উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
.
(০১) নামাজ ছেড়ে দেওয়া মারাত্মক গুনাহ। হাদিস শরিফে নামাজ বর্জনকারীর প্রতি কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা ও কুফরির মধ্যে পার্থক্য হলো নামাজ বর্জন করা।’ (তিরমিজি, মিশকাত, পৃষ্ঠা ৩৩২)
তিনি আরো বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজ আদায় করে না, দ্বিন ইসলামে তার কোনো অংশ নেই।’ (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মিশকাত, পৃষ্ঠা ৪৫২)
,
বেনামাজি কিয়ামতের দিন চরমভাবে লাঞ্ছিত ও অপদস্থ হবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্মরণ করো সেই চরম সংকটের দিনের কথা, যেদিন তাদেরকে আহ্বান করা হবে সিজদা করার জন্য, কিন্তু তারা করতে সক্ষম হবে না।
,
তাদের দৃষ্টি অবনত, হীনতা তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে। অথচ যখন তারা নিরাপদ ছিল তখন তো তাদেরকে আহ্বান করা হয়েছিল (সুরা : কালাম, আয়াত : ৪২, ৪৩)।
,
নামাজ বর্জনকারী জাহান্নামের আগুনে জ----লবে। যেমন—কোরআনে এসেছে, অপরাধীদের সম্পর্কে (আল্লাহ) বলবেন, ‘তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে নীত করেছে? তারা বলবে, আমরা নামাজ পড়তাম না, অভাবগ্রস্তকে আহার্য দিতাম না, আমরা সমালোচকদের সঙ্গে সমালোচনা করতাম এবং প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম। (সুরা : মুদ্দাসসির, আয়াত : ৪১-৪৬)
,
নামাজ বর্জনকারী আল্লাহর নিয়ামত, বরকত ও রহমত থেকে বঞ্চিত হবে। আল্লাহর ফেরেশতারা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন, তার দোয়া কবুল হয় না, তার চেহারার নুর উঠে যায়, তার জীবিকা সংকীর্ণ করা হয়। ফলে সে ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় কষ্ট পায়।
,
তাই শিশুদের ১০ বছর বয়স থেকেই নামাজের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই বয়সে নামাজ ছেড়ে দিলে মা-বাবাকে তাকে শাস্তি দিতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের সন্তানদের বয়স সাত বছর হলে নামাজের আদেশ করো। আর ১০ হলে নামাজ ছাড়ার জন্য শাস্তি প্রদান করো। শরয়ি আইন অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা এবং ইসলামী সরকারপ্রধান নামাজ বর্জনের জন্য শাস্তি প্রয়োগ করতে পারেন।
,
ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম মুজানির (রহ.)-এর মতে, কোনো ব্যক্তি অলসতাবশত ইচ্ছাকৃত নামাজ ছেড়ে দিলে তাকে আটক করা হবে। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.) ও কোনো কোনো শাফেয়ি আইনবিদের মতে, নামাজ বর্জনকারীকে হত্যা করা হবে।
কেননা রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত নামাজ বর্জন করল, সে কুফরি করল (সহিহ মুসলিম : ১/১২৪)
,
হানাফি ইমামরা বলেন, আল্লাহ তাআলা তাওহিদে বিশ্বাসী পাপীকেও মুমিন বলে সম্বোধন করেছেন। আর নামাজ নেক আমলের অন্যতম। যে ব্যক্তি তা বর্জন করল সে পাপী-ফাসেক হলো। ফলে নামাজ বর্জনকারীকে জেলখানায় আটক রাখা হবে, যতক্ষণ না নামাজ পড়ার স্বীকৃতি দান করে (বাহরে রায়েক : ৫/৪৯; আল-বাদায়ে ওয়াস সানায়ে : ৭/৬৪;
,
সুতরাং নামাজ কখনোই ছাড়া যাবেনা।
কেহ যদি আলসেমী করতে গিয়ে বলে যে নামাজ পড়তে ভালো লাগেনা,বা নামাজ পড়তে ইচ্ছা করেনা,তাহলে এমনটি বলা ঠিক নয়।
নামাজ তাকে পড়তেই হবে।
,
এক্ষেত্রে তার নামাজ না পড়ার গুনাহ হবে।
,
আর যদি সে নামাজ পড়তে ভালো লাগেনা,সত্যিকার ভাবেই তিরস্কার মূলক ভাবে বলে থাকে,তাহলে এমন বাক্য বলা কুফরি।
সে কুফরী মূলক কাজ করলো।
তাকে তওবা করতে হবে।
,
(০২) শরীয়তের বিধান হলো কেহ যদি বলে যে উপরে আল্লাহ নিচে অমুক,,,,
এটা যদি সে প্রকৃত ভাবে বিশ্বাস করে বলে,এবং এমনটি মনে প্রানে আকীদা হিসেবে মানে,তাহলে এমনটি বলা শিরকি কাজ।
