আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
179 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম।দয়া করে উত্তর টা দ্রুত দিলে উপকৃত হবো।এই উত্তরের উপর নির্ভর করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আগে শুধু তালাকের বিধানটা জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার মনে হয় বিবাহের শুরু থেকে তালাক পর্যন্ত জানানো টা দরকার।তাই পুনরায় আবারো প্রশ্ন করছি।জানাটা খুব জরুরী।

আমার বান্ধবী ২০২০ সালে রেজিস্ট্রি করে কাউকে না জানিয়ে। রেজিস্ট্রি করার সময় কাজি অফিসে শুধু মেয়ে আর বর উপস্থিত ছিল আর কেউ উপস্থিত ছিল না। ২০২১ সালের রমজান মাসে আমার বান্ধবি কাবিন করে এবং তখন থেকে সংসার শুরু করে।কাবিন করার সময় যারা যারা সাক্ষী হিসেবে ছিল তা নিম্নরূপ:

মেয়ে পক্ষ হতে
১ং সাক্ষী ছিলো বরের বন্ধুর মেয়ে বন্ধুর(গার্লফ্রেন্ড) দূর সম্পর্কের এক মামা ( উনি উকিল বাবা ছিলো)
২ নং সাক্ষী ছিলো বরের ছেলে বন্ধুর মেয়ে বন্ধুটি(গার্লফ্রেন্ড)

ছেলে  পক্ষ হতে

১ নং সাক্ষী ছিলো বরের ছেলে বন্ধুর মেয়ে বন্ধুটি(গার্লফ্রেন্ড) যে বাসায় ভাড়া থাকতো সেই বাসার বাড়িওয়ালা
২ নং সাক্ষী ছিলো বরের ছেলে বন্ধুটি

এভাবে বিয়ে সম্পাদিত হয়।এক কথায় পালিয়ে বিয়ে করে।আমার বান্ধবী তার বরের ২য় স্ত্রী ছিল।এসব কিছু জেনে বুঝেই আমার বান্ধবী বিয়েতে আগায়।বিয়ের পর আমার বান্ধবীর মনে হতে লাগল তার বর সমতা বজায় রাখতে পারছে না,তাকে খুব কম সময়ই দিচ্ছে।আমার বান্ধবী তার বরের অনেক সঙ্গ পেতে চাইত। কিন্তু তার বর দৈনিক ২-৩+/- ঘন্টার মতো সময় দিতো। আসলে তার বর দুই সংসার এবং কর্মজীবন নিয়ে হিমশিম খাচ্ছিল।আর এই বিয়ে যেহেতু বর পরিবারে না জানিয়ে করেছে তাই সে যখন তখন আমার বান্ধবী কে সময় দিতে পারতো না।বরের আরো কিছু সমস্যা ছিল।যেমন আমার বান্ধবীর সামনে আগের বউয়ের অনেক প্রশংসা করতো।এসব আমার বান্ধবি সহ্য করতে পারে নি।এছাড়াও অহরহ মিথ্যা বলতো এবং আমার বান্ধবী বুঝতে পেরে অনেক কষ্ট পেত।তবে বান্ধবীর বর হাত খরচ, সাংসারিক খরচ এবং যাবতীয় অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এগিয়ে ছিল,এ ব্যাপারে কোনো সমস্যা করে নি কখনো। অন্যান্য দায়িত্বও মোটামুটি পালন করত।

অবশেষে ২০২১ সালের আগষ্ট মাসে আমার বান্ধবী তার বরকে তালাক দেয়। কিন্তু তার বর ডিভোর্স লেটারে এখনো সাইন করে নাই।এই ডিভোর্সও মানে নাই।সে এখনো আমার বান্ধবীর পিছনে লেগে পড়ে আছে সংসার করার জন্য। কিন্তু আমার বান্ধবী এই সংসার করতে ইচ্ছুক নয়।

আমার বান্ধবীর ভাই বা বাবা নেই।মা বৃদ্ধা।

এখন আমার প্রশ্ন হলো এই বিয়ে কি হয়েছে,যেহেতু বৈধ কোনো গার্ডিয়ান দ্বারা বিবাহ সম্পাদিত হয়নি।আর তালাক কি সংগঠিত হয়েছে? এই মুহূর্তে আসলে করণীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ২০২১ সালের রমজান মাসে বিবাহের সময় যদি মেয়ে বালেগাহ হয়ে থাকে,তাহলে যেহেতু এই বিবাহ একাধিক সাক্ষীর উপস্থিতিতে হয়েছে,তাই উল্লেখিত বিবাহ বিবাহ শুদ্ধ হয়ে গিয়েছে।

এখন বিষয় হলো,এই তালাক পতিত হবে?
নাকি হবেনা?

