আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
556 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
আস্সালামুয়ালাইকুম।

আমি শুনেছি একবার আসতাগফিরুল্লাহ পড়লে একটি গুনাহ মাফ হয়।এটা কি সঠিক?

আমি যদি রাব্বিগফিরলি পড়ি তাহলেও কি একটি করে গুনাহ মাফ হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم  

ইস্তেগফার অর্থ হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া।
সেটা আস্তাগফিরুল্লাহ বললেও হবে,রব্বিগ ফিরলি বললেও হবে।
(যেমনটি প্রশ্নে উল্লেখ করা হয়েছে।) 
মোট কথা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার নাম হলো ইস্তেগফার,তাহা যেকোনো শব্দ বা যেকোনো ভাষাতেই হোকনা কেনো।
,
আল্লাহর কাছে ইস্তেগফারের গুরুত্ব অপরিসীম।
কুরআন কারিমে এসেছেঃ 
 
হযরত নূহ আঃ বলেছিল,

ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﺍﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭﺍ ﺭَﺑَّﻜُﻢْ ﺇِﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﻏَﻔَّﺎﺭًﺍ
(হে আল্লাহ!)অতঃপর(আমার কওমকে) বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল।

ﻳُﺮْﺳِﻞِ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢ ﻣِّﺪْﺭَﺍﺭًﺍ
তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন।

ﻭَﻳُﻤْﺪِﺩْﻛُﻢْ ﺑِﺄَﻣْﻮَﺍﻝٍ ﻭَﺑَﻨِﻴﻦَ ﻭَﻳَﺠْﻌَﻞ ﻟَّﻜُﻢْ ﺟَﻨَّﺎﺕٍ ﻭَﻳَﺠْﻌَﻞ ﻟَّﻜُﻢْ ﺃَﻧْﻬَﺎﺭًﺍ
তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।
সূরা নুহ-১০-১১-১২
.
নুহ (আ.) আল্লাহর কাছে বন্যা থেকে নিজ ছেলেকে পরিত্রাণ দেয়ার আবেদন করেন। কিন্তু এটিকে আল্লাহ তায়ালা অন্যায় বলে গণ্য করলে নুহ (আ.) এ বলে ইস্তেগফার করেন, ‘হে প্রভু, আমি আপনার কাছে এমন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা থেকে পানাহ চাই যার ব্যাপারে আমার কোনো জ্ঞান নেই। আপনি আমাকে ক্ষমা ও দয়া না করলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।’ (সূরা হুদ : ৪৭)।

মুসা (আ.) এক মিসরিকে হত্যা করে ফেললে তৎক্ষণাৎ অনুতপ্ত হয়ে এ বলে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, ‘হে রব, আমি নিজের ওপর জুলুম করেছি। তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ (সূরা কাসাস : ১৬)।

ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে বলেন, ‘আল্লাহ তো তিনি যার ব্যাপারে আমি আশা রাখি যে, তিনি আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’ (সূরা শুআরা : ৮২)।

ইউনুস (আ.) মাছের পেটে গিয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেন, ‘আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আপনি মহান। নিশ্চয় আমি জুলুমকারীদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সূরা আম্বিয়া : ৮৭)।

দাউদ (আ.) এর ব্যাপারে এসেছে, ‘আর দাউদ মনে করল আমি তাকে পরীক্ষায় নিপতিত করেছি। তখন সে তার রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল।’ (সূরা সোয়াদ : ২৪)।

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি “আল্লাহর শপথ, আমি প্রতিদিন সত্তরবারের চেয়েও অধিক আল্লাহর ইস্তেগফার করি ও তওবা করি”। (বুখারী) 
,
★★ইস্তেগফারের ফজীলতঃ 
ইস্তেগফার আল্লাহর ইবাদত। খালেছ দিলে ইস্তেগফার করার কারনে গুনাহ মাফ হয়, বৃষ্টি বর্ষণ হয়, সন্তান ও সম্পদ দ্বারা সাহায্য করা হয় এবং জান্নাতের অধিকারী করা হয়। ইস্তেগফারের ফলে সর্বধিক থেকে শক্তি ও সামর্থ্য বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ “তিনি তোমাদের শক্তির সাথে আরো শক্তি বৃদ্ধি করবেন” (সুরা হুদ ৫২) 
ইস্তেগফারের ফলে সুখ-সমৃদ্ধি ও প্রাপ্য হক অর্জিত হয়। ইস্তেগফারের ফলে বালা-মুসিবত দুরীভূত হয়। 

১. এটি গোনাহকে মুছে ফেলে ও বান্দার মর্যাদা উন্নীত করে। 
২. এর মাধ্যমে বালামুসিবত দূর হয়। 
৩. রিজিক প্রশস্ত হয়। 
৪. পরিবারে শান্তি আসে। 
৫. শরীরে ঈমানি শক্তি বৃদ্ধি পায়। 
৬. হৃদয় স্বচ্ছ ও নির্মল হয়। 
৭. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়। 
৮. চিন্তা-পেরেশানি দূর হয়।
,
★প্রিয় বোন! শরীয়তের বিধান হলো খালেছ দিলে ইস্তেগফার পাঠ করলে,এবং আল্লাহর কাছে ভবিষ্যতে গুনাহ না করার ওয়াদা,আল্লাহর কাছে গুনাহের প্রতি লজ্জিত অনুতপ্ত হলে আল্লাহ চাহেন তো আপনার সক গুনাহই মাফ হয়ে যাবে।
,
এক বার ইস্তেগফার পড়লে একটিই গুনাহ মাফ হবে,তার বেশি বা কম  নয়,এমনটি কোনো হাদীসে নেই।
,
খালেছ দিলে ইস্তেগফার পড়লে তওবা করলে আল্লাহ তায়ালা   সব গুনাহই মাফ করে দিতে পারেন।
,
তাই বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়া দরকার।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...