এহেন কথা বলা হারাম।
তাকে তওবা করতে হবে।
,
আর যদি সে না জেনে না বুঝে এমনটি বলে থাকে,তাহলে শিরিক হবেনা।
তবে তারপরেও এহেন বাক্য ব্যবহার করা যাবেনা।
নাজায়েজ।
,
(০৩) প্রানীর ছবিই হারাম।
ঘরে টাঙ্গিয়ে রাখলেও হারাম,বইয়ের মতো করে এলবাম বানানোও হারাম।
,
حَدَّثَنَا ابْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ سَمِعْتُ أَبَا طَلْحَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيْهِ كَلْبٌ وَلَا صُوْرَةُ تَمَاثِيْلَ
আবূ ত্বলহা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে বাড়িতে কুকুর থাকে আর প্রাণীর ছবি থাকে সেথায় ফেরেশতা প্রবেশ করে না। (বুখারী ৩২২৬, ৩৩২২, ৪০০২, ৫৯৪৯, ৫৯৫৮) (মুসলিম ৩৭/২৬ হাঃ ২১০৬)
,
إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّصلى الله عليه وسلم أَنَّهَا أَخْبَرَتْه“ أَنَّهَا اشْتَرَتْ نُمْرُقَةً فِيهَا تَصَاوِيرُ فَلَمَّا رَآهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَامَ عَلَى الْبَابِ فَلَمْ يَدْخُلْ فَعَرَفْتُ فِي وَجْهِهِ الْكَرَاهِيَةَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَتُوبُ إِلَى اللهِ وَإِلٰى رَسُوْلِه„ مَاذَا أَذْنَبْتُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا بَالُ هٰذِهِ النُّمْرُقَةِ قَالَتْ فَقُلْتُ اشْتَرَيْتُهَا لَكَ لِتَقْعُدَ عَلَيْهَا وَتَوَسَّدَهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أَصْحَابَ هٰذِه„ الصُّوَرِ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيُقَالُ لَهُمْ أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ وَقَالَ إِنَّ الْبَيْتَ الَّذِي فِيهِ الصُّوَرُ لاَ تَدْخُلُهُ الْمَلاَئِكَةُ.
নাবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একটি বালিশ বা গদি কিনে এনেছিলাম, যার মধ্যে ছবি ছিল। যখন রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামসেই ছবিটি দেখলেন, তিনি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে গেলেন; ভিতরে প্রবেশ করলেন না। আমি বুঝতে পারলাম যে, তাঁর চোখে এটা অত্যন্ত অপছন্দনীয় ব্যাপার। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আল্লাহর কাছে তাওবাহ করছি এবং তাঁর রাসূলের কাছে ফিরে আসছি। আমি কী অন্যায় করেছি? তখন রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেন, এ বালিশ কিসের জন্য? আমি বললাম, এটা আপনার জন্য খরিদ করে এনেছি, যাতে আপনি বসতে পারেন এবং হেলান দিতে পারেন। তখন রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেন, এই ছবি নির্মাতাকে ক্বিয়ামাতের দিন শাস্তি প্রদান করা হবে এবং বলা হবে, যা তুমি সৃষ্টি করেছ তার প্রাণ দাও এবং তিনি আরও বলেন, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে, সে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না। [বুখারী ২১০৫]ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৩)
,
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ الَّذِينَ يَصْنَعُونَ هَذِهِ الصُّوَرَ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُقَالُ لَهُمْ أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ ".
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যারা এ জাতীয় প্রাণীর) ছবি তৈরী করে, ক্বিয়ামাতের দিন তাদের শাস্তি দেয়া হবে। তাদের বলা হবেঃ তোমরা যা বানিয়েছিলে তাতে জীবন দাও। [বুখারী ৭৫৫৮; মুসলিম ৩৭/২৬, হাঃ ২১০৮] ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৪)
,
(০৪) শরীয়তের পরিভাষায় নস বলা হয় কুরআন হাদীস কে।
কুরআন হাদীসের মূল ইবারত কেই নস বলা হয়।