আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
257 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (66 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমার একটা সার্ভে পেপার একসেপ্ট হয়েছে একটা আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে। আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহুম্মা বারিক লাহু! ঐ পেপার নিয়ে যখন কাজ করছিলাম তখন আমার টিম মেম্বার ছিলেন ৪ জন পুরুষ যারা সবাই আমার থেকে বয়সে অনেক বড় এবং তাদের মধ্যে আমার এক শিক্ষকও ছিলেন। কাজটা করোনার সময় অনলাইনে হয়। মাঝে মাঝে মিটিং হত।
তো সেই পেপার একসেপ্ট হওয়ার পর আমি ও আমার এক টিমমেট ভাই মিলে স্লাইড বানানোর কাজ করি। এরপরের অপশন ছিল ভিডিও বানানো আমাদের সেই কাজের উপর। আমি আমার কণ্ঠস্বরের পর্দা নিয়ে একটু চিন্তিত থাকায় ব্যাপারটা করার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাই না এবং বাকি টিমমেটদের জানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু সেই ভাই আশংকা করেন ব্যাপারটা বললে বেয়াদবি হয়ে যেতে পারে। এজন্য অনেকটা বাধ্য হয়েই ভিডিও বানাই (যদিও এটা অপশনাল ছিল)। ভিডিওতে শুধু স্লাইডের ছবি ও কম্পিউটারের স্ক্রিন দেখা যায়, আমার ছবি না। শুধু কণ্ঠ শুনা যায়।  
ভিডিও বানানোর সময় সতর্ক ছিলাম যেন ভয়েস কোমল না হয়ে যায়। আমি ভেবেছিলাম ভিডিওটা শুধু আপলোড দিয়ে কাজ শেষ আর কেউ দেখবেও না। এখন আজকে মেইল আসল যে সেই কনফারেন্সের লোকজন ভিডিওটা নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড দিয়ে রাখবে যাতে সবাই আমাদের কাজটা সম্পর্কে জানতে পারে। অন্য টিমমেটদের বুঝিয়ে যে বলব এই কণ্ঠের পর্দার বিষয়টা তারা এটা মানবেন কিনা জানি না। হয়ত বলতে পারেন তাহলে ভিডিও দিলে কেন? আমাদের সাথে কাজ করলে কেন? আসলে কাজ না করেও আমার উপায় ছিল না কারণ একটা পেপার পাবলিশ না হলে যদি বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে হয় তখন সমস্যা হতে পারে।
এই মুহূর্তে কি আমার ভিডিও যদি তারা নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে দিয়ে দেয় তাহলে কি আমি আল্লাহর কাছে গুনাহগার হব?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/11985/?show=11985#q11985 নং ফাতওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে, কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে,আল্লাহ তা'আলা বলেন,

 ﻳَﺎ ﻧِﺴَﺎﺀ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﻟَﺴْﺘُﻦَّ ﻛَﺄَﺣَﺪٍ ﻣِّﻦَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀ ﺇِﻥِ ﺍﺗَّﻘَﻴْﺘُﻦَّ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﺨْﻀَﻌْﻦَ ﺑِﺎﻟْﻘَﻮْﻝِ ﻓَﻴَﻄْﻤَﻊَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻓِﻲ ﻗَﻠْﺒِﻪِ ﻣَﺮَﺽٌ ﻭَﻗُﻠْﻦَ ﻗَﻮْﻟًﺎ ﻣَّﻌْﺮُﻭﻓًﺎ

 (তরজমা) তোমরা (পর পুরুষের সাথে) বাক্যালাপে কোমলতা অবলম্বন কর না। যাতে এরূপ লোকের অন্তরে আকাঙ্ক্ষা (সঞ্চার) হয়, যার অন্তরে কুপ্রবৃত্তি রয়েছে। (সূরা আহযাব : ৩২)

লক্ষণীয় বিষয় হল, কন্ঠস্বরের কোমলতা পরিহারের নির্দেশ সরাসরি নবীযুগের নারীদেরকে দেয়া হয়েছে। সুতরাং আমাদের যুগের মহিলাদের আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,

إِنَّ السَّمْعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا.

...নিশ্চয় কান, চোখ, হৃদয় এর প্রতিটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। (সূরা বনী ইসরাঈল : ৩৬)

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ;১৯/১৯৩ এ নারীদের আওয়াজ সতরের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার (মারজুহ) রেওয়াতকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে অগ্রাধিকার দিয়ে বলা হয়েছে যে,পর-পুরুষের সামনে মহিলা বক্তৃতা দিতে পারবে না।বক্তৃতা প্রদান জায়েয হবে না।

নারীকন্ঠ সতরের অন্তর্ভুক্ত কি না? এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুনঃ https://www.ifatwa.info/1058

ইউটিউবে ভিডিও তৈরীর জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/14733/

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

মহিলারা অপরিচিতদের সামনে কথা বললে ফেতনার আশঙ্কা রয়েছে। তাই মহিলাদের জন্য গাইরে মাহরাম বা অপরিচিতদের সাথে অপ্রয়োজনীয় কোনো কথা বলার অনুমতি নেই।এমনকি ফিতনার আশঙ্কা থাকলে নারী কন্ঠে কুরআন তেলাওয়াত শ্রবণ করাও জায়েয নেই ।  সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে ফিতনার আশঙ্কা থাকায় ভিডিও তৈরী করার সময় নারীর কন্ঠ যোগ জায়েয নেই । কন্ঠ যোগ করার বিষয়টি অপশনাল হওয়ার কারণে তা জরুরতের অন্তর্ভূক্তও নয় । আপনার জন্য করণীয় হলোউক্ত কাজের প্রতি অনুতপ্ত হয়ে ইস্তেগফার করতে হবে এবং ঐ ভিডিও ডিলেট করতে হবে । আর যদি একান্ত কন্ঠস্বর যোগ করার প্রয়োজন হয়, তাহলে পুরুষের কন্ঠ যোগ করে ভিডিও তৈরী করবে ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...