ঞান নেই। আপনি আমাকে ক্ষমা ও দয়া না করলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।’ (সূরা হুদ : ৪৭)।
মুসা (আ.) এক মিসরিকে হত্যা করে ফেললে তৎক্ষণাৎ অনুতপ্ত হয়ে এ বলে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, ‘হে রব, আমি নিজের ওপর জুলুম করেছি। তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ (সূরা কাসাস : ১৬)।
ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে বলেন, ‘আল্লাহ তো তিনি যার ব্যাপারে আমি আশা রাখি যে, তিনি আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’ (সূরা শুআরা : ৮২)।
ইউনুস (আ.) মাছের পেটে গিয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেন, ‘আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আপনি মহান। নিশ্চয় আমি জুলুমকারীদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সূরা আম্বিয়া : ৮৭)।
দাউদ (আ.) এর ব্যাপারে এসেছে, ‘আর দাউদ মনে করল আমি তাকে পরীক্ষায় নিপতিত করেছি। তখন সে তার রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল।’ (সূরা সোয়াদ : ২৪)।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি “আল্লাহর শপথ, আমি প্রতিদিন সত্তরবারের চেয়েও অধিক আল্লাহর ইস্তেগফার করি ও তওবা করি”। (বুখারী)
,
★★ইস্তেগফারের ফজীলতঃ
ইস্তেগফার আল্লাহর ইবাদত। খালেছ দিলে ইস্তেগফার করার কারনে গুনাহ মাফ হয়, বৃষ্টি বর্ষণ হয়, সন্তান ও সম্পদ দ্বারা সাহায্য করা হয় এবং জান্নাতের অধিকারী করা হয়। ইস্তেগফারের ফলে সর্বধিক থেকে শক্তি ও সামর্থ্য বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ “তিনি তোমাদের শক্তির সাথে আরো শক্তি বৃদ্ধি করবেন” (সুরা হুদ ৫২)
ইস্তেগফারের ফলে সুখ-সমৃদ্ধি ও প্রাপ্য হক অর্জিত হয়। ইস্তেগফারের ফলে বালা-মুসিবত দুরীভূত হয়।
১. এটি গোনাহকে মুছে ফেলে ও বান্দার মর্যাদা উন্নীত করে।
২. এর মাধ্যমে বালামুসিবত দূর হয়।
৩. রিজিক প্রশস্ত হয়।
৪. পরিবারে শান্তি আসে।
৫. শরীরে ঈমানি শক্তি বৃদ্ধি পায়।
৬. হৃদয় স্বচ্ছ ও নির্মল হয়।
৭. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়।
৮. চিন্তা-পেরেশানি দূর হয়।
,
★প্রিয় বোন! শরীয়তের বিধান হলো খালেছ দিলে ইস্তেগফার পাঠ করলে,এবং আল্লাহর কাছে ভবিষ্যতে গুনাহ না করার ওয়াদা,আল্লাহর কাছে গুনাহের প্রতি লজ্জিত অনুতপ্ত হলে আল্লাহ চাহেন তো আপনার সক গুনাহই মাফ হয়ে যাবে।
,
এক বার ইস্তেগফার পড়লে একটিই গুনাহ মাফ হবে,তার বেশি বা কম নয়,এমনটি কোনো হাদীসে নেই।
,
খালেছ দিলে ইস্তেগফার পড়লে তওবা করলে আল্লাহ তায়ালা সব গুনাহই মাফ করে দিতে পারেন।
,
তাই বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়া দরকার।