এই বিষয়ে ফতোয়া পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে।     

তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(ইবনে মাজাহ ২০৮১,বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

অথবা খোলা করতে পারে।
খোলা হচ্ছে: কোন কিছুর বিনিময়ে স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে স্বামী সে বিনিময়টি গ্রহণ করে স্ত্রীকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে; এ বিনিময়টি স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে প্রদত্ত মোহরানা হোক কিংবা এর চেয়ে বেশি সম্পদ হোক কিংবা এর চেয়ে কম হোক।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
   
 اَلطَّلَاقُ مَرَّتٰنِ۪ فَاِمۡسَاکٌۢ بِمَعۡرُوۡفٍ اَوۡ تَسۡرِیۡحٌۢ بِاِحۡسَانٍ ؕ وَ لَا یَحِلُّ لَکُمۡ اَنۡ تَاۡخُذُوۡا مِمَّاۤ اٰتَیۡتُمُوۡهُنَّ شَیۡئًا اِلَّاۤ اَنۡ یَّخَافَاۤ اَلَّا یُقِیۡمَا حُدُوۡدَ اللّٰهِ ؕ فَاِنۡ خِفۡتُمۡ اَلَّا یُقِیۡمَا حُدُوۡدَ اللّٰهِ ۙ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡهِمَا فِیۡمَا افۡتَدَتۡ بِهٖ ؕ تِلۡکَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ فَلَا تَعۡتَدُوۡهَا ۚ وَ مَنۡ یَّتَعَدَّ حُدُوۡدَ اللّٰهِ فَاُولٰٓئِکَ هُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۲۲۹﴾

তালাক দু’বার। অতঃপর বিধি মোতাবেক রেখে দেবে কিংবা সুন্দরভাবে ছেড়ে দেবে। আর তোমাদের জন্য হালাল নয় যে, তোমরা তাদেরকে যা দিয়েছ, তা থেকে কিছু নিয়ে নেবে। তবে উভয়ে যদি আশঙ্কা করে যে, আল্লাহর সীমারেখায় তারা অবস্থান করতে পারবে না। সুতরাং তোমরা যদি আশঙ্কা কর যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা কায়েম রাখতে পারবে না তাহলে স্ত্রী যা দিয়ে নিজকে মুক্ত করে নেবে তাতে কোন সমস্যা নেই। এটা আল্লাহর সীমারেখা। সুতরাং তোমরা তা লঙ্ঘন করো না। আর যে আল্লাহর সীমারেখাসমূহ লঙ্ঘন করে, বস্তুত তারাই যালিম।

বিস্তারিত জানুনঃ

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত বোন কি স্বামীর পক্ষ থেকে তালাকের অনুমতি প্রাপ্তা হয়েছিলো কিনা?
যদি অনুমতি না পেয়ে থাকে,তাহলে এই তালাক হয়নি।
সে এখনো সেই স্বামীর স্ত্রী হিসেবেই আছে।
অন্যত্রে তার বিবাহ জায়েজ হবেনা।
,
সে যদি উক্ত স্বামীর পক্ষ থেকে নিকাহনামার ১৮ নিং ধারা অনুপাতে হোক বা অন্য কোনোভাবেই হোক, তালাক প্রদানের ক্ষমতা পেয়ে থাকে,তাহলে সে কি শব্দ বলে/লিখে  তালাক দিয়েছিলো?
স্বামীকে তালাক দিলে এটি তালাক হবেনা।
কারন স্ত্রীরা স্বামীকে তালাক দিতে পারেনা।
নিজেকেই তালাক দিতে হয়।
এভাবে বলতে হয় যে আমি স্বামী প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নিজেকে নিজে তালাক দিলাম বা নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান করিলাম।  

★যদি সেই মহিলা স্বামীর পক্ষ থেকে তালাকের ক্ষমতা পাওয়ার পর  উপরোক্ত বাক্য বলে বা উপরোক্ত বাক্য লিখে তালাক দেয়,তাহলেই কেবল তালাক হবে।
নতুবা নয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...