উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী আশুরার দিনে শুধু ২ টি আমলের কথা পাওয়া যায়।
১. রোযা রাখা
২. পরিবারর উত্তম খানার ব্যবস্থা করা।
(যদিও উত্তম খানা সংক্রান্ত হাদীসটি যয়ীফ।
তবে যখন এই হাদীসকে অন্যান্য হাদীসের সাথে মিলানো হবে,তখন এর শক্তি বেড়ে যায়,তাই এটা আমলযোগ্য।
শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাকী ৩৭৯৫.মাকাসেদে হাসানাহ ৪২৭)
এ দিনে রোযা রাখার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমযানের পর আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযা হল সর্বশ্রেষ্ঠ।’
أفضل الصيام بعد رمضان شهر الله المحرم
-সহীহ মুসলিম ২/৩৬৮; জামে তিরমিযী ১/১৫৭
এর মধ্যে আশুরার রোযার ফযীলত আরও বেশি।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমযান ও আশুরায় যেরূপ গুরুত্বের সঙ্গে রোযা রাখতে দেখেছি অন্য সময় তা দেখিনি।’
ما رأيت النبي صلى الله عليه وسلم يتحرى صيام يوم فضله على غيره إلا هذا اليوم يوم عاشوراء وهذا الشهر يعني رمضان
-সহীহ বুখারী ১/২১৮
হযরত আলী রা.কে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছিল, রমযানের পর আর কোন মাস আছে, যাতে আপনি আমাকে রোযা রাখার আদেশ করেন? তিনি বললেন, এই প্রশ্ন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট জনৈক সাহাবী করেছিলেন, তখন আমি তাঁর খেদমতে উপসি'ত ছিলাম। উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘রমযানের পর যদি তুমি রোযা রাখতে চাও, তবে মুহররম মাসে রাখ। কারণ, এটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহ তাআলা একটি জাতির তওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তওবা কবুল করবেন।’-জামে তিরমিযী ১/১৫৭
অন্য হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে, আশুরার রোযার কারণে আল্লাহ তাআলা অতীতের এক বছরের (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।’
صيام يوم عاشوراء أحتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله
-সহীহ মুসলিম ১/৩৬৭; জামে তিরমিযী ১/১৫৮
আশুরার রোযা সম্পর্কে এক হাদীসে আছে যে, ‘তোমরা আশুরার রোযা রাখ এবং ইহুদীদের সাদৃশ্য পরিত্যাগ করে; আশুরার আগে বা পরে আরো একদিন রোযা রাখ।’
صوموا عاشوراء وخالفوا فيه اليهود، صوموا قبله يوما أو بعده يوما
-মুসনাদে আহমদ ১/২৪১
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তাহলে ৯ তারিখেও অবশ্যই রোযা রাখব।’-সহীহ মুসলিম ১/৩৫৯
,
,
হাদীস শরীফে আছে
عن أبي ہریرۃ رضي اللّٰہ عنہ أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم قال: من أوسع علی عیالہ وأہلہ یوم عاشوراء أوسع اللّٰہ علیہ سائر سنتہ۔ قال البیہقي بعد إخراج ہذا الحدیث عن عدۃ طرق: ہذہ الأسانید وإن کانت ضعیفۃ فہي إذا ضم بعضہا إلی بعض أخذت قوۃ۔ (شعب الإیمان للبیہقي ۳؍۳۶۶ رقم: ۳۷۹۵)
রাসুল সাঃ বলেন যে ব্যাক্তি আশুরার দিনে পরিবারে উত্তম খানার ব্যবস্থা করবে,সারা বছর আল্লাহ তায়ালা তার পরিবারে প্রশস্ত খাবারের ব্যবস্থা করে দিবেন।
যদিও এই হাদীসটি যয়ীফ।
তবে যখন এই হাদীসকে অন্যান্য হাদীসের সাথে মিলানো হবে,তখন এর শক্তি বেড়ে যায়,তাই এটা আমলযোগ্য।
মাকাসেদে হাসানাহ গ্রন্থে এসেছে
المقاصد الحسنۃ (صـ۴۲۷): [۱۱۹۳]حدیث :من وسع علی عیالہ فی یوم عاشوراء وسع اﷲ علیہ السنۃکلھا،الطبرانی والبیھقی فی الشعب وفضائل الاوقات وابوالشیخ عن ابن مسعودؓ … وقال ان اسانیدہ کلھا ضعیفۃ ولکن اذا ضم بعضھا الی بعض افاد قوۃ،بل قال العراقی فی امالیہ :لحدیث ابی ھریرۃؓ طرق صحح بعضھا ابن ناصر الحافظ۔
যার সারমর্ম হলো যদিও এই হাদীসটি যয়ীফ।
তবে যখন এই হাদীসকে অন্যান্য হাদীসের সাথে মিলানো হবে,তখন এর শক্তি বেড়ে যায়,তাই এটা আমলযোগ্য।
আদুররুল মুখতার এবং ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছে
وفی الدرالمختار مع ردالمحتار (۴۱۸/۲): حدیث التوسعۃ علی العیال یوم عاشوراء صحیح۔
وفی الشامیۃ : حدیث التوسعۃ وھو من وسع علی عیالہ یوم عاشوراء وسع اﷲ علیہ السنۃ کلھا قال جابر جربتہ اربعین عاما فلم یتخلف ……حدیث التوسعۃ ثابت صحیح کماقال الحافظ السیوطی فی الدرر۔
যার সারমর্ম হলো এই হাদীস প্রমানীত,আমলযোগ্য।
,
★★সুতরাং এই দুটি আমল ব্যাতিত প্রশ্নে উল্লেখিত এই দিনকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোনো কাজ করা যেমন,খতম পড়ানো,ফাতেহা পড়ানো,নির্দিষ্ট করে এই দিনে হুজুর দেরকে বাড়িতে নিয়ে এসে খাবার খাওয়ানো সবই বিদয়াত।
,
তবে এই দিনকে কেন্দ্র না করে অন্যান্য দিনের মতো এই দিনেও জরূরী মনে না করে
শরীয়ত সম্মত যেকোনো ইবাদত করা যেতে পারে।
এতে কোনো সমস্যা নেই।